ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

লক্ষ্য সম্ভাব্য রুশ আগ্রাসন প্রতিরোধ

ভারি মার্কিন অস্ত্র যাবে সীমান্তে

প্রকাশিত: ০৩:৫১, ১৫ জুন ২০১৫

ভারি মার্কিন অস্ত্র যাবে সীমান্তে

পেন্টাগন কয়েকটি বাল্টিক ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশে মোতায়েন প্রায় ৫ হাজার আমেরিকান সৈন্যের জন্য ব্যাটল ট্যাঙ্ক, ইনফ্যান্ট্রি ফাইটিং ভেহিকেল ও অন্যান্য ভারি অস্ত্র মজুত করতে যাচ্ছে। ইউরোপে সম্ভাব্য রুশ আগ্রাসন রোধ করতে এটি হবে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমেরিকান ও মিত্র দেশগুলোর কর্মকর্তারা এ কথা জানান। এ পদক্ষেপ ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে উত্তেজনার মাত্রা চড়িয়ে দিতে পারে। খবর নিউনিয়র্ক টাইমস ও ওয়াশিংটন পোস্টের। সামরিক মুখপাত্র ক্যাপ্টেন গ্রেগ হিকস বলেন, ইউএস ইউরোপিয়ান কমান্ডের কমান্ডার ও ন্যাটো ইউরোপের সুপ্রীম এ্যালাইড কমান্ডার জেনারেল ফিলিপ এম ব্রিডলাভ ওইসব সাজসরঞ্জাম আগেভাগেই মোতায়েন করার সুপারিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ্যাশটন বি কার্টারের কাছে পেশ করেছেন। সিদ্ধান্ত এখন কার্টারের ওপর নির্ভর করছে বলে হিকস জানান। হিকস ব্রিডলাভের সুপারিশের বিস্তারিত দিক জানাতে অসম্মত হন। কিন্তু কর্মকর্তারা বলেন, প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে হামভি ব্র্যাডলি ফাইটিং ভেহিকেলের মতো সাজসরঞ্জাম লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, পোল্যান্ড রোমানিয়া, বুলগেরিয়া ও হাঙ্গেরির মতো দেশগুলোর বিভিন্ন স্থাপনায় মোতায়েন করা হবে। কর্মকর্তারা জানান, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে তারা আভাস দেন যে চলতি মাসের শেষ দিকে ন্যাটোর মন্ত্রী পর্যায়ের এক বৈঠকের আগেই কার্টার প্রস্তাবটি অনুমোদন করতে পারেন। ইউক্রেনে সংঘর্ষ ওই ন্যাটো বৈঠকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় হবে। ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ার সঙ্গে পাশ্চাত্যের সংঘাত আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রতি বিপজ্জনক পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটিয়েছে বলে সতর্ক করে দিচ্ছে। গত বছর রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলের পর ওই সংঘাতের সূচনা হয়। প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে ঠা-া লড়াই শেষ হওয়ার পর এ প্রথম যুক্তরাষ্ট্র পূর্ব ইউরোপের ন্যাটোর নতুন সদস্য দেশগুলোতে ভারি সামরিক যন্ত্রপাতি মোতায়েন করবে। ওইসব দেশ এক সময় সোভিয়েত প্রভাবাধীন ছিল। রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখল এবং পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধ ন্যাটো দেশগুলোতে ভীতির সঞ্চার করে এবং তারা নতুন সামরিক পরিকল্পনা নেয়ার তাগিদ বোধ করে। এটি হবে ওই অঞ্চলে শক্তি বৃদ্ধি করতে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর নেয়া পদক্ষেপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে লক্ষণীয়। এটি যুক্তরাষ্ট্র সোভিয়েত সীমান্তবর্তী জোট সদস্যদের রক্ষা করবে বলে মিত্রদের কাছে এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের কাছে এক স্পষ্ট বার্তাও পাঠাবে। ২০০৪ সালে বাল্টিক দেশগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে ন্যাটোর সম্প্রসারণের পর যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা পূর্ব ইউরোপে সামরিক যন্ত্রপাতি ও সৈন্য স্থায়ীভাবে মোতায়েন করার পদক্ষেপ এড়িয়ে যায়। কারণ তারা রাশিয়ার সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের অংশীদারী গড়ে তুলতে চেয়েছিল। অসরপ্রাপ্ত এ্যাডমিরাল ও ন্যাটোর সাবেক সুপ্রীম এ্যালাইড কমান্ডার জেমস জিং স্ট্যাভরিডিস বলেন, এটি নীতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এক পরিবর্তন। এটি বিচলিত মিত্রদের যুক্তিসঙ্গত মাত্রায় নতুন করে আশ্বাস দিচ্ছে। রুশ বিমান ও জাহাজের উস্কানিমূলক সামরিক মহড়া ইউরোপীয় রাজধানীগুলো শঙ্কার সৃষ্টি করে। এর জবাবে ন্যাটো দেশগুলো রুশ সীমান্তের কাছে মহড়া ও অন্যান্য তৎপরতা শুরু করে। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের বিপদ সম্পর্কে কড়া হুঁশিয়ারি দেন। কিন্তু তিনি এখনও পর্যন্ত রুশ সমর্থনপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইরত ইউক্রেনীয় বাহিনীকে প্রাণঘাতী অস্ত্র সরবরাহের পক্ষ বেছে নেননি। প্রাই সময়ে ইউক্রেন প্রশ্নে আরও পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার সতর্কবাণী উচ্চারণ করলেও ওবামা প্রশাসনকে ইরানের পরমাণু কর্মসূচী বিষয়ক আলোচনা ও অন্যান্য ইস্যুতে মস্কোর সঙ্গে অবশ্যই কথা বলতে হবে।
×