ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নারায়ণগঞ্জে ৭ খুন

অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দিলেন নজরুলের স্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১২ মে ২০১৫

অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দিলেন নজরুলের স্ত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ১১ মে ॥ নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ৭ খুনের ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলার একটির বাদী নিহত কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী বিউটি সোমবার অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দিয়েছেন। এ মামলার অভিযোগপত্রের ওপর পরবর্তী শুনানি আগামী ৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এইচএম শফিকুল ইসলামের আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানির সময় আদালত প্রাঙ্গণে ২নং ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দা ও নিহত নজরুলের আত্মীয়স্বজনরা মানববন্ধন করেন। সকাল ১০টায় অভিযোগপত্র গঠনের শুনানিতে র‌্যাব-১১’র সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল (অব) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর (অব) আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার (অব) এমএম রানাসহ গ্রেফতারকৃত মোট ৩০ জনকে আদালতে হাজির করা হয়। গত ৮ এপ্রিল ৩৫ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশের ওসি মামুনুর রশীদ ম-ল। মামলার বাদী নিহত আইনজীবী এ্যাডভোকেট চন্দন কুমার সরকারের মেয়ের জামাই ডাঃ বিজয় কুমার পাল শুনানিতে উপস্থিত হতে না পারায় শুনানির পরবর্তী তারিখ ৮ জুন নির্ধারণ করেন বিচারক। ওই দিনই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গঠন হবে, না মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য নির্দেশ দেয়া হবে সে বিষয়ে শুনানি হবে। এদিকে ৭ খুন মামলা অধিকতর তদন্তের দাবিতে নিহতদের পরিবারের সদস্য ও নিহত নজরুল ইসলামের আত্মীয়স্বজন ও ২নং ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দারা আদালত প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করেছেন। তারা বিউটির দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ইয়াছিন মিয়া, হাসমত আলী হাসু, আমিনুল ইসলাম রাজু, আনোয়ার ও ইকবাল হোসেনসহ মোট ১৬ জনকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী এবং একটি মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অভিযোগপত্রে হত্যার অনেক পরিকল্পনাকারীকে বাদ দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে তার দায়ের করা মামলায় একমাত্র নূর হোসেনকে ছাড়া বাকি পাঁচজনকেই বাদ দেয়া হয়েছে। অথচ এরা হত্যাকা-ের দুই মাস আগে নজরুলকে হত্যার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ধাওয়াও করেছিল। তাছাড়া নজরুল হত্যার আগে ইয়াছিন মিয়ার বাড়িতে হত্যার পরিকল্পনার জন্য একটি গোপন বৈঠকও হয়েছিল। ঐ বৈঠকে এজাহারভুক্ত সকল আসামিই উপস্থিত ছিল। তাই আমরা মামলাটি অধিকতর তদন্তের আবেদন জানিয়ে দাখিলকৃত অভিযোগপত্রের ওপর নারাজি প্রদান করেছি। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ৭ খুনের মামলায় গ্রেফতারকৃত যেসব আসামি ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে তারা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত আরও অনেকের নাম প্রকাশ করলেও তাদের নাম অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। যারা হত্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল। এ ধরনের আসামির সংখ্যা প্রায় ১৬ জন। তাই আমরা ওই ১৬ জনকে অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে আদালতে নারাজি দিয়েছি। উল্লেখ্য, গত বছরের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোডের রামাপাড়া থেকে প্যানেল মেয়র কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন, সহযোগী ও যুবলীগ নেতা মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, স্বপনের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর, আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিমকে অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর গত বছরের ৩০ এপ্রিল নজরুলসহ ছয়জনের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীর বন্দরের কলাগাছিয়ার শান্তিনগর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। পরদিন ১ মে সিরাজুল ইসলাম লিটনের লাশ একই স্থান থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
×