ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যুদ্ধাপরাধী বিচার

হাসান আলী, মাহিদুর ও চুটুর মামলার রায় শীঘ্রই

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৭ মে ২০১৫

হাসান আলী, মাহিদুর ও চুটুর মামলার রায় শীঘ্রই

বিকাশ দত্ত ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দুটি ট্রাইব্যুনালে বিচারিক কার্যক্রম শেষে কিশোরগঞ্জের রাজাকার কমান্ডার পলাতক সৈয়দ মোঃ হাসান আলী ওরফে হাছেন আলীর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের রাজাকার কমান্ডার মাহিদুর রহমান ও আফসার হোসেন চুটুর মামলার রায় ঘোষণার জন্য সিএভি রাখা হয়েছে। প্রসিকিউশন আশা করছেন শীঘ্রই এ দুটি মামলার রায় ঘোষণা করা হতে পারে। উল্লেখ্য ২০ এপ্রিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১, কিশোরগঞ্জের রাজাকার কমান্ডার পলাতক সৈয়দ মোঃ হাসান আলী ওরফে হাছেন আলীর পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণার জন্য সিএভি রাখেন। অন্যদিকে, তার দুইদিন পর ২২ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের রাজাকার কমান্ডার মাহিদুর রহমান ও আফসার হোসেন চুটুর মামলার সকল কার্যক্রম শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়েছে। অর্থাৎ দুটি মামলায় তিন জনের বিরুদ্ধে যে কোন দিন রায় দেয়া হবে। এদিকে প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ জনকণ্ঠকে বলেছেন, আমরা মনে করি, অতি সত্বর এই তিন জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণা করবেন। ট্রাইব্যুনাল যখন উপযুক্ত মনে করবেন তখনই তারা রায় প্রদান করবেন। তবে আমার ধারণা সত্বর এ রায় হতে পারে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত কিশোরগঞ্জের রাজাকার কমান্ডার পলাতক সৈয়দ মোঃ হাসান আলী ওরফে হাছেন আলীর পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তিতর্ক শেষ হয় ২০ এপ্রিল। সেদিনই রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়েছে। অর্থাৎ যে কোন দিন রায় ঘোষণা করা হবে। চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলাটি রয়েছে। এ ট্রাইব্যুনালে অন্য দুই সদস্য আছেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক। এদিকে প্রসিকিউশন পক্ষের প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী জনকণ্ঠকে বলেছেন, ‘হাসান আলী’র বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। আশা করছি তার সর্বোচ্চ শাস্তি হবে। হাসান আলীর পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আবদুস শুকুর বলেছেন, হাসান আলীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন কোন অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। আমাদের প্রত্যাশা, সব অভিযোগ থেকে খালাস পাবেন হাসান আলী। কিশোরগঞ্জের রাজাকার কমান্ডার হাসান আলীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয় ২০১৩ সালের ৬ জুন। তদন্ত শেষ হয় ২০১৪ সালের ২৯ জুন। ফরমাল চার্জ দাখিল করা হয় ২০১৪ সালের ২২ আগস্ট। একই বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনাল ডিফেন্স পক্ষের আইনজীবী নিয়োগ করা হয়। ২০১৪ সালের ২২ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের উপর শুনানি শুরু হয়। একই বছরের ৭ ডিসেম্বর থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয় ২০১৫ সালের ৩০ মার্চ। চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল যুক্তিতর্ক শুরু হয়। আর শেষ হয় ২০ এপ্রিল। যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণার জন্য সিএভি রাখা হয়। হাসান আলীর বিরুদ্ধে মোট ৬টি অভিযোগ গঠন করা হয়। মাহিদুর চুটু ॥ অন্যদিকে, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত গ্রেফতারকৃত চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের রাজাকার কমান্ডার মাহিদুর রহমান ও আফসার হোসেন চুটুর মামলার সকল কার্যক্রম শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়েছে। অর্থাৎ যে কোন দিন রায় ঘোষণা করা হবে। চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীনের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ মামলাটি রয়েছে। ট্রাইব্যুনাল অন্য দুই সদস্য রয়েছেন বিচারপতি মোঃ মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলাম। ২২ এপ্রিল রাজাকার কমান্ডার মাহিদুর রহমান ও আফসার হোসেন চুটুর মামলায় সর্বশেষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ ও প্রসিকিউটর সাহিদুর রহমান। অন্যদিকে, আসামিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন এ্যাডভোকেট আব্দুস সুবহান তরফদার ও আব্দুস সাত্তার পালোয়ান। যুক্তিতর্ক শেষে ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ সাংবাদিকদের বলেন, দুই আসামির বিরদ্ধে আনা অভিযোগ প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। তাই তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- কামনা করছি। অপরদিকে আসামিপক্ষে আইনজীবী আব্দুস সুবহান তরফদার বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে পারেনি। তাই তারা খালাস পাবেন।
×