ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তিন বছরে এক বিলিয়ন ডলারের তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য রফতানির টার্গেট

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ৪ জুন ২০১৫

তিন বছরে এক বিলিয়ন ডলারের তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য রফতানির টার্গেট

ফিরোজ মান্না ॥ তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আগামী তিন বছরের মধ্যে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য রফতানির টার্গেট হাতে নিয়েছে। এই আয়ের বড় অংশ আসবে সফটওয়ার রফতানি করে। ২০১৮ সালের মধ্যে এই টার্গেট পূরণ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বর্তমানে দেশে ৭০ হাজার আইটি বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন। এই পরিমাণ আইটি বিশেষজ্ঞ দেশে নেই। তবে আইটি বিশেষজ্ঞ তৈরি করার কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে হাতে নেয়া টার্গেট পূরণ হবে। তখন বাংলাদেশের প্রযুক্তি পণ্য রফতানির পরিমাণ ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এমন একদিন আসবে তথ্যপ্রযুক্তি বা আইটি খাত বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের অন্যতম খাত হিসেবে গড়ে উঠবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমন আশা প্রকাশ করেছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, কিছুদিন আগেও বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলা হতো। কিন্তু সে অবস্থা থেকে শুধু উত্তরণই ঘটেনি গত ছয় বছরে আমরা তথ্যপ্রযুক্তি খাতে রফতানিও শুরু করেছি। ২০১৮ সালের মধ্যে আমরা এ খাতে ১ বিলিয়ন ডলার রফতানির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। গাজীপুরসহ দেশে মোট ১৩টি হাইটেক পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। এখানে ৭০ হাজার প্রযুক্তিবিদ দরকার। আমাদের তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে এসব প্রযুক্তিবিদ গড়ে উঠবে বলে আশা করছি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ সম্পর্কে তিনি বলেন, দেশের ১২৮টি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের ৬৪টি জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি ক্লাব গড়ে তোলা হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্লাবের দায়িত্বে থাকবেন এ খাতে অভিজ্ঞ শিক্ষকরা। জেলার ক্লাবগুলোতে আমরা দুইজন করে প্রশিক্ষিত মডারেটর নিয়োগ করব। শিক্ষা ক্ষেত্রে এক শিক্ষার্থী- এক ল্যাপটপ- এক ড্রিম প্রকল্পে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। এই প্রকল্পের আওতায় আমরা প্রতিটি শিক্ষার্থীদের হাতে একটি করে ল্যাপটপ পৌঁছে দেব। কারণ শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণের কাক্সিক্ষত ডিভাইসটি যদি আমরা তাদের হাতে পৌঁছে দিতে পারি তবে তাদের আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না। সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিতে পারলে বাংলাদেশ থেকেই একেক জন বিল গেটস, মার্ক জাকারবার্গ তৈরি হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, গ্রামের মানুষের কাছে তথ্যপ্রযুক্তি সেবা নিশ্চিত করতে দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে স্থাপন করা হয়েছে মিনি কলসেন্টার। এসব কলসেন্টার থেকে গ্রামের মানুষ ৪৫ ধরনের সেবা পাচ্ছেন। এখান থেকে তারা জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র, কৃষি তথ্য, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, পরীক্ষার ফল, ভর্তি ফরম পূরণ, বিভিন্ন দফতরের তথ্য জানাসহ ৪৫ ধরনের সেবা জনগণের হাতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। থ্রিজি সেবার মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা গ্রাম-গঞ্জ পর্যন্ত বিস্তার ঘটানো হয়েছে। দেশের ১৪ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় সাড়ে ১১ কোটি মানুষই মোবাইল সেবার মধ্যে রয়েছে। এতে যোগাযোগ ব্যবস্থার ঈর্ষণীয় উন্নয়ন ঘটেছে। গ্রামের সাধারণ মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন ঘটেছে। একইভাবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধা থাকায় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে আগ্রহ বেড়েছে বহু গুণে। তারা ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা পেয়ে অনেক বেশি দক্ষ হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানে। এই ধারাকে অব্যাহত রাখতে বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানকে দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি করে দেয়ার জন্য সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। ন্যাশনাল আইসিটি ইনফ্রা-নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ গভর্সমেন্ট ফেস-২ (ইনফো-সরকার) মাধ্যমে সচিবালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওয়াইফাই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ৪৮৭টি উপজেলা ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে। এছাড়া ১৮ হাজার ১৩০টি অফিস ইন্টারনেট কানেক্টিভিটির মধ্যে চলে আসবে এ বছরের জুনে। ৮শ’ অফিসকে ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসার কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। কয়েক মাসের মধ্যে অফিসগুলো থেকে ভিডিও কনফারেন্সিং করা যাবে।
×