ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চলে গেলেন সাংবাদিক হাবিবুর রহমান মিলন

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১৫ জুন ২০১৫

চলে গেলেন সাংবাদিক হাবিবুর রহমান মিলন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চলে গেলেন সাংবাদিক হাবিবুর রহমান মিলন। তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সহকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ। প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) চেয়ারম্যান মিলনের মরদেহ রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে নেয়া হলে সরকারের মন্ত্রী, সিনিয়র সাংবাদিক, রাজনীতিক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা তার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। দীর্ঘদিন কিডনি ও ফুসফুস জটিলতাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগে শনিবার রাত আড়াইটায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা যান হাবিবুর রহমান মিলন। (ইন্না লিল্লাহি...রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। অবিভক্ত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মিলনকে শ্রদ্ধা জানাতে প্রেসক্লাবে সমবেত হন সাংবাদিকদের দুই ইউনিয়নের কয়েক হাজার সদস্য। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল, উপ-প্রেসসচিব আশরফুল আলম খোকন প্রেসক্লাবে এই সাংবাদিকের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। প্রয়াত সহকর্মীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার বলেন, একসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি। একসঙ্গে ইত্তেফাকে ২৭ বছর কাজ করেছি। আজ তার এই চলে যাওয়া আমার জন্য বেদনার ও শোকের। তিনি বলেন, মিলন ছিলেন একজন আপদমস্তক সাংবাদিক। পেশার প্রতি তার একাগ্রতা থেকে তরুণ সাংবাদিকদের অনেক কিছু শেখার আছে। একুশে পদকপ্রাপ্ত হাবিবুর রহমান মিলন ছিলেন দৈনিক ইত্তেফাকের উপদেষ্টা সম্পাদক। আশি ও নব্বইয়ের দশকে সন্ধানী ছদ্মনামে ইত্তেফাকে তার নিয়মিত কলাম ‘ঘরে-বাইরে’ ছিল পাঠকপ্রিয়। ডেইলি নিউজ টুডের সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, তার মৃত্যুতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে তা সহসা পূরণ হবে না। তিনি সারাজীবন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে গেছেন। এই পেশার উন্নয়নে তার বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল। এজন্য সাংবাদিকরা সব সময় তাকে স্মরণ করবে। সিনিয়র সাংবাদিক আবদুল কালাম আজাদ, স্বপন সাহা, সাইফুল আলম, শ্যামল দত্তও প্রয়াত সাংবাদিকের কফিনে ফুল দেন। সাংবাদিকরা ছাড়াও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রী হাসান মাহমুদ, তথ্য সচিব মুর্তজা আহমেদও মিলনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও অধ্যাপক গোলাম রহমানও প্রেসক্লাবে গিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এছাড়া বিএফইউজের দুই পক্ষ, ডিইউজের পক্ষে মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, আবদুল জলিল ভুইয়া, শওকত মাহমুদ, আলতাফ মাহমুদ, কুদ্দুস আফ্রাদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের পক্ষে সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ কার্তিক চ্যাটার্জি, যুগ্ম সম্পাদক আশরাফ আলী, মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদাল আহমেদসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা মিলনের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এর আগে প্রেসক্লাবে মরহুমের জানাজা হয়। কয়েকশ’ সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ তাতে অংশ নেন। জাতীয় প্রেসক্লাবে শ্রদ্ধা জানানোর পর মিলনের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় কর্মস্থল কাকরাইলের প্রেস ইনস্টিটিউটে। পরে কারওয়ান বাজারে দৈনিক ইত্তেফাক ভবনে নেয়া হয়। পিআইবির চেয়ারম্যানের পাশাপাশি ইত্তেফাকের উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন মিলন। এছাড়া তিনি রঙ্গনা নাট্যগোষ্ঠীর প্রাক্তন সভাপতিও ছিলেন। তার মেয়ে অদিতি রহমান জানান, বাবার মরদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে। তার ছোট বোন তাহমিনা রহমান লোপা অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরলে সোমবার মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে। প্রয়াত সাংবাদিকের ছেলে তাসিকুর রহমান সুমন জানান, আগামী ১৯ জুন শুক্রবার বাদ আসর তাদের ইস্কাটনের গাউস নগরের ৬/১ নম্বর বাসায় কুলখানি হবে। মিলন স্ত্রী, এক ছেলে ও পাঁচ মেয়ে রেখে গেছেন।
×