ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

২৪ নবেম্বরেই সময় শেষ ;###;পাসপোর্ট অধিদফতর বলছে, এ সময়ের মধ্যে দেয়া সম্ভব নয়;###;অন্তত ৩ লাখ বাংলাদেশী বিদেশে আটকা পড়বেন

মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট নিয়ে সঙ্কট ॥ লাখো প্রবাসী বিপাকে

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২ জুন ২০১৫

মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট নিয়ে সঙ্কট ॥ লাখো প্রবাসী বিপাকে

ফিরোজ মান্না ॥ চলতি বছর শেষ নাগাদ অন্তত তিরিশ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশী দেশে ফিরে আসার ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছেন। আগামী নবেম্বর মাসে শেষ হচ্ছে আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান পরিবহন সংস্থার (আইকাও) বেঁধে দেয়া মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) দেয়ার সময়। এই সময়ের মধ্যে সকল প্রবাসীর হাতে এমআরপি দেয়া সম্ভব নয় বলে স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছে পাসপোর্ট অধিদফতর। সরকারের তিন মন্ত্রণালয় বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিলেও প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে এখনও ৩০ থেকে ৩৫ লাখ প্রবাসী এমআরপি হাতে পাননি। তারা কবে নাগাদ এমআরপি হাতে পাবেন তাও নিশ্চিত নয়। ব্যর্থতার জন্য পরস্পরের প্রতি দোষারোপ করা হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই কাজে নিয়োজিত আউটসোর্সিং কোম্পানির অযোগ্যতার কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পক্ষান্তরে অভিযোগ উঠেছে, দূতাবাসগুলোর অসহযোগিতা ও অনিয়মের কারণে লাখ লাখ প্রবাসী হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এমআরপি দেয়ার জন্য প্রবাসীর কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের জন্যই দূতাবাস এই অসহযোগিতা করছে। সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আইকাওয়ের প্রেসিডেন্টের কাছে এমআরপি দেয়ার সময় বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছিল। আইকাও প্রেসিডেন্ট সেই অনুরোধ নাকচ করে দিয়ে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে আইকাওয়ের আর কিছু করার নেই। আইকাওয়ের এই জবাবের পর সরকার নড়েচড়ে বসলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সকল প্রবাসীর হাতে এমআরপি দিতে পারছে না। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের বৈধভাবেই ৯০ লাখ প্রবাসী রয়েছেন। গত তিন বছরে তাদের মাত্র ৭০ ভাগ এমআরপির আওতায় আনতে পেরেছে সরকার। বাকি ৩০ ভাগ প্রবাসীর হাতে নবেম্বরের মধ্যে এমআরপি তুলে দেয়া সম্ভব হবে না। এমআরপি দেয়া হচ্ছে দূতাবাস ও হাইকমিশনের মাধ্যমে। কোন দূতাবাস বা হাইকমিশনে বাড়তি লোকবল নিয়োগ করা হয়নি। যেসব দূতাবাস বা হাইকমিশনে এমআরপি প্রকল্পের কর্মী পাঠানো হয়েছিল তাদেরও অসহযোগিতা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনেক দূতাবাস ও হাইকমিশন থেকে তারা চলেও এসেছেন। এমন এক অবস্থায় প্রবাসীদের হাতে এমআরপি দেয়ার কাজ কিভাবে শেষ হবে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় বলছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এমআরপি দেয়া সম্ভব হবে। কারণ, সরকার বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কয়েক দফা আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়েছে। আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত, যে কোন মূল্যে প্রবাসীদের হাতে এমআরপি তুলে দেয়া হবে। আইকাওয়ের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যেই এমআরপির কাজ শেষ করার জন্য বিভিন্ন দূতাবাস ও হাইকমিশনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মালয়েশিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইআরআইএস এমআরপি দেয়া সংক্রান্ত প্রকল্পটির আউট সোর্সিংয়ের কাজ করছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রবাসী বাংলাদেশীদের হাতে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট না পৌঁছাতে পারলে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়ার কথা ভাবছে সরকার। সম্প্রতি প্রবাসী কর্মীদের হাতে এমআরপি পৌঁছে দেয়া সংক্রান্ত প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এমন সিদ্ধান্তের কথা বলা হয়েছে। বৈঠকে আইআরআইএসের কাজের অগ্রগতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রবাসী কল্যাণ সচিব, বহির্গমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বৈঠক শেষে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আইআরআইএসের কাজে তেমন অগ্রগতি নেই। তারা যদি সময়মতো কাজ সম্পন্ন করতে না পারে, তবে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই বিকল্প ব্যবস্থা কি হবে সে বিষয়ে মন্ত্রী কিছুই বলেননি। ওই বৈঠকের পর দেড় মাসের মতো সময় চলে গেলেও বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এখনও ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশ লাখ প্রবাসীর হাতে এমআরপি পৌঁছানো বাকি রয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, এমআরপি নিয়ে ২০১৫ সালে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। এ সম্পর্কে দুই বছর আগেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে সময়মতো যথাযথ উদ্যোগ না নেয়ায় প্রবাসীদের জন্য বড় ধরনের সঙ্কটে পড়তে হচ্ছে। মন্ত্রী প্রস্তাব দিয়েছিলেন মোবাইল টিম গঠন করে প্রবাসীদের হাতে এমআরপি দেয়ার জন্য। এই দুটি মন্ত্রণালয় ক্র্যাশ প্রোগ্রাম হাতে নিয়ে কাজটি শেষ করতে পারত। এখন যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে তা সহজেই এড়ানো সম্ভব হতো। আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক থেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, আইকাওয়ের বেঁধে দেয়া সময় অনুযায়ী চলতি বছরের ২৪ নবেম্বর হাতে লেখা পাসপোর্টের যুগ শেষ হচ্ছে। এর পর আর হাতে লেখা পাসপোর্ট ব্যবহারের সুযোগ থাকবে না। ফলে যেসব প্রবাসী বাংলাদেশীর হাতে এমআরপি থাকবে না, সংশ্লিষ্ট দেশগুলো তাদের আটক করে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেবে। সৃষ্ট সঙ্কট নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব শহিদুল হক জনকণ্ঠকে বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। প্রতিটি দূতাবাস ও হাইকমিশনে বাড়তি জনবল নিয়োগ করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রবাসীদের হাতে এমআরপি তুলে দেয়া সম্ভব হবে। এমআরপির জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যেসব দেশে প্রবাসীর সংখ্যা বেশি সেসব দেশে মোবাইল টিম কাজ করবে; যাতে কর্মীদের কষ্ট করে দূতাবাস বা হাইকমিশনে আসতে না হয়। এমআরপি নিয়ে বৈঠকে দূতাবাস ও হাইকমিশনের কোন প্রকার অনিয়ম-দুর্নীতির খবর পাওয়া গেলে অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ বিদেশে কাজ করছেন। তাদের কথা চিন্তা করেই এমআরপির কাজটি দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে করা হচ্ছে। আইকাওয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি বছরের ২৪ নবেম্বরের পর থেকে হাতে লেখা পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশ ভ্রমণ কিংবা বিদেশে অবস্থান করা যাবে না। এতে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়বেন বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রবাসী কর্মীরা। সরকারী হিসাব অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৩০ শতাংশ প্রবাসীর হাতে এমআরপি নেই। ৭০ শতাংশ প্রবাসীকে গত পাঁচ বছরে এমআরপি দেয়া সম্ভব হয়েছে। তাছাড়া এমআরপি দেয়া নিয়ে দূতাবাস ও হাইকমিশনের একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রবাসীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেয়া অভিযোগ উঠেছে। এমআরপি প্রকল্পের এক কর্মকর্তা বলেন, বিদেশে দূতাবাস ও হাইকমিশনের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের কোন প্রকার সহযোগিতা দিচ্ছে না। কারণ, এমআরপি প্রকল্পের মাধ্যমে পাসপোর্ট দেয়া হলে হাইকমিশন ও দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোন লাভ হয় না। তাই তারা সহযোগিতাও দিচ্ছে না। এমন অভিযোগ অবশ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা স্বীকারও করেছেন। তিনি বলেছেন, এমআরপি দেয়ার বিষয়ে দূতাবাস ও হাইকমিশনের কতিপয় কর্মকর্তা বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। একজন কর্মী তার কাজ বাদ দিয়ে বার বার দূতাবাসে আসতে চান না। তাই কর্মীরা টাকা দিয়েই এমআরপি নিচ্ছেন। তাছাড়া অনেক কর্মী দূতাবাস বা হাইকমিশন থেকে অনেক দূরের শহরে কাজ করেন, তারা এমআরপির জন্য প্রতিদিন দূতাবাসে ঘুরতেও চান না। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটছে। বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বলছেন, বিষয়টি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। যথাসময়েই এমআরপি প্রবাসীদের হাতে তুলে দেয়া হবে। আইকাওয়ের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যেই এমআরপি দেয়া হবে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গত ১৪ জানুয়ারিতে কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার কামরুল আহসান বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী মন্ট্রিলে আইকাও প্রেসিডেন্ট ওলুমইয়া ব্রান্ড অলিউরের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। সাক্ষাতে তিনি বাংলাদেশ থেকে বিপুলসংখ্যক প্রবাসীকে চলতি বছরের ২৪ নবেম্বরের আগে এমআরপি দেয়ার বিষয়ে সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেছিলেন। তিনি এমআরপি ব্যবহারের বাধ্যবাধকতার সময়সীমা এ বছরের ২৪ নবেম্বর থেকে বাড়িয়ে ২০১৮ সালের ২৪ নবেম্বর করার অনুরোধ জানান। হাইকমিশনারের এই অনুরোধ আইকাও প্রেসিডেন্ট নাকচ করে দিয়েছিলেন। আইকাও প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে বলেন, কোন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হলে আইকাও কাউন্সিলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের মতামত প্রয়োজন রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের আগামী গ্রীষ্মকালীন কাউন্সিল অধিবেশনের আলোচ্যসূচীতে এ ধরনের কোন এজেন্ডা ছিল না। এ জন্য চলতি বছরের ২৪ নবেম্বরের মধ্যে হাতে লেখা পাসপোর্ট ব্যবহার করা যাবে। এরপর আর হাতে লেখা পাসপোর্ট ব্যবহার করা যাবে না। আইকাও প্রেসিডেন্টের নাকচ করার বিষয়টি কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার গত ৮ ফেব্রুয়ারি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দিয়েছে। এর পর বিষয়টি নিয়ে কোন মন্ত্রণালয়ই করণীয় কি হবে তা নিয়ে বৈঠক আহ্বান করেনি। উল্টো আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করা নিয়ে আরও জটিলতা তৈরি হয়েছে। কোন্ মন্ত্রণালয় এই বৈঠক ডাকবে এ নিয়ে ঠেলাঠেলি চলছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র এবং বেসামরিক বিমান মন্ত্রণালয়কে দোষ দিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে ওই দুই মন্ত্রণালয়ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওপর দোষ চাপিয়েছে। এই জটিল সমস্যা নিরসনে আলোচনা বা সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য কার্যকর কোন উদ্যোগই দৃশ্যমান হয়নি। বিষয়টি নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, এমআরপি এখন আমাদের সামনে একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মালয়েশিয়াতে আমরা এ বিষয়ে সফল হয়েছি অনেক কষ্ট করে। মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের কর্মী সংখ্যা অনেক বেশি। এদের এমআরপি যথাসময়ে দিতে না পারলে কর্মীরা চরম বিপদে পড়বেন। তাই বিষয়টি নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পাসপোর্ট অধিদফতর ও বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত-হাইকমিশনারদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। ওই বৈঠকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয়েছে। জটিলতা নিরসন করে আমরা এমআরপি যথাসময়ে প্রবাসীদের হাতে তুলে দেয়ার চেষ্টা করছি। সরকারের সিদ্ধান্তে প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট দেয়া হবে। আউট সোর্সিংয়ের জন্য যে প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের যোগ্যতা নেই। লোকবল ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাব রয়েছে। এই বিপুলসংখ্যক মানুষকে এমআরপি দিতে হলে অবশ্যই লোকবল বাড়াতে হবে। কয়েকটি দূতাবাস ও হাইকমিশনে বাড়তি লোকবল পাঠানো হয়েছে। যদিও এমআরপি দেয়ার বিষয়টি পুরোপুরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজ। এখানে যেহেতু দূতাবাস ও হাইকমিশন জড়িত তাই বিষয়টির দায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপরই এসে পড়ে। সেই দায় থেকেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। তাই আমরা এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। যেভাবেই হোক এমআরপি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দেয়া হবে। এদিকে অনেক দেশ থেকে প্রবাসীরা প্রতিনিয়ত টেলিফোনে অভিযোগ করছেন, তাদের কাছ থেকে এমআরপি ফি’র বাইরে ১০ থেকে ১৫ হাজার করে টাকা বেশি নেয়া হচ্ছে। এই টাকা না দিলে এমআরপি পাওয়া যাচ্ছে না। দূতাবাস বা হাইকমিশনের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রবাসীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে নিচ্ছেন। এতে বিদেশে অবস্থিত ৮৫ থেকে ৯০ লাখ প্রবাসীর কাছ থেকে এমআরপি বাবদ কয়েক হাজার কোটি টাকা তারা হাতিয়ে নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বিষয়টি আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বলা হয়, কোন দূতাবাস ও হাইকমিশনের কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×