ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ওয়ার্কার্স পার্টির অভিমত

দুর্নীতি বন্ধ না হলে প্রবৃদ্ধির সুফল মানুষের কাছে পৌঁছাবে না

প্রকাশিত: ০৪:১১, ১২ জুন ২০১৫

দুর্নীতি বন্ধ না হলে প্রবৃদ্ধির সুফল মানুষের কাছে পৌঁছাবে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুর্নীতি বন্ধ না হলে জাতীয় প্রবৃদ্ধি হারের সুফল তৃণমূল মানুষের কাছে পৌঁছাবে না বলে মনে করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। বৃহস্পতিবার ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত বাজেটোত্তর এক সাংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন। পার্টি কার্যালয়ের ‘শহীদ আসাদ মিলনায়তনে’ অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধির হার ৭ ভাগ অর্জন সম্ভব হলেও এর সুফল তৃণমূল জনগণের কাছে পৌঁছাবে না, যদি দুর্নীতি বন্ধ করা না যায়। এই প্রবৃদ্ধির লাভের গুড় পিঁপড়ায় খেয়ে যায়। দুর্নীতি বন্ধ করা গেলে প্রবৃদ্ধি আরও ২ দশমিক ৫ ভাগ অর্জন করা সম্ভব হতো। দুর্নীতি হ্রাস ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা অর্থনীতির গতি বৃদ্ধি সহায়ক; বাজেটে এ বিষয়টি গুরুত্বহীন মনে হয়েছে। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দুষ্টচক্রের কবল থেকে মুক্ত করার মধ্যদিয়ে ঋণ খেলাপীদের হাত থেকে ব্যাংকিং খাতকে রক্ষা করতে হবে। বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও তথ্য প্রযুক্তিখাতে বাজেট বাড়ানোর প্রস্তাব করে বলা হয়, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে করারোপ এর ব্যবহার বৃদ্ধির গতি স্থবির করবে। লিখিত বক্তব্যে সরকারী-বেসরকারী শিক্ষকদের অভিন্ন বেতন কাঠামো নিশ্চিত করার উদ্যোগের আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া সমতলের আদিবাসীদের জন্য আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান ও পার্বত্য শান্তিচুক্তি দ্রুত পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়। লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, শিল্পায়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় উদ্যোগকে প্রণোদনা দেয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও কোন দিক নির্দেশনা নেই। স্থানীয় ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে দ্রুত বিদ্যুত-গ্যাস সরবরাহ, বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকরণে প্রাতিষ্ঠানিক আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, ঋণের উচ্চ সুদের হার ইত্যাদি দূর করার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে। জ্বালানি ও বিদ্যুতের ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির মূল্য হ্রাস হলেও বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে সমন্বয় করা হয়নি। রেন্টাল বিদ্যুত কেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানো যুক্তিসঙ্গত হয়নি বলে মনে করে ১৪ দলের অন্যতম এই শরিক দলটি। দলটি মনে করে, বিশেষ আইনে বিদ্যুত খাতে বিদেশী বিনিয়োগ কল্যাণ বয়ে আনবে না। লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, আমরা বিশ্বাস করি লক্ষ্য অর্জন ও বাজেটের অর্থসংস্থানও সম্ভব। সাম্রাজ্যবাদ ও বিদেশের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে এনে আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি গড়ে তোলার এ চেষ্টাই হবে উত্তম পথ। করের পরিধি বাড়ানোর উদ্যোগে সাধারণ জনগণ যেন চাপের মুখোমুখি না হয়। বাজেটে ধনীদের ওপর বরং কর বাড়ানো ইতিবাচক। সম্পদ কর ও অবৈধভাবে আয় এবং অপ্রদর্শিত আয়ের ওপর কর আরোপ অর্থনীতি ও সামাজিকভাবে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। যা দুর্নীতি প্রতিরোধে সহায়ক হবে। রাজনৈতিক বিবেচনায় সুদ মওকুফ সংস্কৃতি বন্ধ করার পরামর্শ দিয়ে দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ সব পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে সমাজে ধন বৈষম্য কমিয়ে আনার অনুকূল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি গড়ে তোলা যেতে পারে। অথচ বাজেটে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে কোন প্রস্তাব নেই। আমরা মনে করি, দুর্নীতি হ্রাস ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা অর্থনীতির গতি বৃদ্ধির সহায়ক হবে। বাজেটে এ বিষয়টি গুরুত্বহীন মনে হয়েছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি নির্বাচন পর্যন্ত উগ্র সাম্প্রদায়িক জঙ্গীবাদের সহিংসতার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যায়। তারপরও বর্তমান অর্থবছরে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন ছোট করে দেখা যায় না। বাজেটে ১৫ লক্ষ লোকের দক্ষতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু কর্মসংস্থানের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা বাজেটে অস্পষ্ট। বাবলার কার্যালয়ে হামলায় জন আটক স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা-৪ আসনের এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় জড়িত আটক পাঁচ জনের বিরুদ্ধে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিমের ১৩ নং আদালত এ রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। এর আগে বুধবার সকালে সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার দলীয় কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় জাতীয় পার্টির কদমতলী থানার সদস্য সচিব শেখ মাসুক রহমান বাদী হয়ে কদমতলী থানায় মামলা দায়েরের প্রেক্ষিতে বুধবার রাতে তাদের আটক করে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন ইউসুফ, নাইম, মতিন, ছোট আলমগীর ও বশির। কদমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত হোক না কেন সবাইকে আটক করা হবে।
×