স্টাফ রিপোর্টার ॥ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে নিহত ভারতীয় সেনাবাহিনীর শহীদদের সম্মাননা জানাবে বাংলাদেশ। এছাড়া ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীকে মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য সম্মাননা জানানো হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন ঢাকা সফরের সময় এই সম্মাননা জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে মুক্তি বাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছিলেন ভারতীয় সেনারা। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পাকি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভ করে বাংলাদেশ। একাত্তরের সেই মুক্তিযুদ্ধে কয়েক লাখ মুক্তিযোদ্ধার পাশাপাশি শহীদ হয়েছিলেন ১ হাজার ৯৮৪ ভারতীয় সেনা বাহিনীর জওয়ান। বাংলাদেশের স্বাধীনতার এই আন্দোলনে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছিলেন কয়েকটি দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা বিশিষ্টজনরা সম্মানিত হলেও যাঁরা বাংলাদেশের মুক্তির লড়াইয়ে সেদিন রক্ত ঝরিয়েছিলেন, প্রাণ দিয়েছিলেন, নানা কারণে ভারতীয় সেনা বাহিনীর সেই সদস্যদের সম্মানিত করে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। এবার সেসব ভারতীয় সেনা, যাঁরা নিজেদের জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশের মুক্তির লড়াই সফল করেছিলেন, তাঁদের সম্মানিত করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীকে মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য সম্মান জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ভারতীয় সেনা বাহিনীর সেই সব জওয়ানকে ভোলা সম্ভব নয়, যাঁরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। এরপরই মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেয়, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ১ হাজার ৯৮৪ ভারতীয় সেনা জওয়ানকে সম্মাননা জানানো হবে। সরকারের তরফে ৭ জুন ঢাকায় ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর হয়ে শেখ হাসিনার হাত থেকে সম্মাননা গ্রহণ করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সে সময় শহীদ ভারতীয় সেনা জওয়ানদের সম্মাননা জানানোর বিষয়টি ঘোষণা দেয়া হবে।
শহীদ ওই সেনা জওয়ানদের পরিবারের সদস্যরা ৪৪ বছর পর এখন ভারতের কোথায় থাকেন, তা জানা বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব নয়। তাঁদের একত্রিত করা সরকারের পক্ষে আরও কঠিন। তাই সাহায্য নেয়া হবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর। মোদির সফরের সময় ভারতীয় সেনাদের সম্মাননা দেয়ার বিষয়টি ঘোষণা করা হবে। এরপর কোন এক সময়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দিল্লীতে ভারতীয় সেনা বাহিনীর সহায়তায় ১ হাজার ৯৮৪ শহীদ জওয়ানের পরিবারের সদস্যদের একত্রিত করা হবে। এসব শহীদ সেনাদের প্রত্যেকের পরিবারকে দেয়া হবে একটি প্রশংসাপত্র, স্মারক এবং কিছু উপহার। তাঁদের জন্য আরও কিছু করা যায় কি না, তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার।
