ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দেশে ভূমিকম্প পূর্ব ও পরবর্তী প্রস্তুতি একেবারেই শূন্য

প্রকাশিত: ০৪:৪৪, ২৪ মে ২০১৫

দেশে ভূমিকম্প পূর্ব ও পরবর্তী প্রস্তুতি একেবারেই শূন্য

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দ্রুত ও অপরিকল্পিত নগরায়ন দেশকে ভূমিকম্প ঝুঁকিতে ফেলেছে। দেশে ভূমিকম্প পূর্ব ও পরবর্তী প্রস্তুতিও একেবারেই শূন্য। প্রস্তুতিহীনতাই সবচেয়ে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, শুধুমাত্র ভবন নির্মাণে ইমারত বিধিমালা মেনে সঠিক নির্মাণ সামগ্রীর ও আধুনিক নির্মাণ কৌশল ব্যবহার করে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য বিশাল ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব। এজন্য ভূমিকম্প ঝুঁকিতে থাকা সরকারী-বেসরকারী ভবন চিহ্নিত করে সচেতনতামূলক কার্যক্রম হাতে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। শনিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত বাংলাদেশে ভূমিকম্পের ঝুঁকি এবং নির্মাণ কৌশল নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে তারা এ আহ্বান জানান। ক্রাউন সিমেন্ট এবং জিপিএইচ ইস্পাত যৌথভাবে এর আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা ছাড়া বিশেষজ্ঞ নির্মাণ প্রকৌশলীরা আলোচনায় অংশ নেন। সঠিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে ও অত্যাধুনিক নির্মাণ কৌশল ব্যবহার করে কিভাবে ভূমিকম্প ঝুঁকি ও পরবর্তী ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনা যায় আলোচনায় সে বিষয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। এছাড়াও সেমিনারে বহুতল ভবনের ভূমিকম্প ঝুঁকির নানাদিক, মাটির গুণাগুণ, নির্মাণকৌশল, সরকারের ভূমিকা, জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং ভূমিকম্প পরবর্তী সময়ে করণীয় বিষয় ওঠে আসে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ক্রাউন্ট সিমেন্ট গ্রুপের উপদেষ্টা প্রকৌশলী মেজর জেনারেল (অব) হামিদ আল হাসান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্সের (আইইবি) প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এম শামীম জেড বসুনিয়া। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বুয়েট সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ফায়ার সার্ভিস এ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান, ভারতের ত্রিপুরা এনআইটির সহকারী অধ্যাপক ড. রাজীব সাহা, নেপাল ভূমিকম্পের প্রত্যক্ষদর্শী অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় প্রমুখ। এছাড়াও ক্রাউন সিমেন্ট ও জিপিএইচ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, ক্রাউন সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খবির উদ্দিন মোল্লাসহ আয়োজক প্রতিষ্ঠানের উর্ধতন কর্মকর্তার উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ভূমিকম্পে ভবন ধসে এবং অসচেতনতার কারণে প্রাণহানি ঘটে সবচেয়ে বেশি। সাম্প্রতিক অতীতে না হলেও বাংলাদেশ বড় ধরনের ভূমিকম্প ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কেবল নির্মাণ ত্রুটির কারণে নেপাল মাত্রার কাছাকাছি ভূমিকম্পে রাজধানী ঢাকার ৭০ হাজার ভবন মাটির সঙ্গে মিশে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে অসংখ্য প্রাণহানির পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ সম্পদ ধ্বংসের মুখোমুখি হবে। অথচ ভবন নির্মাণে ইমারত বিধিমালা মেনে সঠিক নির্মাণ সামগ্রীর ও আধুনিক নির্মাণ কৌশল ব্যবহার করে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য বিশাল ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব। এক্ষেত্রে সরকারকেই কঠোর তদারকির দায়িত্ব নিতে হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. এম শামীম জেড বসুনিয়া বলেন, দেশে ভূমিকম্প পূর্ব ও পরবর্তী প্রস্তুতি একেবারেই শূন্য। প্রস্তুতিহীনতাই সবচেয়ে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। ভূমিকম্প প্রস্তুতির ক্ষেত্রে সরকারকেই সবার আগে ভূমিকা রাখতে হবে।
×