ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বেজিংয়ে চীনা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির বৈঠক

সীমান্ত সমস্যা সমাধান ॥ চীন-ভারত মতৈক্য

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১৬ মে ২০১৫

সীমান্ত সমস্যা সমাধান ॥ চীন-ভারত মতৈক্য

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, চীনা নেতাদের সঙ্গে তার স্বচ্ছ, গঠনমূলক ও বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। উভয়পক্ষ সীমান্ত সমস্যার এক ন্যায্য যুক্তিসঙ্গত ও পারস্পরিকভাবে গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে বের করতে একমত হয়েছে। তিনি শুক্রবার বেজিংয়ে চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে আলোচনার পর মিডিয়ার উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন। খবর হিন্দু ও হিন্দুস্তান টাইমস অনলাইনের। মোদি বলেন, লি ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি বলেন, আমরা অর্থনৈতিক অংশীদারীর খুবই উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছি। মোদি বলেন, প্রেসিডেন্ট শি ও প্রধানমন্ত্রী লি আমাদের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যিক ঘাটতি নিয়ে আমার উত্থাপিত সুনির্দিষ্ট উদ্বেগের প্রতি ভাল সাড়া দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, চেংদু ও চেন্নাইয়ে কনস্যুলেট খোলার জন্য তাদের সিদ্ধান্ত তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সম্প্রসারণ করতে ক্রমবর্ধমান পারস্পরিক আস্থা ও অভিন্ন প্রতিশ্রুতিই প্রতিফলিত হয়। মোদি বলেন, এটি খুবই হিতকর ও ইতিবাচক সফর হয়েছে। আমি প্রেসিডেন্ট শি ও প্রধানমন্ত্রী লি’র সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছি। তিনি ভারত ও চীনের সম্পর্ককে প্রভাবিত করে এমন বিরোধপূর্ণ ইস্যুগুলো নিরসনে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে চীনা নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে দুটি দেশ বিশ্বে বৃহত্তর ভূমিকা পালন করতে পারে। মোদি সাম্প্রতিক দশকগুলোর ভারত-চীন সম্পর্ককে ‘জটিল’ বলে অভিহিত করেন; কিন্তু তিনি বলেন, উভয়পক্ষ এশিয়ার সবচেয়ে বড় দুটি দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক নতুন দিক উন্মোচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মোদি জানান, দু’পক্ষ তাদের দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধের এক ন্যায্য যুক্তিসঙ্গত ও পারস্পরিকভাবে গ্রহণযোগ্য সমাধানের উপায় খুঁজে বের করতে রাজি হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা উভয়পক্ষই সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার সব চেষ্টা চালাতে আমাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছি। তিনি ভিসা নীতি ও সীমান্তবর্তী নদনদী সম্পর্কিত ইস্যুগুলোর নিরসনে দৃশ্যমান অগ্রগতি কামনা করেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে মোদির পাশে তার চীনা প্রতিপক্ষ লি কেকিয়াংও উপস্থিত ছিলেন। মোদি জানান, তিনি সীমান্ত ইস্যুতে ভারতের উদ্বেগের প্রতি চীনাদের সংবেদনশীলতা এবং আস্থা গড়ে তোলার চেষ্টায় তাদের উৎসাহ দেখতে পান। তিনি বলেন, আমি এ প্রসঙ্গে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখাকে স্পষ্ট করার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করি। আমি আমাদের আঞ্চলিক বিষয়াদি নিয়েও আলোচনা করেছি। তিনি বলেন, উভয়পক্ষকে একে অপরের স্বার্থের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া, বিশ্বাস ও আস্থাবোধ শক্তিশালী করা, আমাদের মতপার্থক্য পরিপক্বতার সঙ্গে নিরসন করা এবং অমীমাংসিত ইস্যুগুলোর সমাধান খুঁজে বের করা উচিত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগের বিষয়টি তাদের আলোচনায় অগ্রাধিকার পায়। কারণ ভারতীয় ও চীনারা একে অপরকে বোঝা তো দূরের কথা, পরস্পরকে ভালভাবে জানেও না। তিনি বলেন, আমরা সম্পর্ককে জাতীয় রাজধানীভিত্তিক সরকারগুলোর সঙ্কীর্ণ গ-ি থেকে রাজ্য, শহর ও আমাদের জনগণের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি সুনির্দিষ্ট রেলওয়ে প্রকল্প এবং গুজরাট ও মহারাষ্ট্রে দুটি চীনা শিল্পপার্ক নির্মাণসহ অর্থনৈতিক সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন। এর আগে চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং বেজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানান। মোদি শহরের কেন্দ্রস্থলে চীনা পার্লামেন্ট ভবন গ্রেট হল অব দ্য পিপলে পৌঁছলে তাকে সামরিক গার্ড অব অনার দেয়া হয়। মোদি গার্ড অব অনার পরিদর্শন করেন। পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) সামরিক বাদক দল তখন ভারতীয় ও চীনা জাতীয় সঙ্গীত বাজিয়ে শোনায়।
×