ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বড় জয়ে এগিয়ে গেল অসিরা

প্রকাশিত: ০৪:৪৮, ৭ জুন ২০১৫

বড় জয়ে এগিয়ে গেল অসিরা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পার্থক্য বোঝাল অসিরা। ডমিনিকায় প্রথম টেস্টে স্বাগতিক উইন্ডিজকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল মাইকেল ক্লার্কের দল। বোলারদের দাপট, বুড়ো এ্যাডাম ভোগসের অভিষেকে রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে আড়াই দিনেরও কম সময়ে ক্যারিবীয়দের উড়িয়ে দিল অতিথিরা! প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৪৮ রানের জবাবে ৩১৮ রান সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে স্বাগতিকরা ২১৬ রানে গুটিয়ে গেলে মাত্র ৫ ওভারেই জয়ের জন্য প্রয়োজনী ৪৭ রান তুলে নেয় অসিরা। চরম বিপদের মধ্যে ১৩০ রানের দারুণ ইনিংস উপহার দিয়ে ‘নায়ক’ অভিষিক্ত ভোগস। জ্যামাইকায় শেষ টেস্ট বৃহস্পতিবার থেকে। পরিসংখ্যান দিয়ে টেস্টের বাস্তব চিত্র বোঝানো যায় না। ৯ উইকেটের জয়ও সেখানে অনেক সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে পারে। কিন্তু ডমিনিকার দৃশ্যপট ভিন্ন। যেখানে প্রথম ইনিংসের শুরুর দিকে অসি-ব্যাটিংয়ের ছন্দপতনের অংশটুকু বাদ দিলে পুরো অর্জন তাদেরই। বিশ্বকাপ জয়ের পর এই প্রথম দীর্ঘ পরিসরের লড়াইয়ে মাঠে নামে ক্লার্ক-বাহিনী। অন্যদিকে এরই মধ্যে কুলিন ইংলিশদের বিপক্ষে দারুণ একটি সিরিজ শেষ করে উইন্ডিজ। অসি থিঙ্কট্যাঙ্করা তাই কিছুটা হলেও চিন্তায় ছিলেন। কিন্তু সাদা পোশাকেও মাঠে যথারীতি তাদেরই দাপট দেখল বিশ্ব। প্রথমে স্বাগতিকদের ১৪৮ রানে গুড়িয়ে দিয়ে পথ তৈরি করে দেন বোলাররা। তিন পেসার মিচেল জনসন, জস হ্যাজলউড ও মিচেল স্টার্ক নেন যথাক্রমে ৩, ৩ ও ২টি করে উইকেট। উইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৬ রান ওপেনার শাই হোপের। এছাড়া জেসন হোল্ডার ২১, ডোয়াইন ব্রাভো ও অধিনায়ক রামদিন প্রত্যেকে ১৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন। জবাবে একপর্যায়ে ১২৬ রানে ৬ উইকেট হরায় অস্ট্রেলিয়া! এরপরই দৃশ্যপটে ভোগস। দশ নম্বর, অর্থাৎ শেষ ব্যাটসম্যান জস হ্যাজলউডকে (৩৯) নিয়ে গড়েন ইনিংসের সর্বোচ্চ ৯৭ রানের জুটি! তার আগে মিচেল জনসন (২০) ও নাথান লেয়নেরস (২২) সঙ্গে যথাক্রমে ৫২ ও ৪৩। ৩১৮ রান করে ১৭০ রানে এগিয়ে যায় ক্লার্কের দল। স্বাগতিকদের হয়ে স্পিনার দেবেন্দ্র বিশু নেন ক্যারিয়ারসেরা ৬ উইকেট। অপরাজিত ১৩০ রানের পথে টেস্টের ইতিহাসটাকেই নাড়িয়ে দেন ভোগস। অভিষেকে বেশি বয়সে (৩৫ বছর ২৪৩ দিন) সেঞ্চুরির নতুন রেকর্ড গড়েন অস্ট্রেলিয়ান টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান। ৩৫ বছর ১১৮ দিন বয়সে অভিষেক সেঞ্চুরি করে এতদিন রেকর্ডটি ছিল সাবেক জিম্বাবুইয়ান তারকা ডেভিড হটনের দখলে। হারারেতে ১৯৯২ সালের অক্টোবরে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে ১২১ রান করেছিলেন তিনি। পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসেও খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি ক্যারিবীয়রা। মূলত অভিজ্ঞ মারলন স্যামুয়েলস (৭৪) ও অভিষিক্ত শেন ডরিখের (৭০) দুটি হাফ সেঞ্চুরির সৌজন্যে ২১৬ রান করতে সমর্থ হয় ব্রায়ান লারার উত্তরসূরিরা। জয়ের জন্য প্রয়োজনী ৪৭ রান তুলতে ৫ ওভারের বেশি লাগেনি অসিদের। চতুর্থ ইনিংসে ৪০ বা তার বেশি লক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটের (৯.৪) রেকর্ড এটি। পঞ্চম অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেকে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ ভোগস। আগের চারজন হলেন- মাইকেল ক্লার্ক, স্টুয়ার্ট ক্লার্ক, জেসন ক্রেজা ও প্যাট কুমিন্স। ‘এটা দারুণ অনুভূতি। এ দিনটির জন্য অনেক দিন অপেক্ষায় ছিলাম। শেষ পর্যন্ত আমার ওপর ভরসা করায় সতীর্থ ও কর্তাদের ধন্যবাদ’- বলেন ভোগস। হারা ম্যাচে সান্ত¡না খোঁজা উইন্ডিজ অধিনায়ক রামদিনের প্রতিক্রিয়া- ‘সব মিলিয়ে আমাদের ব্যাটিং ভাল হয়নি। তবে বোলাররা চমৎকার করেছে। স্পিনে বিশু ছিল অসাধারণ। পরের ম্যাচে ভাল করতে যা অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।’
×