ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সোনারগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাড়ি ভাংচুর, লুট আহত ৪০

প্রকাশিত: ০৭:৫৯, ১৭ মে ২০১৫

সোনারগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাড়ি ভাংচুর, লুট আহত ৪০

নিজস্ব সংবাদদাতা, সিদ্ধিরগঞ্জ, না’গঞ্জ, ১৬ মে ॥ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে কয়েক দফায় ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় উভয়পক্ষের প্রায় অর্ধশত বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় অতিরিক্ত র‌্যাব, পুলিশ ও আর্মড পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে বারদী ইউনিয়নের দৌলরদী গ্রামের একটি বিয়ে বাড়িতে দাওয়াত খেতে গিয়ে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে একই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল হকের সঙ্গে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেনের বাকবিত-া হয়। এ ঘটনা নিয়ে পরে দুই গ্রুপের লোকজনের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে মারামারি শুরু হলে বিয়ে বাড়িতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় বারদী বাজারে চারটি দোকান ভাংচুর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ হামলার ঘটনায় উভয় গ্রুপের বেশ কয়েকজন আহত হয়। শুক্রবারের ওই ঘটনার জের ধরে শনিবার সকালে নতুন করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। সকাল থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ দুপুর পর্যন্ত চলে। এ সময় চেয়ারম্যান জহির ও কামাল গ্রুপের শতশত লোক টেঁটা, শাবল, বল্লম, রামদা, লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় গ্রুপের পাল্টাপাল্টি হামলায় দৌলরদী, সেনপাড়া, চৌধুরীপাড়া, জ্যোতিবসুর বাড়ি ও বারদী বাজার এলাকায় প্রায় অর্ধশত বাড়িঘরে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলাকারীরা বাড়িঘর ভাংচুর করে ঘরে থাকা জিনিসপত্র, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। সংঘর্ষে কামাল মেম্বার, দাইয়ান মেম্বার, ইব্রাহিম ওরফে ইবু, অহিদুল, জুয়েল, আব্দুল আলী, আছিয়া, রহিমা, সোহেল সরকার, জাকির সরকার, মনু, সোলায়মান, জনি, লিলি, বিল্লাল, সৈকত ও ইনিসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছে। বারদী চেয়ারম্যান জহিরুল হক জানান, কামাল মেম্বার তার লোকজন সঙ্গে নিয়ে বিয়ে প- করার জন্য হামলা চালায়। এ সময় বরযাত্রীদের তারা লাঞ্ছিত করে। আমি এতে বাধা দেয়ায় তারা আমার ওপর চড়াও হয়। পরে শনিবার সকালে ইব্রাহিম ইবুর নেতৃত্বে কয়েক শ’ লোক আমার সমর্থকদের প্রায় বিশটি বাড়ি হামলা ও লুটপাট চালায়। এতে ২০/২৫ জন আহত হয়। এদিকে ইউপি সদস্য কামাল হোসেন জানান, আগামী ইউপি নির্বাচনে আমি চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেয়ায় আমাকে হেয় করার জন্য চেয়ারম্যান জহির ও দাইয়ান মেম্বার তাদের লোকজন নিয়ে এ হামলা চালিয়েছে ও বাড়িঘর ভাংচুর করেছে । সোনারগাঁও ইউএনও আবু নাছের ভূঁঞা জানান, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বাড়ি ভাংচুর হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বারদী এলাকায় অতিরিক্ত র‌্যাব, এক প্লাটুন পুলিশ ও আর্মড পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
×