ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সহজ জয়ে পাঁচ থেকে দুইয়ে শেখ রাসেল

প্রকাশিত: ০৫:২১, ১৮ মে ২০১৫

সহজ জয়ে পাঁচ থেকে দুইয়ে  শেখ রাসেল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আশি থেকে নব্বই দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ঢাকার ফুটবলে ‘ত্রিশক্তি’ হিসেবে সুপরিচিত ছিল মোহামেডান, আবাহনী এবং ব্রাদার্স। রবিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ‘মান্যবর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ’ ফুটবলে অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম খেলায় চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডকে অনায়াসে ২-০ গোলে হারিয়ে এই ত্রিশক্তিকে একসঙ্গে টপকে পয়েন্ট টেবিলের পাঁচ থেকে দুইয়ে উঠে এলো শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেড। ম্যাচের প্রথমার্ধেই বিজয়ী দল সব গোল করে। মিঠুন চৌধুরী এবং বোজান প্যাট্রিক জয়ী দলের পক্ষে একটি করে গোল করেন। ৯ ম্যাচে এটা ২০১২-১৩ মৌসুমের লীগ চ্যাম্পিয়ন ‘বেঙ্গল ব্লুজ’ খ্যাত শেখ রাসেলের ৬ষ্ঠ জয়। ১৯ পয়েন্ট নিয়ে তারা যথাক্রমে ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেড, ঢাকা আবাহনী লিমিটেড এবং মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডকে অতিক্রম করে পঞ্চম থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে উন্নীত হলো দ্রাগান দুকানোভিচের শিষ্যরা। সেই সঙ্গে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখল তারা। এক ম্যাচ আগেই রাসেল ২-১ গোলে হারিয়েছিল ফেনী সকার ক্লাবকে। পক্ষান্তরে ৯ ম্যাচে এটা চট্টগ্রাম আবাহনীর ৬ষ্ঠ হার। পয়েন্ট ৫। ১০ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে আছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেড। ম্যাচ শুরুর দ্বিতীয় মিনিটেই গোল করার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করে শেখ রাসেল। ফ্রি কিকে বক্সে বল পেয়েও বাইরে মারেন নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড কিংসলে চিগোজি। এর দুই মিনিট পর বা প্রান্ত থেকে রাসেলের ডিফেন্ডার ওয়ালী ফয়সালের পাসে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে শট নেন সতীর্থ মিডফিল্ডার হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস। কিন্ত তার শট আটকে দেন প্রতিপক্ষ দলের গোলরক্ষক সোহাগ হোসেন। ৬ মিনিটে বক্সের দুই গজ দূর থেকে পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন রাসেলের অধিনায়ক ফরোয়ার্ড মিঠুন চৌধুরী। কিন্ত গোলরক্ষক সোহাগ হোসেনের বল গ্রিপে নিতে কোন অসুবিধা হয়নি। ২১ মিনিটে গোলপ্রচেষ্টা আলোর মুখ দেখে শেখ রাসেলের। ডিফেন্ডার তপু বর্মণের ক্রসে চলন্ত বলে চমৎকারভাবে শট নিয়ে চট্টগ্রাম আবাহনীর জালে পাঠান মিঠুন (১-০)। লীগে এটা তার ব্যক্তিগত প্রথম গোল। ৩৯ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ২০১২-১৩ মৌসুমের ট্রেবল শিরোপাধারীরা। লেফটব্যাক ওয়ালী ফয়সালের ফ্রি কিক থেকে বক্সে পেয়ে ক্যামেরুনের ফরোয়ার্ড পল এমিল শট নিলে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বল ফেরত আসে। ফিরতি বলে তীব্র শটে বসনিয়ান ডিফেন্ডার বোজান প্যাট্রিক গোল করে আবারও আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন নিজ দল রাসেলকে (২-০)। বিরতির পর উভয়পক্ষ আর কোন গোল করতে পারেনি। রেফারি জসিম উদ্দিন খেলা শেষের বাঁশি বাজালে পূর্ণ তিন পয়েন্ট এবং পাঁচ থেকে দুইয়ে উঠার অনাবিল চিত্তসুখ নিয়ে মাঠ ছাড়ে শেখ রাসেল শিবির। সোমবার এবং মঙ্গলবার এই দুই দিন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রিমিয়ার লীগের কোন ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে না। কয়েক দিন আগেও পয়েন্ট টেবিলে শেখ রাসেল খুব একটা ভাল অবস্থায় ছিল না। প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে জাতীয় দলের আট ফুটবলারকে দলে ভেড়ানো দলের এমন অবস্থা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিল না দলটির সমর্থকরা। দলের বিদেশী (মন্টেনিগ্রোর) কোচ দ্রাগান দুকোনোভিচও চেষ্টা করে পারছিলেন না পয়েন্ট টেবিলে দলকে উপরের দিকে উঠাতে। দুই জায়ান্ট আবাহনী-মোহামেডানকে হারিয়ে প্রশংসা কুড়ালেও নিচের দল ফরাশগঞ্জের সঙ্গে ড্র করে সমালোচিত হয় ক্লাবটি। তারপর তো টানা দুই ম্যাচে ফেনী সকার ও চট্টগ্রাম আবাহনীকে হারিয়ে ‘আপাতত’ আবারও ভাল অবস্থানে উঠে আসতে সক্ষম হয়েছে দলটি।
×