ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মূল চুক্তি পরিবর্তন না করে ইউরোজোনকে সংহত করতে জার্মান-ফরাসী মতৈক্য

ইইউতে বাধার মুখে ক্যামেরন

প্রকাশিত: ০৩:৪৩, ২৭ মে ২০১৫

ইইউতে বাধার মুখে ক্যামেরন

জার্মানি ও ফ্রান্স ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) চুক্তিগুলো নিয়ে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত না করে ইউরোজোনকে সুসংহত করতে এক চুক্তিতে পৌঁছেছে। এ সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো জুনে অনুষ্ঠেয় ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে পেশ করা হবে। এটি হবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের জন্য এক আঘাত। তিনি একই বৈঠকে ব্রিটেনের ইইউতে থাকার প্রশ্নে গণভোট অনুষ্ঠানের আগে কয়েকটি দাবি পেশ করবেন। এদের মধ্যে ইইউ চুক্তিগুলো নিয়ে নতুন করে আলোচনা করার দাবিটিও রয়েছে। খবর গার্ডিয়ান অন লাইনের। জার্মান চ্যান্সেলর এঞ্জেলা মেরকেল এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ একক মুদ্রা ইউরো গ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক ঐক্য আরও দৃঢ় করতে এবং বর্তমান লিসবন চুক্তির কাঠামোর মধ্যে থেকেই কাজ করে যেতে এক মতৈক্যে পৌঁছেছেন। তারা ইইউর মৌলিক গঠনতান্ত্রিক দলিল লিসবন চুক্তি এবং ইইউতে ব্রিটেনের অবস্থান নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করতে ব্রিটেনের দাবি পাশ কাটিয়ে গিয়েছেন। ফরাসি-জার্মান প্রস্তাবগুলো আগামী মাসে ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে। ক্যামেরন ও গণভোটে ব্রিটেনকে ইইউতে রাখার পক্ষে সমর্থন আদায় করতে হলে ঐ দলিলে কি কি পরিবর্তন আনা প্রয়োজন, তা তুলে ধরবেন। আগামী বছরগুলোতে ইউরোজোনে বর্তমান চুক্তিগুলোর কাঠামোতে চারটি ক্ষেত্রে সংস্কার সাধন করতে ফ্রান্স ও জার্মানি আহ্বান জানাতে একমত হয়। লা মঁদে পত্রিকায় একথা বলা হয়। ইউরোজোন যাতে আরও ঘনিষ্ঠভাবে সংহত হয়, ব্রিটিশরা যাতে ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ককে নতুনভাবে গড়ে তোলা এবং ব্রাসেলসের কাছ থেকে ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার সুযোগ পেতে পারে, সেজন্য ক্যামেরন ইইউ চুক্তিগুলো নিয়ে নতুন করে আলোচনা করতে ইতোপূর্বে বার বার আহ্বান জানান। ইইউ সদস্যরা ও ব্রাসেলসের সিনিয়র কর্মকর্তারা লিসবন চুক্তি নিয়ে আবার আলোচনা করতে তাদের অনিচ্ছা বার বার প্রকাশ করে এসেছে। ফরাসি-জার্মান উদ্যোগ ঐ চুক্তি নিয়ে নতুন করে কথাবার্তা শুরু করার পথ সুনিশ্চিতভাবেই বন্ধ করে দেবে। এ উদ্যোগ ২৫ জুনের শীর্ষ সম্মেলনে সম্ভবত অনুমোদিত হবে। যখন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ফরাসি ও জার্মানদের সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করার প্রস্তুতি নিয়েছেন, তখন বার্লিন ও প্যারিস ঐ উদ্যোগ নিল। ক্যামেরন সোমবার তার গ্রামীণ বাসভবন চেকুয়ারসে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জাঁ-ক্লদ জানকারের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন। এতে প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে, ব্রিটিশ জনগণ বর্তমান অবস্থায় সুখী নয় এবং তাদের উদ্বেগ আরও ভালভাবে নিরসনের জন্য ইইউতে পরিবর্তন আনা দরকার বলে মনে করে। ডাউনিং স্ট্রিটের এক মুখপাত্র একথা জানান। মুখপাত্র বলেন, জানকার যুক্তরাজ্যের জন্য একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থা খুঁজে পেতে চান এবং সাহায্য করতে চাইবেন বলে পুনরুল্লেখ করেন। তারা এসব সমস্যার সমাধান খুঁজে পাওয়ায় মনোভাব নিয়ে ইস্যুটি নিয়ে কিছুটা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেন। তারা একমত হন যে, সামনে এগিয়ে যাওয়ায় সর্বোত্তম পথ নিয়ে অন্যান্য নেতাকে নিয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন হবে। ইউরোজোনের পাঁচ বছরেরও বেশি সময়ের সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার জোর চেষ্টা চলার মধ্যে একে আর্থিক ও রাজনৈতিক দিক দিয়ে কিভাবে সুসংহত করা যায়, জানকার জুন শীর্ষ সম্মেলনের জন্য সেই সম্পর্কিত বিকল্প নীতিগুলো প্রস্তুত করছেন। ফরাসি-জার্মান প্রস্তাবগুলো অনুযায়ীই সম্ভবত নীতি নির্ধারণ করা হবে। এসব প্রস্তাবে আর্থিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ঐ সংযোগ সাধনের কথা বলা হয়, আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জার্মান দাবিকে আরও বিনিয়োগের ফরাসি দাবির সঙ্গে যুক্ত করা হয়। ফরাসি-জার্মান নীতিগত প্রস্তাবে দেখা যায় যে, ফরাসি ও জার্মান নেতাদের সঙ্গে ক্যামেরনের খুব একটা মিল নেই। লা মঁদে পত্রিকায় এ মন্তব্য করা হয়।
×