ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

তিন ছাত্রী ও গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ২ জুন ২০১৫

তিন ছাত্রী ও গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ পিরোজপুরে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী, কলাপাড়ায় দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী, গোপালগঞ্জে সদ্য এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থী এবং কিশোরগঞ্জে এক গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। খবর নিজস্ব সংবাদদাতাদের। পিরোজপুর ॥ ভা-ারিয়ায় চতুর্থ শ্রেণী পড়ুয়া (১২) এক স্কুলছাত্রী শ্লীলতহানির শিকার হওয়ার পর প্রভাবশালীদের চাপে স্কুল ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। উপজেলার ৬ নম্বর পশ্চিম ভিটাবাড়ীয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কাওছার হোসেন রিন্টু সিকদারের বিরুদ্ধে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক ও স্থানীয় প্রভাবশালী সাবেক ইউপি সদস্যের চাপে বিদ্যালয় ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে নির্যাতিত ওই স্কুলছাত্রী। এ ঘটনার বিচার দাবি করে মেয়েটির চাচা সরোয়ার হোসেন সোমবার অভিযুক্ত শিক্ষককে আসামি করে ভা-ারিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন। নির্যাতিতের পরিবার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগে জানা গেছে, মেয়েটি দাদা দাদীর কাছে থেকে পশ্চিম ভিটাবাড়ীয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। গত বৃহস্পতিবার স্কুলের সহকারী শিক্ষক কাওছার হোসেন রিন্টুর বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে গেলে ওই শিক্ষক বাড়িতে একা পেয়ে মেয়েটির শ্লীলতাহানি করে। পরে শিক্ষার্থী বিষয়টি অভিভাবকদের জানায়। একপর্যায় এ অনৈতিক বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়ে যায়। রাতেই মেয়েটির পরিবার রিন্টুর বাড়িতে গেলে মেয়েটির দাদা ও দাদির কাছে পা ধরে ক্ষমা চায় অভিযুক্ত শিক্ষক। এরপর মেয়েটির পরিবার যাতে এ ঘটনা নিয়ে কোন ঝামেলা না করে এজন্য প্রভাবশালী সাবেক ইউপি সদস্য বাশার হাওলাদারকে দিয়ে পরিবারের ওপর চাপ ও ভয়ভীতি দেখানো হয়। এমন কি নির্যাতিত স্কুলছাত্রীকে আপাতত স্কুলে না আসতে চাপ প্রয়োগ করে। এ বিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য বাশার হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। মেয়েটি অভিযোগে জানায়, প্রায়ই নানা ছুতায় ওই শিক্ষক শ্রেণী কক্ষে তাকে উত্ত্যক্ত করত। তার গায়ে হাত দিত। বিষয়টি তার সহপাঠীদের অনেকেই দেখেছে বলে জানায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক কাওছার হোসেন রিন্টু অভিযোগ অস্বীকার করেন। এ ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যান আতিকুল ইসলাম উজ্জ্বল জানান, অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে অন্যত্র বদলি করাসহ এ ব্যাপারে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষা অফিসারকে। কলাপাড়া ॥ কলাপাড়ায় দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে। চকলেট ও বিস্কুটের প্রলোভন দেখিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়। বর্তমানে শিশুটি কলাপাড়া হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নীলগঞ্জ গ্রামে এ ঘটনাটি ২৮ মে ঘটেছে। নীলগঞ্জের ইটভঁাঁটি সংলগ্ন দোকানি বহু অঘটনের হোতা নুরইসলাম (৪৮) শিশুটিকে ধর্ষণ করে। ওই রাতে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে পরদিন সকালে তার বাবা-মা থানায় নিয়ে আসে। একদিন পরে শিশুটির ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। ৩১ মে এ ঘটনায় কলাপাড়া থানায় মামলা হয়েছে। শিশুটির বাবা-মা এনজিওর ঋণের টাকা নেয়ার জন্য কলাপাড়া শহরে যায়। এ সুযোগে নুরইসলাম পাশবিক নির্যাতন চালায়। গোপালগঞ্জ ॥ গোপালগঞ্জে সদ্য এসএসসি পাস এক শিক্ষার্থী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যার পর কাশিয়ানী উপজেলার পদ্মবিলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সে এ বছর ওই উপজেলার বাথানডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছে। গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি ওই শিক্ষার্থী জানিয়েছে, হৃদয় নামে এক যুবকের সঙ্গে তার চার বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছে। এবারের এসএসসি পাসের রেজাল্ট পেয়ে খুশির খবরটি দিতে সন্ধ্যার পর বাড়ির পাশেই সে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে যায়। একপর্যায়ে ওই যুবক তাকে ধর্ষণ করে এবং তার দু’বন্ধুর কাছে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে ওই দু’বন্ধু তাকে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে। কাশিয়ানী থানা সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় ধর্ষিতার পিতা মোঃ হান্নান শেখ বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার বিবরণে জানা যায়, সন্ধ্যার পর ওই শিক্ষার্থী নিজেদের বাড়ি থেকে পাশেই চাচার বাড়ি যাবার পথে একই এলাকার যুবক হৃদয়, মার্কিন ও বিরু মুখ চেপে ধরে পাশের বাগানে নিয়ে যায় এবং সেখানে তাকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে ফেলে রেখে চলে যায়। কিশোরগঞ্জ ॥ জেলার হাওর অধ্যুষিত মিঠামইনে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণের মামলার প্রধান আসামি তৌফিক মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে রবিবার সন্ধ্যায় পুলিশ তাকে মিঠামইনের কেওয়ারজোড় গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে। ধর্ষক তৌফিক কেওয়ারজোড়ের গোলহাটি গ্রামের আনিছ মিয়ার ছেলে বলে জানা গেছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ২০ মে বুধবার সন্ধ্যায় মিঠামইনের ঘাঘড়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের এক গৃহবধূ তার অসুস্থ মাকে দেখার জন্য ট্রলারযোগে সন্ধ্যায় কেওয়ারজোড় যায়। এরপর এক বছর বয়সী একমাত্র শিশুপুত্রকে কোলে করে ওই গৃহবধূ হেঁটে যাওয়ার সময় কেওয়ারজোড় গ্রামের আনিছ মিয়ার ছেলে ৪ সন্তানের জনক তৌফিক মিয়া ওই গৃহবধূর পিছু নেয়। পথিমধ্যে হাউল্লা হাওরের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় মোবাইল ফোনে আরও তিন যুবককে জড়ো করে ধর্ষক তৌফিক। একপর্যায়ে গৃহবধূকে হত্যার ভয় দেখিয়ে তৌফিকসহ চারজন পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে রাতে ধর্ষিতাকে প্রাণনাশের হুমকি বিষয়টি না জানানোর কথা বলে ছেড়ে দেয়।
×