ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চুক্তি স্বাক্ষরের খবরে ছিটমহলে আনন্দ মিছিল

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ৭ জুন ২০১৫

চুক্তি স্বাক্ষরের খবরে ছিটমহলে আনন্দ মিছিল

রাজু মোস্তাফিজ, কুড়িগ্রামের বিভিন্ন ছিটমহল থেকে ফিরে ॥ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। এই সফরে ১৯৭৪ সালের সীমান্ত চুক্তি ২০১১ সালে স্বাক্ষরিত প্রটোকল অনুসমর্থনের কপি বিনিময় হয়েছে। এর পরই কার্যকর হবে সীমান্ত চুক্তি ও প্রটোকল। শনিবার দিনভর দাসিয়ারছড়া ছিটমহলসহ একশ’ ৬২টি ছিটমহলের অধিবাসীরা এই আনন্দে বিজয় মিছিল বের করে এবং মি্িষ্ট খাওয়ার ধুম পড়ে। অবশেষে কাক্সিক্ষত সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষার অবসান ঘটে। চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে ছিটমহলের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে আানন্দ উল্লাস করে। টিভিতে ঘোষণা আসার সাথে সাথে তারা আনন্দ মিছিল নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। এ চুক্তি বিনিময় হওয়ার সাথে সাথে তাদের ৬৭ বছরের বন্দী জীবনের অবসান ঘটে। স্বাধীন দেশের নাগরিক হওয়ার গৌরব অর্জন করে। এ উপলক্ষে শনিবার সন্ধ্যায় একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক জাফর আলী, পিপি আব্রাহাম লিংকন, বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল সমন্বয় কমিটি (বাংলাদেশ ইউনিট) গোলাম মোস্তফা, মইনুল হক প্রমুখ। ভারতীয় ১৫০ দাসিয়ারছড়া ছিটমহলের কালীরহাট গ্রামের পঞ্চাশোর্ধ কৃষক মনির উদ্দিন শনিবার দুপুরে বাড়ি থেকে বাজার যাচ্ছিলেন আনন্দ মিছিল করার জন্য। রাস্তায় তার সাথে দেখা। তিনি জানান, সকাল থেকে বাড়িতে ছিলাম। বিকেলে মিছিলের জন্য বড় পতাকা নিয়ে বের হয়েছি। আমরা এখন এ দেশের নাগরিক। রাসমেলা গ্রামের কৃষক আবদুস সামাদ জানান, এতদিন পর মনে হচ্ছে আমাদের মাথা গোজার ঠাঁই হলো। আমাদের সন্তানরা এখন শিক্ষা পাবে। গড়ে উঠবে চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র। তিনি ধন্যবাদ জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। কালীরহাট গ্রামের সাবেক পঞ্চায়েত সদস্য আবদুল মোন্নাফ জানান, আজকের এই খুশির দিনে যারা ছিটমহল নিয়ে এতদিন নিরলস পরিশ্রম করেছিল তাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। এখন সরকার যেন আমাদের উন্নয়ন করে। ছিটমহলে শতাধিক হিন্দু পরিবার রয়েছে। এরাও কেউ আর ভারতের নাগরিক হতে চায় না। কালিরহাট গ্রামের হরেকৃষ্ণ জানান, এদেশ আমাদের । আমাদের বাপ- দাদার ভিটামাটি ছেড়ে কোথাও যাব না আমরা। সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য ছিল। এখন প্রশাসনের লোক এলে এইসব সন্ত্রাসী কর্মকা- আরো কমে যাবে। আমরা এখন জীবনের নিরাপত্তা ফিরে পাব।
×