ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অনিশ্চয়তায় ইউরোপ যুক্তরাজ্য সম্পর্ক

ক্যামেরনের জয়ে ইইউর উদ্বেগ

প্রকাশিত: ০৭:৩০, ১০ মে ২০১৫

ক্যামেরনের জয়ে ইইউর উদ্বেগ

ডেভিড ক্যামেরনের দ্বিতীয়বারের মতো ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদে থেকে যাওয়ায় তাঁর দল বা দেশ আনন্দিত হোক ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বিষয়টিকে সেভাবে দেখছে না। কনজারভেটিভরা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করায় কিছুটা হলেও উদ্বিগ্ন ইইউ। খবর এএফপি, বিবিসি ও গার্ডিয়ান অনলাইনের। রাজনৈতিক ভূমিকম্প কথাটি ইউরোপের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যম শনিবার যার যার ভাষায় অনুবাদ করে প্রকাশ করে। ফরাসী সংবাদপত্র লা মঁেদর এদিনের শিরোনাম ছিল ক্যামেরনের জন্য জয়, ইউরোপের জন্য উদ্বেগ। কনজারভেটিভ পার্টির জয়ে লন্ডনে এখন উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। কিন্তু একই সঙ্গে দলটির পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ইইউতে যুক্তরাজ্যের সদস্যপদ নিয়ে গণভোটের সম্ভাবনা ভাবিয়ে তুলছে ইউরোপকে। ২০১৭ সালের শেষ নাগাদ এই ভোট হওয়ার কথা। এই ভোট না হওয়া পর্যন্ত ইউরোপে বাণিজ্যিকমহলে উৎকণ্ঠার অবসান হচ্ছে না। যুক্তরাজ্য ইইউর সঙ্গে থাকুক এটি যে সব ব্যবসায়ী নেতাই চান তা নয়। তবে দেশটি ইইউ থেকে বেরিয়ে গেলে বিশ্বে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক কর্মকা-ের কেন্দ্র হিসেবে লন্ডনের যে মর্যাদা রয়েছে সঙ্গত কারণেই সেটি থাকবে না। একই সমস্যা হবে নতুন কোন গণভোটে স্কটল্যান্ড স্বাধীন হয়ে গেলেও। কোন কোন অর্থনীতিবিদের কাছে ইইউ ইস্যুটি সম্প্রতি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল যে তারা আশা করছিলেন, কনজারভেটিভরা ক্ষমতায় এলেও একটি দুর্বল কোয়ালিশন সরকার যদি হয় তবে যুক্তরাজ্য গণভোটে ইইউ থেকে বেরিয়ে যেতে পারবে না। কিন্তু নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের ফলাফল ইইউতে থাকা না থাকার প্রশ্নে ক্যামেরনের একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের হাতকে আরও শক্তিশালী করেছে। নির্বাচনের ফলে কয়েকভাবে ক্যামেরনের অবস্থানকে সুসংহত করেছে। প্রথমত তাঁর ব্যক্তিগত কর্তৃত্ব জোরদার হয়েছে। ফলে তিনি দলের মধ্যে ইউরো বিরোধীদের বাধা সহজেই প্রতিহত করতে পারবেন। দ্বিতীয়ত ইউতে থাকার জন্য যারা অর্থনৈতিক ইস্যুকে সামনে আনতে চান, তাদের তিনি এটা বোঝাতে সক্ষম হবেন যে, অর্থনীতির প্রশ্নে তার দলের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি বৃহত্তর জনগণের সমর্থন রয়েছে। তৃতীয়ত ইউকিপ পার্টি খুব একটা ভাল করতে পারেনি এ কারণে নাইজেল ফারাজের মতো ক্যারিশম্যাটিক ব্যক্তি দলটিকে নেতৃত্ব দিতে পারবেন না। চতুর্থত নির্বাচনে এসএনপির তৃতীয় বৃহত্তম শক্তি হিসেবে উঠে আসাটা। নির্বাচনী মেনিফেস্টো অনুযায়ী ক্যামেরনকে এখন ইউরোপের দেশগুলো ভ্রমণ করতে হবে। যদিও এই সফরগুলো থেকে কার্যকর কোন ফল আশার সম্ভাবনা নেই। তবে ইউরোপের নেতৃবৃন্দকে এতটুুকু জানাতে সক্ষম হবেন যে, যুক্তরাজ্যে ইইউ গণভোট এখন আর কোন কাল্পনিক বিষয় নয়, এটি এক বাস্তবতা, যা ইইউর ভবিষ্যৎ গতিপথকে বদলে দিতে পারে। ক্যামেরন ইইউ চুক্তিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে না পারলেও অভিবাসন নিয়মনীতি বা ভোট দেয়ার অধিকার প্রশ্নে নিজ পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত করতে পারেন। এর আগে হ্যারল্ড উইলসনের সময় ১৯৭৫ সালে একবার গণভোট হয়েছিল। তবে ১৯৭৫ আর ২০১৫ সাল এক কথা নয়। এখন ইউকিপের মতো একটি ইইউ বিরোধী একটি রাজনৈতিক দল রয়েছে। তবে আশার কথা হলো, কনজারভেটিভ, লেবার ও এসএনপির প্রথম সারির নেতৃবৃন্দ ইইউতে থেকে যাওয়ার পক্ষে রয়েছেন। ব্রিটেনের গণমাধ্যমগুলো শনিবার বলছে, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও ক্যামেরনের জন্য সামনে কঠিন সময় আসছে। কারণ স্কটল্যান্ড তার জন্য বড় একটি সমস্যা হয়ে উঠতে পারে। এসএনপি স্কটল্যান্ডের ৫৯টি আসনের মধ্যে পেয়েছে ৫৬টি আসন।
×