ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

আমদানি বাড়ছে মিয়ানমার থেকে;###;সীমান্ত হাটে গরু কেনা-বেচার চিন্তাভাবনা ;###;আগামী মাসে নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সময় বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে

ভারত থেকে সরবরাহ কমেছে ৫০ শতাংশ ॥ গরু খোঁজা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২০ মে ২০১৫

ভারত থেকে সরবরাহ কমেছে ৫০ শতাংশ ॥ গরু খোঁজা হচ্ছে

তৌহিদুর রহমান ॥ ভারত থেকে গরুর সরবরাহ কমে আসায় সমস্যা সমাধানে বিকল্প পথ খুঁজছে সরকার। এ ক্ষেত্রে মিয়ানমার থেকে গরু আমদানির পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত হাটেও গরু কেনা-বেচার কথা ভাবছে সরকার। এদিকে ভারতের গরু বাংলাদেশে না ঢুকলে ক্ষতি হবে দু’দেশেরই। গরু আসা বন্ধ হলে বাংলাদেশের ক্ষতির পাশাপাশি ভারতের প্রতিবছর আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া ভারতীয় সীমান্ত বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা গরু সরবরাহ বন্ধের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন নিয়ে ইতোমধ্যেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন সূত্র এসব তথ্য জানায়। একাধিক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত দুই মাস ধরে ভারত থেকে গরুর প্রবেশ কমে আসছে। বৈধ-অবৈধ দুই পথেই গরুর প্রবেশ কমেছে প্রায় ৫০ শতাংশ। এর ফলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে গরুর মাংসের দাম বাড়ছে। এ সমস্যা সমাধানে ইতোমধ্যেই সরকারের নীতি নির্ধারণী মহল বিকল্প দেশ থেকে গরু আমদানির কথা ভাবছে। কেননা ভারতের পাশাপাশি মিয়ানমার থেকেও বাংলাদেশে গরু আসে। তবে এখন মিয়ানমার রুট থেকে গরু আমদানির পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে। এদিকে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বেশ কয়েকটি সীমান্ত হাট রয়েছে। রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশের কুড়িগ্রাম, সিলেট ও ফেনীতে সীমান্ত হাট রয়েছে। এসব সীমান্তে স্থানীয় যেকোন পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করা যায়। একব্যক্তি সীমান্ত হাটে ১০০ ডলার পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডলারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিলে সীমান্ত হাটে গরু কেনাবেচা করা সম্ভব। এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকা আসছেন। মোদির ঢাকা সফর কালে গরুর বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে। সীমান্ত হাটে আইনী প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে গরু কেনা বেচা করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী বাংলাদেশ। দুই দেশ একমত হলেই মোদির সফরে আলোচনায় এ বিষয়টি তোলা হবে। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে গরু কেনাবেচা বন্ধ থাকলে ক্ষতি হবে দু’দেশেরই। বাংলাদেশের মানুষের কাছে গরুর মাংস প্রাণীজ আমিষের বড় উৎস। গরুর মাংসের দাম বাড়লে সহজলভ্য এই আমিষ থেকে বঞ্চিত হবে মানুষ। তবে এই ক্ষেত্রে ভারতেরও ক্ষতি হবে। ভারত থেকে বাংলাদেশে গরুর সরবরাহ বন্ধ থাকলে প্রতিবছরই দেশটির ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশে গরু সরবরাহ বন্ধের নেপথ্যে ॥ ভারতে গরু হত্যাকে পাপ মনে করা হয়। সে কারণে গরুহত্যা বন্ধে বিভিন্ন সময় দাবি জানিয়ে আসছে সে দেশের বিভিন্ন সংগঠন। আর বাংলাদেশে গরু জবাইয়ের উদ্দেশ্যে পাচার বন্ধের দাবিও ছিল এসব সংগঠনের। ইতোমধ্যেই মহারাষ্ট্রে গরু জবাই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পরে বিএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবসে ভাষণে সেদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছিলেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে গরু পাচার বন্ধে সবরকম চেষ্টা করতে হবে। গত বছরের শেষের দিকে এই বক্তব্য দেয়ার পরেও ভারত থেকে গরু আসছিল। তবে গত ১-৩ এপ্রিল রাজনাথ সিং বাংলাদেশ-ভারতের কয়েকটি সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি সে সময় গরু সরবরাহ বন্ধে সীমান্ত বাহিনীকে কড়া নির্দেশ দেন। এরপর থেকেই বাংলাদেশে গরু আসা আরও কমে যায়। বাংলাদেশে গরু আসা প্রসঙ্গে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নীতিনির্ধারণী কমিটির সদস্য তথাগত রায় জানান, ভারত থেকে গরু রফতানি নিষিদ্ধ। গরু পাচারের মাধ্যমে যে অর্থ ভারতে আসে তা কালো টাকা। এই অর্থ সীমান্ত এলাকায় সন্ত্রাসবাদেরও জন্ম দেয়। এ ক্ষেত্রে সীমান্ত হাটে গরু বিক্রির বিষয়ে দু’দেশের সরকারের মধ্যে আলোচনা হতে পারে। ভারতের ক্ষতি ৪০ হাজার কোটি টাকা ॥ বাংলাদেশে গরু সরবরাহ বন্ধ হলে প্রায় এক কোটি ২৫ লাখ গরু স্বাভাবিক মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত গোশালায় রাখতে হবে। এতে বছরে যে ব্যয় হবে, তা শিশুদের পুষ্টি নিরাপত্তায় ভারত সরকারের বরাদ্দ অর্থের প্রায় চার গুণ। ভারতে গরুর গড় আয়ু ১৫-২০ বছর। সাধারণত মৃত্যুর পাঁচ বছর আগেই একটি গাভী দুধ দেয়া বন্ধ করে দেয়। এ ধরনের একটি গরু গোশালায় রেখে খাওয়ানো ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং এ কাজে নিয়োজিত কর্মীর বেতন বাবদ খরচ হয় বছরে ২৫ হাজার রুপী। সে হিসাবে ১ কোটি ২৫ লাখ গরুর পেছনে বছরে অতিরিক্ত খরচ করতে হবে ৩১ হাজার ২৫০ কোটি রুপী। বাংলাদেশী টাকায় এই অর্থের পরিমাণ প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। গরু পাচার বন্ধের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সন্দেহ ॥ ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং যে কোন মূল্যে গরু পাচার বন্ধে সেদেশের সীমাস্তরক্ষী বাহিনীকে যে নির্দেশ দিয়েছেন, তা আদৌ বাস্তবায়ন করা যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বাহিনীর বর্তমান ও প্রাক্তন অফিসাররা। ভারতের গণমাধ্যম জানিয়েছে, ভারতীয় সীমান্ত বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা মনে করেন, সীমান্তে গরু পাচার পুরোপুরি বন্ধ করা বাস্তবে খুবই কঠিন। বিএসএফের সাবেক কর্মকর্তা সলিল কুমার মিত্র বলেছেন, গরু পাচার সম্পূর্ণ বন্ধ করার ক্ষেত্রে বিএসএফের দায়িত্বটা অনেকটাই সীমিত। কারণ সীমান্ত দিয়ে যে গরু পাচার হয় সেগুলো পশ্চিমবঙ্গের নয়। মূলত আনা হয় পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ থেকে। এই যে শয়ে শয়ে কিলোমিটার ট্রাকে চাপিয়ে গরু নিয়ে আসা হয়, সেই রাস্তায় তো পুলিশ, শুল্ক বিভাগ, এরাও থাকে। তারা যদি সঠিকভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করে তাহলে তো গরুগুলো সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছতেই পারে না। বিএসএফ’র অনেক অফিসারই মনে করেন, পাচার রোখার চেষ্টা না করে বরং ভারত সরকারের উচিত কিভাবে আইন মেনে গরু বাংলাদেশে পাঠানো যায়, সেটা নিয়ে চিন্তা করা। সলিল কুমার মিত্র আরও বলেছেন, যে গরুগুলো পাচারের জন্য নিয়ে আসা হয় তারা না দেয় দুধ, না পারে চাষের কাজ করতে। তাই মাংস প্রসেসিং কেন্দ্র খোলা যায় কি না সেটা ভেবে দেখা উচিত সরকারের। ভারত সরকারকে বাস্তব চিন্তা করতে হবে, যদিও কয়েকটা রাজনৈতিক দল হয়ত মতাদর্শগতভাবে এটা চাইবে না। প্রতিবছর গরু আসে প্রায় ২০ লাখ ॥ প্রতিবছর ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু আসে প্রায় ২০ লাখ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী গত বছর ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু এসেছে ২০ লাখ ৪৮৩টি। প্রতিটি গরু বাংলাদেশে আসার পর কাস্টম ডিউটি দিতে হয় ৫০০ টাকা। ভারতের ব্যবসায়ীদের কাছে গরু রফতানি নিষিদ্ধ হলেও বাংলাদেশে গরু আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা নেই। দেশের ৭টি শুল্ক স্টেশনে গরুর জন্য আলাদা করিডর রাখা হয়েছে। অপরদিকে দেশে গরুর সংখ্যা প্রায় পৌনে তিন কোটি, যা দেশের গরুর মাংসের চাহিদার প্রায় ৮০ শতাংশই পূরণ করে। দেশে মাংস উৎপাদন হয় ২৭ লাখ টন। গরুর মাংস এই ২৭ লাখ টনের মাত্র ১০ শতাংশ। বিশ্বখাদ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের গড় মাংস খাওয়ার চাহিদা বছরে ৮০ কেজি। এই হিসেবে বাংলাদেশ মাংস খাওয়ার দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশে বছরে প্রতিটি মানুষের গড় মাংস খাওয়ার পরিমাণ মাত্র ৮ কেজি। গরু সরবরাহ কমেছে ॥ দেশের বিভিন্ন রুট দিয়ে ভারত থেকে গরু আনা হয়। এসব রুটের মধ্যে রয়েছে যশোরের বেনাপোল, রাজশাহীর চারঘাট, সাতক্ষীরা, নওগাঁ সীমান্ত। তবে সব সীমান্ত দিয়েই ভারতীয় গরু আমদানি অস্বাভাবিক কমেছে। আর গরু কম আসায় এ থেকে সরকারের রাজস্বও কমে গেছে। ছোট হয়ে আসছে ভারতীয় গরু কেনাবেচার উদ্দেশ্যে গড়ে ওঠা সীমান্তবর্তী হাটগুলোর কার্যক্রম। যশোরের পুটখালী করিডরে গরু প্রবেশ কমে আসায় সেখানে প্রতিমাসে রাজস্ব আদায় হতো আগে ৫ কোটি টাকা। আর এখন প্রতিমাসে রাজস্ব আদায় হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা। সাতক্ষীরায় তিন মাসের ব্যবধানে এখানকার সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু আমদানি কমেছে। এদিকে নওগাঁ দিয়ে ভারতীয় গরু প্রবেশের অন্যতম রুট সাপাহার। সেখানেও গরু প্রবেশ কমেছে। গরুর মাংস রফতানিতে শীর্ষে ভারত ॥ বাংলাদেশে গরু সরবরাহ বন্ধ করতে চাইলেও ভারতই এখন বিশ্বের শীর্ষ গরুর মাংস রফতানিকারক দেশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, ব্রাজিলকে হটিয়ে বিশ্বের শীর্ষ গরুর মাংস রফতানিকারক দেশ এখন ভারত। তেল রাজস্ব কমায় ও মুদ্রার দুর্বলতার কারণে রাশিয়াসহ তেলনির্ভর বেশ কয়েকটি দেশে গরুর মাংস আমদানি কমেছে। তবে ভারত থেকে রফতানি সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। অন্যদিকে ব্রাজিল, উরুগুয়ে ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে কমলেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও প্যারাগুয়ে থেকে রফতানি কিছুটা বেড়েছে। রাশিয়ার বাজার ভারতের গরুর মাংসের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। এতে চলতি অর্থবছরে ভারতের এ পণ্য রফতানি বৃদ্ধির ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি বছর বিশ্বে গরুর মাংস রফতানি রেকর্ড ১০ দশমিক ২ মিলিয়ন টনে দাঁড়াবে। ভারতের এগ্রিকালচার এ্যান্ড প্রসেসড ফুড প্রডাক্টস এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এপিইডিএ) তথ্য অনুসারে, মূল্যের দিক থেকে কৃষি খাদ্য ক্যাটাগরিতে দেশটির সবচেয়ে বেশি রফতানি করা ভোগ্যপণ্য হিসেবে এরই মধ্যে বাসমতী চালকে হটিয়ে জায়গা করে নিয়েছে গরুর মাংস। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১১ মাসে ভারতের মোট গরুর মাংস রফতানি দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৫৬ হাজার ৭৯৪ টনে, যার মূল্য ২৬ হাজার ৯৬৫ কোটি রুপী। অল ইন্ডিয়া মিট এ্যান্ড লাইভস্টক এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডিবি সাবহারওয়াল জানিয়েছেন, ব্রাজিলে মুদ্রার অবমূল্যায়ন ও ভিয়েতনাম থেকে হংকংয়ে গরুর মাংস পুনরায় রফতানি নিয়ে সৃষ্ট সমস্যা ভারতের রফতানিতে প্রভাব ফেলেছে। ভারতের গরুর মাংসের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ভিয়েতনাম, আর ব্রাজিল দেশটির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। উত্তর প্রদেশ থেকে ভারতের সবচেয়ে বেশি গরুর মাংস রফতানি হয়। বেনাপোল থেকে জনকণ্ঠের নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল হোসেন জানান, ভারতের বিএসএফ সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করায় যশোরের দেশের বৃহত্তম পশু শুল্ক করিডর বেনাপোলের পুটখালী গরু করিডর এখন গরুশূন্য। ক’দিন আগেও এখানে ছিল জমজমাট গরুর হাট। ভারতীয় কেন্দ্র সরকার বাংলাদেশে গরু পাচার বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ায় পশুশুল্ক কড়িডরে গরু আসা কমে গেছে। বেনাপোলের পুটখালী পশু শুল্ক কড়িডরের লিজ গ্রহীতা নাসিম রেজা পিন্টু জানান, দেশের সবচেয়ে বড় গরু করিডর পুটখালী। প্রতিমাসে এ করিডরে ভারত থেকে গরু আসত প্রায় এক লাখ। এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় হতো মাসে প্রায় ৫ কোটি টাকা। বর্তমানে বিএসএফ গরু আসা বন্ধ করে দেয়ায় এখন মাসে গরু আসে এক থেকে সর্বোচ্চ দেড় হাজার। আর রাজস্ব আদায় ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা। গরু না আসার কারণে ব্যবসায়িরা এক দিকে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্যদিকে বেকার হয়েছে হাজার রাখালরা। গরু কেনার জন্য ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীদের হাতে অগ্রিম দেয়া প্রায় ১০০ কোটি টাকা আটকা পড়েছে এদেশের গরু ব্যবসায়ীদের। এ কারণে নিঃস্ব হতে বসেছে দেশীয় গরু ব্যবসায়িরা। এ টাকা আদৌ তারা ফেরত পাবে কিনা তা জানে না গরু ব্যবসায়ীরা। শার্শার নাভারন শুল্ক আদায় গরু করিডরের রাজস্ব কর্মকতা আব্দুস সালাম জানান গত ৩ মাস ভারত থেকে গরু আসা অনেক কমে গেছে। ফলে গরু থেকে পাওয়া প্রতি মাসে আদায়কৃত রাজস্ব ৫ কোটি টাকা থেকে কমে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। বিএসএফের চোখ ফাঁকি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের গরু ব্যবসায়ীরা অল্প যে কয়েকটি গরু বাংলাদেশের বাজারে আনছেন তার দামও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। একারণে স্থানীয় বাজারে বেড়ে গেছে গরুর মাংসের দাম। তবে একটি সূত্র জানায়, ভারতীয় সরকার একটু নমনীয় হলেই গরু আমদানি শুরু হবে।
×