ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিমানবন্দরে লালগালিচা সংবর্ধনা

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৭ জুন ২০১৫

বিমানবন্দরে লালগালিচা সংবর্ধনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রথম সফরে শনিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে বাংলাদেশে পৌঁছান মোদি। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁকে লাল গালিচা সংবর্ধনা ও গান স্যালুট দেয়া হয়। শনিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে নরেন্দ্র মোদিকে বহনকারী ভারতের বিমান বাহিনীর বিশেষ উড়োজাহাজটি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে নামে। ‘রাজদূত’ নামের এই উড়োজাহাজটির সামনে দুই পাশে উড়ছিল বাংলাদেশ ও ভারতের পতাকা। ভারতীয় উড়োজাহাজ থেকে নেমে আসেন সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি ও ছাই রঙের ওয়েস্ট কোট পরা মোদি। উড়োজাহাজ থেকে বেরিয়েই ডান দিকে তাকিয়ে হাত নাড়েন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সেদিকে ছিল সাংবাদিকদের অবস্থান। সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে হাত জোড় করে সবাইকে নমস্কার জানান তিনি। এ সময় লাল গালিচায় অপেক্ষা করছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মোদি নেমে এলে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান তিনি। ঠিক তার আগেই ২১ বার তোপধ্বনি হয় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে। লাল শাড়ি পরা একটি শিশু এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেয় শুভেচ্ছার ফুল। শিশুটিকে আদর করে তার সঙ্গে কথাও বলেন মোদি। তিনি নাম জানতে চাইলে শিশুটি জানায়, তার নাম কাজী কার্পিতা হোসেন। পড়ে প্রথম শ্রেণীতে। লাল গালিচা সংবর্ধনার পর মোদিকে দেয়া হয় গার্ড অব অনার। দুই প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনীর সালাম নেন, এ সময় বাজানো হয় দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত। গার্ড পরিদর্শনের পর শেখ হাসিনা তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যসহ উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মোদিকে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে মোদি তাঁর সফরসঙ্গীদের সঙ্গে শেখ হাসিনাকে পরিচয় করিয়ে দেন। বিমানবন্দরে এ সময় উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী ও মসিউর রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ। তিন বাহিনীর প্রধানসহ সামরিক ও বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও ছিলেন বিমানবন্দরে। উপস্থিত ছিলেন হাইকমিশনার পঙ্কজ শরনসহ ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তারাও। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব ড. এস জয়শঙ্করের ভাষায়, ‘ব্যতিক্রমী প্রতিবেশী’ বাংলাদেশে নরেন্দ্র মোদির এই সফর ‘ঐতিহাসিক’। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ‘একটি ঐতিহাসিক উচ্চতায়’ পৌঁছেছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, একসঙ্গে কাজ করলে আরও অনেক অর্জনই সম্ভব। লাল গালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার নিয়ে মোটর শোভাযাত্রাসহ রওনা হয়ে বেলা সোয়া ১১টায় সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পৌঁছান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক, সাভারের সংসদ সদস্য এনামুর রহমান। সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী কবীর আহম্মেদ ভূইয়া, ঢাকার জেলা প্রশাসক তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমানও সেখানে ছিলেন। নরেন্দ্র মোদি শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। ফুল দিয়ে শহীদ বেদির সামনে এক মিনিট নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। ফুল দিয়ে স্মৃতি সৌধের পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষরের পর মোদি স্যাপলিং পয়েন্টে (বৃক্ষরোপণ এলাকা) একটি ‘উদয়পদ্ম’ গাছের চারা রোপণ করেন। এরপর জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে বেরিয়ে মোদির গাড়িবহর ঢাকার ধানম-িতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের উদ্দেশে রওনা হয়। সেখানে তিনি জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
×