ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রবীন্দ্রনাথ সব সময়ই প্রাসঙ্গিক ॥ লাইসা আহমদ লিসা

প্রকাশিত: ০৭:১১, ২১ মে ২০১৫

রবীন্দ্রনাথ সব সময়ই প্রাসঙ্গিক ॥ লাইসা আহমদ লিসা

সঙ্গীতশিল্পী লাইসা আহমদ লিসা। রবীন্দ্রনাথের গানসহ সুস্থধারার সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে জয় করে চলেছেন শ্রোতাদের মন। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রামা এ্যান্ড মিউজিক বিভাগের চেয়ারম্যান, ছায়ানটের সঙ্গীত শিক্ষক এবং একজন নিরলস সাংস্কৃতিক কর্মীও। এছাড়া জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের তিনি সাধারণ সম্পাদক। ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনে আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে পরিষদের ৩৪তম জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন। এ সম্পর্কে গুণী এই শিল্পীর সঙ্গে কথা হয় । ৩৪তম জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন সম্পর্কে বলুন লাইসা আহমদ লিসা : তিন দিনের আয়োজন ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনে। এবারের অধিবেশনের আহ্বান ‘এখনও ঘোর ভাঙে না তোর যে’। সকাল সাড়ে ৯টায় ‘এখনও ঘোর ভাঙে না তোর’ বোধন সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে শুরু হবে অনুষ্ঠান। প্রদীপ প্রজ্বলন ও আশীর্বাদী দিয়ে সম্মেলন উদ্বোধন করবেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. অনুপম সেন ও প্রধান অতিথি কথাসাহিত্যিক কবি সৈয়দ শামসুল হক। এবারের আয়োজনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শতাধিক শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী ও সংগঠক অংশ নিচ্ছেন। আয়োজনের শেষ দিনে কিশোর এবং সাধারণ বিভাগের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করা হবে। এছাড়া গুণী সম্মাননা এবং রবীন্দ্রপদকে ভূষিত হবেনÑ প্রবীণ শিল্পী সুধীন দাশ ও প্রকৃতিবিদ দ্বিজেন শর্মা। তিন দিনেরই সান্ধ্য অধিবেশন সাজানো হয়েছে গুণীজনের সুবচন রবিরশ্মি, আবৃত্তি, পাঠ, নৃত্য ও গান দিয়ে। দ্বিতীয় দিন বিকেল ৪টায় রয়েছে আবুল মোমেনের লেখা প্রবন্ধ ‘রাষ্ট্র ও ধর্ম রবীন্দ্র ভাবনা ও বর্তমান বাস্তবতা’ শীর্ষক সেমিনার। এবারের আয়োজনে ব্যতিক্রমী কি থাকছে? লাইসা আহমদ লিসা : ব্যতক্রমী ঠিক বলা যাবে না, তবে প্রতিবারের মতো এবারও থাকছে সেমিনার। এবারের বিষয়টা সম্পূর্ণ ভিন্ন। তবে প্রতিবার আমরা যেমন পঞ্চ কবির গানও আমাদের আয়োজনে যুক্ত করি, এবার একটু ভিন্ন। রজনীকান্ত সেনের সার্ধশততম জন্মবার্ষিকী মাথায় রেখে তাঁর গানকে যুক্ত করেছি। আমাদের আয়োজন শেষ হচ্ছে ২৪ মে, আর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী ২৫ মে। এ কারণে সে বিষয়টাকেও আমরা গুরুত্বের সঙ্গে অনুষ্ঠানে যোগ করব। কাজেই এবার রজনীকান্ত সেনের গান দিয়ে যেমন একটি চকম থাকবে, তেমনি শেষ দিনে নজরুলের গানও আয়োজনে যুক্ত হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে রবীন্দ্রনাথ কতটা প্রাসঙ্গিক? লাইসা আহমদ লিসা : রবীন্দ্রনাথ সব সময়ই প্রাসঙ্গিক। আমরা বঙালীচর্চা ও বাঙালী হওয়ার সাধনায় আছি। সেই অর্থে আমাদের আদর্শ পুরুষ হচ্ছে রবীন্দ্রনাথ। তাঁর সৃষ্টিকর্ম থেকে আমরা সবসময় দিক নির্দেশনা পাই। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের প্রেরণা ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। এখন যে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে, তাকে কাটিয়ে উঠতে রবীন্দ্রনাথের প্রেরণা বিশেষ অবদান রাখবে। আমরা তাঁর আদর্শকে ভালবেসে দিক্ষিত হতে চাই। নতুন প্রজন্মের মধ্যে রাবীন্দ্রিক চেতনার প্রভার কেমন মনে হয়? লাইসা আহমদ লিসা : আমি সবসময় আশাবাদী। তবে নতুনদের থেকে আমরা যারা একটু অবসর সময়ে আছি, তাঁরা ঠিক থাকলে নতুনরাও ঠিক থাকবে। কাজেই দায়িত্বটা কিন্তু আমাদের সকলের। বাঙালীর মূল চেতনায় নতুন প্রজন্মকে ধরে রাখতে আমাদের দায়বদ্ধতা অনেক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যদি তাদের মধ্যে আমরা সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারি নিশ্চয়ই তাদের মধ্যে দেশাত্মবোধ জন্মাবে। আমি মনে করি বীজ বপন করতে হলে মাটিকে যেমন চাষ দিতে হয়, সেই চাষটা আমরা তেমন করে দিতে পারছি না। পরিষদের পক্ষ থেকে আগামী পরিকল্পনা কি? লাইসা আহমদ লিসা : দেশজুড়ে সঠিকভাবে জাতীয়সঙ্গীত পরিবেশন কিন্তু রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদই প্রথম করেছিল। এখন লক্ষকণ্ঠ ছাড়িয়ে গেছে এ সঙ্গীত। স্কুলে-স্কুলে জাতীয়সঙ্গীত সঠিকভাবে পরিবেশনার কাজ আমরাই করেছিলাম। আমরা এখন পাঠচক্র শুরু করেছি। শুধু রবীন্দ্রনাথের গানেই আমরা সীমাবদ্ধ না থেকে নিজেদের সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য আমরা বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ নিচ্ছি। -গৌতম পা-ে
×