ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মানবপাচারের বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ জানতে চেয়ে রুল

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১ জুন ২০১৫

মানবপাচারের বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ জানতে চেয়ে রুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাগরে ভাসমান এবং পাচারকারীদের ক্যাম্পে যেসব বাংলাদেশী নাগরিক বন্দী আছেন তাদের উদ্ধারে সরকারের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মানবপাচারের বিষয়ে সরকার কি ব্যবস্থা নিয়েছে ও পাচার হওয়া বাংলাদেশীদের উদ্ধারে সরকার কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে তা জানতে চেয়েছে হাইকোট। ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন মামলা তদন্ত করতে হাইকোর্টে ১০ সদস্যের একটি তালিকা জমা দিয়েছে কয়েকটি বেসরকারী মানবাধিকার সংগঠন। মাইক্রোবাসে গারো নারী ধর্ষণের ঘটনায় রুল শুনানিতে এই তালিকা দাখিল করেন আদালতে। বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলা নিম্ন আদালতে চলবে মর্মে রায় দিয়েছেন সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে সিনেট বৈঠক অনুষ্ঠানের বৈধতা নিয়ে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। সাগরের নৌকায় ভাসমান এবং জঙ্গলের ক্যাম্পে জীবিত বা মৃত বাংলাদেশী নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ রবিবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। একই সঙ্গে মানবপাচারের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের আইনে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, পুলিশের আইজি, কক্সবাজার জেলার ডিসি, এসপি ও টেকনাফ থানার ওসিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। গত বুধবার ওই রিট আবেদনের পক্ষে রিটকারী নিজে প্রাথমিক শুনানি শেষ করেছেন। কিন্তু আজ রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষ করার পরে ওই রিটের বিষয়ে আদেশ দেন। আদালতে মানবাধিকার সংগঠন ও আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন এ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করিম। এর আগে গত ২৫ মে মানবাধিকার সংগঠন ন্যাশনাল ফোরাম ফর প্রটেকশন অব হিউম্যান রাইটসের পক্ষে এ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করে। হাইকোর্টে তালিকা জমা ॥ ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন মামলা তদন্ত করতে হাইকোর্টে ১০ সদস্যের একটি তালিকা জমা দিয়েছে কয়েকটি বেসরকারী মানবাধিকার সংগঠন। মাইক্রোবাসে গারো নারী ধর্ষণের ঘটনায় রুল শুনানিতে এই তালিকা দাখিল করেন আদালতে। রবিবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও কাজী মোঃ ইজারুল হক আকন্দ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে এই তালিকা জমা দেয়। বেসরকারী পাঁচ মানবাধিকার সংগঠন হলো নারীপক্ষ, মহিলা পরিষদ, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং ব্লাস্ট। যাদের নাম দেয়া হয়েছে তারা হলেন, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আওলাদ আলী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, মানবাধিকার কর্মী আবুল হোসেন, মানবাধিকার কর্মী সালমা খান, আয়েশা খানম, শিরীন হক, পুলিশের সাবেক মহা-পরিদর্শক (আইজিপি) এনামুল হক, সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না, সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য এ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ ও ব্র্যাকের মানবাধিকার বিষয়ক পরিচালক ড. পেরেরা। সাক্ষী এখন আসামি ॥ বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলা নিম্ন আদালতে চলবে মর্মে রায় দিয়েছেন সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। একইসঙ্গে এ মামলার প্রধান সাক্ষী জুলফিকার আলীকেও মামলায় (পক্ষভুক্ত) আসামি করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রবিবার সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত এক রায়ের কপি পান এ মামলার আসামি হাফিজ ইব্রাহিমের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। হাইকোর্টের দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে করা এক আপিল আবেদনের ওপর শুনানি করে গত বছরের ১২ এপ্রিল প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্য বিশিষ্ট সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ এই রায় দেন। রায়ে আপিল বিভাগ বলেন, হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে দুদকের করা এই মামলার সাক্ষীকেও আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হলো। আপীল বিভাগের রায় অনুযায়ী এখন আসামি হাফিজ ইব্রাহিম তার স্ত্রী মিসেস মাফরুজা সুলতানা এবং মামলার সাক্ষী মোঃ জুলফিকার আলী ও তার স্ত্রী রহিমা আলীকেও মামলার আসামি করে বিশেষ আদালতে মামলা চালানোর জন্য বলা হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগে হাফিজ ইব্রাহিম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলার কার্যক্রম চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন আপীল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি। একই সঙ্গে স্ত্রীর করা লিভ টু আপীল আবেদনের ওপর গত বছরের ২৬ অক্টোবর আপীল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হয়। শুনানি শেষে আপীল বিভাগ এই রায় দেন। মাফরুজা সুলতানার করা এক আবেদনে এ আদেশ দেয়া হয়। আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী টিএইচ খান, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, মোহাম্মদ আহসান ও নাজমুল হুদা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। রুল খারিজ ॥ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে সিনেট বৈঠক অনুষ্ঠানের বৈধতা নিয়ে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। রবিবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মোঃ ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এই খারিজ আদেশের ফলে এখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে সিনেট বৈঠক অনুষ্ঠানে আর আইনগত কোন ও বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীগণ। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষকের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২১ মে ভিসি প্যানেল নির্বাচনে সিনেট বৈঠক অনুষ্ঠানে স্থগিতাদেশ দিয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এম কে রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করীম।
×