ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঋণ খেলাপীর জন্য ব্যাংক দায়ী

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ৮ জুন ২০১৫

ঋণ খেলাপীর জন্য ব্যাংক দায়ী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ঋণ খেলাপী হওয়ার জন্য ব্যাংকগুলো নিজেরাই দায়ী। কেননা, একাধিক ব্যাংক এক ব্যক্তিকেই বার বার ঋণ দিচ্ছে। বড় প্রতিষ্ঠান ঋণ খেলাপী হওয়া সত্ত্বেও ঋণ দেয়া বন্ধ নেই। প্রতিবছর ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা থাকে, কিন্তু আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকে না। খেলাপী ঋণ বাড়ছে কেন তা নিয়ে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব কোন গবেষণাও নেই। রবিবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) আয়োজিত ‘ঋণ কার্যক্রম-২০১৪’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেমিনারে ‘ঋণ কার্যক্রম‘ শীর্ষক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জী, ডি আর কর্মকার, মোঃ মাহবুবুর রহমান, নূর আল ফয়সাল। বিআইবিএমএ’র চেয়ার প্রফেসর এসএ চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমেদ চৌধুরী, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক মোঃ তরিকুল ইসলাম। বক্তারা বলেন, সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত দেয়। কিন্তু বেসরকারী বিনিয়োগকারীরা ঋণ নিয়ে ফেরত দেয় না। অনেক কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে যায়। তাদের কাছ থেকে ঋণ ফেরত পাওয়া যায় না। আবার অনেকে খেলাপী হয়ে যায়। সঠিক সময়ে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে পারে না। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সরকারকে ঋণ দিয়ে স্বস্তিতে থাকলেও বেসরকারী ক্ষেত্রে সে রকম থাকতে পারে না। কেননা, ঋণ খেলাপী হওয়ার জন্য ব্যাংকগুলো নিজেরাই দায়ী। এসএ চৌধুরী বলেন, বাজেট-ঘাটতি পূরণে ব্যাংক থেকে সরকারের নেয়া ঋণের কারণে বেসরকারী খাতের ঋণপ্রবাহের ওপর কোন ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে না। সরকারের ব্যাংক ঋণ মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে যায়নি। এখনও সহনীয় অবস্থায় অর্থাৎ জিডিপির ২.৫ শতাংশের মধ্যেই রয়েছে। সরকারের ব্যাংকঋণের সীমা জিডিপির ৩ শতাংশ পর্যন্ত থাকলে ভবিষ্যতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ঋণকার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি কারণে। এর মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা, সুদের হার, অবকাঠামোর অপর্যাপ্ততা ও অব্যবস্থাপনা। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালে রাজনৈতিক অস্থিরতা কারণে ৮৮ শতাংশ ঋণ বিতরণ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গ্রামাঞ্চলে শাখা বেশি হলেও অধিকাংশ ব্যাংকের আমানত সংগ্রহ ও ঋণ বিতরণ কার্যক্রম শহরকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। দেশের মোট আমানতের ৭৯.০২ ভাগ আসছে শহর থেকে। বাকি ২০.১৮ ভাগ আসছে গ্রাম থেকে। একইভাবে ৯০ ভাগ ঋণই ঘুরপাক খাচ্ছে শহরের ভেতরে। এতে বলা হয়, গ্রামে বড় অঙ্কের ঋণ দেয়ার সুযোগ কম। ছোট ছোট অঙ্কের যেসব ঋণ দেয়া হয় সেগুলোর পরিমাণও কম। ফলে গ্রামের টাকা শহরে চলে যায়। আবার শহর থেকে গ্রামে টাকা যাচ্ছে বিশেষ করে শ্রমিক শ্রেণীর আয়ের মাধ্যমে। এতে সরকারের ব্যয় বেড়ে যায়।
×