ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পুঁজিবাজারে লেনদেন কমেছে ২২ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ১৫ জুন ২০১৫

পুঁজিবাজারে লেনদেন কমেছে ২২ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আবারও দরপতন দিয়ে দেশের পুঁজিবাজারে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসের লেনদেন শেষ হয়েছে। রবিবার দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে মূল্যসূচকের বড় ধরনের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। একই ভাবে বেশিরভাগ কোম্পানির দর কমার কারণে উভয় বাজারেই লেনদেনের পরিমাণও কমে গেছে। বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমার কারণে শুধুমাত্র প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন কমেছে প্রায় ২২ শতাংশ। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের পর থেকেই পুঁজিবাজারে পতন রয়েছে। আর এতে মনস্তাত্ত্বিক কারণেই বিনিয়োগকারীরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনও পুঁজিবাজারে ধসের পেছনে বড় কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। জানা গেছে, পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ২১ জুলাইয়ের মধ্যে এ বিনিয়োগ ১৮ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনতে হবে। অর্থাৎ এক বছরের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে বিক্রি করতে হবে প্রায় ৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকার শেয়ার। বড় অঙ্কের বিনিয়োগ প্রত্যাহার করতে হবে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও। এ অবস্থায় বিনিয়োগ সমন্বয়ের সময়সীমা না বাড়ালে বাজারে আরও ধসের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ বিনিয়োগ প্রত্যাহের ফলে ব্যাংকগুলোকে বড় ধরনের লোকসান গুনতে হবে। আর এ কারণেই বিনিয়োগকারীরা সাইডলাইনে সরে যাচ্ছেন বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, রবিবার ডিএসইতে ৩৫৩ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের তুলনায় ৯৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা কম। আগের দিন এ বাজারে লেনদেন হয়েছিল ৪৫০ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয় ৩১২টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড। এরমধ্যে দর বেড়েছে ৬৬টির, কমেছে ২১৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৮টির শেয়ার দর। সকালে সূচকের ইতিবাচক প্রবণতা দিয়ে শুরুর পরেই ডিএসইএক্স বা প্রধান মূল্যসূচক ৬১ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৪৫৩ পয়েন্টে অবস্থান করে। ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ১১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে এক হাজার ৮৭ পয়েন্টে। ডিএস৩০ সূচক ২৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭২০ পয়েন্টে। ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে থাকা দশ কোম্পানি হলো- গ্রামীণফোন, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, বেক্সিমকো, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, স্কয়ার ফার্মা, সামিট পাওয়ার, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, ফ্যামিলি টেক্স, ইউপিজিডিসিএল এবং অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ। ডিএসইর দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো- ঢাকা ডাইং, হাক্কানী পাল্প, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, গোল্ডেন হার্ভেস্ট, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, মিথুন নিটিং, ডাচ বাংলা ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, আলহাজ্ব টেক্সটাইল ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো- এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, আইসিবি এমপ্লয়িজ প্রথম মিউচুয়াল ফান্ড, ইউনাইটেড এয়ার, শাহজিবাজার পাওয়ার, ইফাদ অটোস, আইসিবি প্রথম এনআরবি, লঙ্কা বাংলা ফাইন্যান্স, এ্যাপোলো ইস্পাত ও মাইডাস ফাইন্যান্স। রবিবার ঢাকার মতো অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও সূচকের সঙ্গে সব ধরনের লেনদেন কমেছে। দিনশেষে সেখানে (সিএসই) ৩৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এদিন সিএসই সার্বিক সূচক ১৯৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৭১০ পয়েন্টে। সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৩৭টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এরমধ্যে দর বেড়েছে ৪১টির, কমেছে ১৭৯টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭টির। সিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো- ইউনাইটেড এয়ার, সামিট পাওয়ার, বেক্সিমকো, গ্রামীণফোন, মোজাফফর হোসেন স্পিনিং, স্কয়ার ফার্মা, জাহিন স্পিনিং, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন এ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ও ফার কেমিক্যাল।
×