ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

শিল্পকলায় ছাপচিত্রের বহুমাত্রিক উপস্থাপনা ‘শেষ থেকে শুরু’

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১৭ মে ২০১৫

শিল্পকলায় ছাপচিত্রের বহুমাত্রিক উপস্থাপনা ‘শেষ থেকে শুরু’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মিশমিশে কালো জমিনে আবৃত চিত্রপট। প্রেক্ষাপটের আশপাশে দৃশ্যমান সাদা রেখায় চিত্রিত গাছের তিনটি পাতা। আর ক্যানভাসের ঠিক মাঝখানে উপস্থাপিত হয়েছে একটি বিড়াল। লেজ বাঁকিয়ে হাঁটু মুড়ে বসে বিশেষ ভঙ্গিমায় তীক্ষè দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে বিড়ালটি। ছাপচিত্রের লিথোগ্রাফি মাধ্যমে চিত্রিত বিড়াল শিরোনামের এই ছবিটি এঁকেছেন প্রয়াত বরেণ্য শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী। এই চিত্রকর্মটি এখন শোভা পাচ্ছে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায়। এখানে এখন শোভা পাচ্ছে ছাপচিত্রের অনন্য সম্ভার। শিল্পরসিকদের জন্য সৃষ্টি হয়েছে দেশের পথিকৃৎ শিল্পী থেকে শুরু করে নবীন-প্রবীণ কিংবা সমকালীন শিল্পীদের ছাপচিত্র অবলোকনের অবারিত সুযোগ। ছাপচিত্রের বহুমাত্রিক উদ্্যাপনের এই প্রদর্শনীর শিরোনাম ‘শেষ থেকে শুরু।’ গুরুশিল্পীরা কাজ করেছেন আর তার ছায়াতলে দীক্ষিত হয়েছে নবীন শিল্পীরা। তাই গুরুর কাজের শেষ রশ্মিটুকু নিয়ে আবার নতুন দিনের আলো জ্বালিয়েছে নবীন প্রজন্মের শিল্পীরা। এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এমন নামকরণ হয়েছে প্রদর্শনীর। যৌথভাবে এ ছাপাই ছবির প্রদর্শনের আয়োজন করেছে শূন্য আর্ট স্পেস ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। শিল্পকলা একাডেমির সংগ্রহশালা ও ব্যক্তিগত সংগ্রহের শিল্পকর্ম দিয়ে সাজানো হয়েছে প্রদর্শনী। শনিবার দুপুরে শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় চিত্রশালায় পক্ষকালব্যাপী প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বরেণ্য শিল্পী অধ্যাপক রফিকুন নবী। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্পেন প্রবাসী খ্যাতিমান চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম ও শিল্পসমালোচক মইনউদ্দীন খালেদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন শূন্য আর্ট স্পেসের প্রধান নির্বাহী জাফর ইকবাল। শূন্য আর্ট স্পেস দেশের বিভিন্ন সময়ে চিত্রিত ছাপচিত্রের অনুসন্ধান করে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ১৩০ শিল্পীর দুই শতাধিক চিত্রকর্মের খোঁজ পেয়েছে। সেখান থেকে বাছাই করে ৯৫টি ছাপচিত্র নিয়ে সাজানো হয়েছে প্রথম পর্বের প্রদর্শনী। পরবর্তীতে সব কাজ পর্যায়ক্রমে প্রদর্শিত হবে এ আয়োজনে। প্রদর্শিত ছাপচিত্রগুলো প্রধানত ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে ধার করা। শিল্পকলা একাডেমির সংগ্রহেরও অনেকাংশ এতে যুক্ত হয়েছে। বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন রুচির সংগ্রাহকের কাজের উপস্থাপনের ফলে দেশের ছাপচিত্রের বৈচিত্র্যময় বিকাশের ধারা এ প্রদর্শনীতে পাঠ করা সম্ভব। তবে কোন কেনাবেচার হিসাব নেই প্রদর্শনীতে। শুধুই ছাপাই ছবির বৈচিত্র্যের রস আস্বাদন প্রদর্শনীর উদ্দেশ্য। ছাপচিত্র বা প্রিন্ট মেকিংয়ের মর্ম উপলব্ধির জন্য অনুষ্ঠিত হবে সেমিনার। দেশী-বিদেশী তাত্ত্বিক ও শিল্পরসিকদের অংশগ্রহণে বিশ্লেষিত হবে ছাপচিত্রের নান্দনিক ও সামাজিক গুরুত্ব। চিত্রশালার দেয়ালজুড়ে শোভা পাচ্ছে নানা বিষয়ের ওপর চিত্রি ছাপাই ছবির সম্ভার। সেসব ছবিতে ছবিতে ধরা দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ কিংবা স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে যাপিত জীবন, নারীর সৌন্দর্য, প্রকৃতির রূপময়তা, নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি, আবহ বাংলার এতিহ্যসহ রকমারি বিষয়। মোহাম্মদ কিবরিয়া, কামরুল হাসান, আমিনুল ইসলাম, মুর্তজা বশীর, আবদুর রাজ্জাক, কাইয়ুম চৌধুরী, রশীদ চৌধুরী, রফিকুন নবী, শাহাবুদ্দিন আহমেদ, মনিরুল ইসলাম, মাহমুদুল হক, শহিদ কবীর, আবুল বারক্্ আলভী, রোকেয়া সুলতানা, রফি হক, প্রশান্ত কর্মকার বুদ্ধ, রশীদ আমীন, আনিসুজ্জামান, নগরবাসী বর্মণ, এইচ ঢালী তমাল, ইকবাল বাহার চৌধুরীসহ আরও অনেকের ছাপচিত্রের দেখা সুযোগ মিলছে এই প্রদর্শনীতে। পক্ষকালব্যাপী প্রদর্শনী চলবে ৩০ মে পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা এবং শুক্রবার বেলা ৩টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার প্রবর্তন ॥ বাংলা সাহিত্যের এক ধ্রুবতারা হুমায়ূন আহমেদ। সরল রেখার মতো সহজ ভাষার কারণে এখনও পর্যন্ত দেশের সবচেয়ে জননন্দিত কথাশিল্পী। আপন দ্যুতিতে উদ্ভাসিত বাংলা সাহিত্যের এই বরপুত্রের নামে পুরস্কার প্রবর্তন করলো এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন। দেশের নবীন-প্রবীণ কথাশিল্পীদের সৃজনশীলতার উৎসাহ যোগাতে প্রবর্তন করা হলো ‘এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার’। পুরস্কারটি প্রদান করা হবে দুইটি শাখায়। কথাশিল্পে সার্বিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পাঁচ লাখ টাকা অর্থমূল্যের একটি পুরস্কার দেয়া হবে। এ পুরস্কারের ক্ষেত্রে কোন বয়সসীমা নেই। আর অনুর্ধ ৩৫ বছর বয়স্ক লেখককে নবীন সাহিত্য শ্রেণীতে দেয়া হবে আরেকটি পুরস্কার। এর অর্থমূল্য হবে এক লাখ টাকা। হুুমায়ূন আহমেদের জন্মদিনকে সামনে রেখে প্রতিবছর ১২ নবেম্বর এই পুরস্কার প্রদান করা হবে। চলতি বছর থেকেই এই পুরস্কার প্রদান করা হবে। শনিবার বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান স্মৃতি সেমিনার কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই পুরস্কার প্রবর্তনের ঘোষণা দেন পাক্ষিক অন্যদিন-এর সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এস কে সুর চৌধুরী। অনুষ্ঠানের সূচনা হয় এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোহাম্মদ হায়দায় আলী মিয়া ও অন্যদিন সম্পাদক মাজহারুল ইসলামের মধ্যে পুরস্কার সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে। ভিনিতা করিমের চিত্রপ্রদর্শনী ‘রিভার স্টোরিজ’ ॥ শনিবার গুলশানের বেঙ্গল আর্ট লাউঞ্জে শুরু হলো শিল্পী ভিনিতা করিমের ‘রিভার স্টোরিজ’ শীর্ষক ২৩তম একক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী। ভিনিতা করিম ভারতীয় বংশোদ্ভূত। যিনি বৈবাহিক সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক। শিল্পী ভিনিতা জন্মেছেন মিয়ানমারে। পড়াশোনা করেছেন সুইডেনে। আর চারুকলায় মাস্টার্স করেছেন ফিলিপিন্সে। কান পেতে রই পূর্তি উৎসব ॥ দেশের প্রথম মানসিক সহায়তা হেল্পলাইন ‘কান পেতে রই’। সংস্থাটি পূর্ণ করল প্রতিষ্ঠার দুই বছর। শনিবার বিকেলে টক শো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির দুই বছর পূর্তি উৎসব উদ্্যাপিত হলো। সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারে গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান লিমনায়তনে আয়োাজিত উসবের শুরুতেই ছিল ‘টক শো’। এতে অতিথি হিসেবে ছিলেন নন্দিত কথাসাহিত্যিক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, এভারেস্ট বিজয়ী নিশাত মজুমদার, নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা রেদওয়ান রনি ও সংস্থার স্বেচ্ছাসেবক সমন্বয়ক অরুণ দাস। টকশো পর্বের সঞ্চালনা করেন এলিটা করিম। প্রকাশিত হল ত্রৈমাসিক পত্রিকা ‘বিজ্ঞানের আনন্দ’ ॥ কবি, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক মাইনুল শাহিদের সম্পাদনায় বাংলাদেশ সাইন্স ফিকশন সোসাইটি প্রথমবারের মতো প্রকাশ করল সাইন্স ফিকশনভিত্তিক ত্রৈমাসিক পত্রিকা ‘বিজ্ঞান আনন্দ’। শনিবার সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে পত্রিকাটির মোড়ক উন্মোচন করেন বিশিষ্ট বিজ্ঞান লেখক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও মনোবিজ্ঞানী মোহিত কামাল, অধ্যাপক ইয়াসমিন হক, কার্টুনিস্ট আহসান হাবীব, বিজ্ঞান লেখক মোস্তাক আহমেদ, পত্রিকাটির সম্পাদক মাইনুল শাহিদ ও সহযোগী সম্পাদক শাহাদাত হোসেন। মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, আমি প্রতিদিনই ভাল কিছু পরিকল্পনার কথা শুনি। ভাল লাগে। এসব পরিকল্পনা খুব সময়েই তা বাস্তবে রূপ নেয়।
×