ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিয়ের ৫ দিনের মাথায় একই ওড়নায় নব দম্পতির আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৫ জুন ২০১৫

বিয়ের ৫ দিনের মাথায় একই ওড়নায় নব দম্পতির আত্মহত্যা

স্টাফ রিপোর্টার॥ বিয়ের মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় একই ওড়নায় অবিশ্বাস্য কায়দায় আত্মহত্যা করেছেন এক দম্পতি। রবিবার দুপুরে রাজধানীর বাড্ডা এলাকার একটি বাসা থেকে তাদের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুিলশ। এরা হলেন শাহীন (৩০) ও রুবি (২৬)। নব দম্পতির আত্মহত্যার ঘটনায় পুলিশও বিস্মিত। কেন বিয়ের মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় তাদের এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে, সেটা পুলিশেরও বড় জিজ্ঞাসা। পুুলিশ জানায়, রবিবার দুপুর সোয়া বারোটার দিকে আনন্দনগর কৃষি ব্যাংক রোডে এ ঘটনা ঘটে। এ বাসায় শাহীন ভাড়া থাকতেন গত দু’বছর ধরে। পাশের একটা রুমে তার এক বড় বোন স্বামীসহ থাকেন। শাহীনের বাড়ি গাইবান্ধায়। তিনি একটি ফার্নিচারের দোকানে কাজ করতেন। রুবির বাড়ি মাদারীপুরে। পাঁচ দিন আগে তারা বিয়ে করেন। বিয়ের পর এ বাড়িতেই উঠেন। শুরু হয় নব দাম্পত্য জীবন। দাম্পত্য জীবনে তারা চরম সুখী বলেও বোনের কাছে স্বীকার করেছেন দুদিন আগেও। এ অবস্থায় রবিবার দুপুরে তারা আত্মহননের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নেন। বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) কামরুল ফারুক জানান, ঘটনাস্থল একটা টিনশেডের ঘরের দরজা ভেতর থেকেই আটকানো দেখা যায়। দরজা জানালা বন্ধ করলে ওই ঘরের ভেতরে ঘোর অন্ধকার নেমে আসে। ফলে জানালা দিয়েও ভেতরে কিছু সহজে দেখার মতো নয়। বাধ্য হয়ে দরজা ভেঙ্গেই ভেতরে দেখা যায় ফ্যানের হুকের সঙ্গে একটা ওড়নার দু’পাশে দু’জন ঝুলন্ত। তারপর নামানো হয় তাদের। ওসি কামরুল ফারুক বলেন, মরদেহের আলামত দেখে মনে এটা খুব পরিকল্পিত ও সাজানো গোছানো আত্মহত্যা। এই নব দম্পতির মনে কি দুঃখ বেদনা ছিল সেটা অজানা। তবে তারা যে মিলেমিশে আন্তরিক পরিবেশে আলাপ আলোচনা করেই-এ দুনিয়াকে গুডবাই জানিয়েছেন আলামত তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে। যেমন দুজনের মুখম-ল ছিল পাশাপাশি সমান মাপে, যেন অত্যন্ত মেপে-ঝুকেই ওড়না বাঁধে তারা। তাদের পরনে ছিল সাজানো গোছানো পোশাক। মেয়েটির শরীরে ওড়না ছিল কোমর পর্যন্ত। ছেলেটির পরনেও প্যান্ট শার্ট। এভাবে সেজে-গুজে একটা চেয়ার এনে তার ওপর দুজন দাঁড়িয়ে ফ্যানের হুকের সঙ্গে ওড়না টানে। ওই ওড়নার দু’পাশে দুজন গলায় বাঁধার পর চেয়ারটা নিচ থেকে পা দিয়ে ঠেলে দিয়েই তারা ঝুলে গেছে। কামরুল ফারুক বলেন, তাদের শরীরে কোন প্রকার আঘাতের চিহ্ন বা ঘরে কোন চিরকুটও মেলেনি। তাদের স্বজনরাও আত্মহত্যার কারণ নিয়ে কিছু ধারণা করতে পারছে না। পাঁচ দিন আগে বিয়ে করা এ দম্পতির মনে এমন কি-ই বা দুঃখ-বেদনা বা যন্ত্রণাদায়ক কিছু ঘটতে পারে যাতে তারা এমনটি করতে পারে। আসলে গরিব মানুষের আবেগ বেশি। হয়ত তারা পাঁচ দিনের দাম্পত্য জীবনের প্রেম ভালবাসার চরম আবেগে এই ভেবে সিদ্ধান্ত নেয়- জীবনেও এক, মরনেও এক। পরজীবনেও একত্রে থাকার মতো অতিপ্রাকৃতবোধ থেকেও হয়ত তারা এমনটি করে থাকতে পারে।
×