ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মিরপুর টেস্ট

বাংলাদেশকে চোখ রাঙাচ্ছে ইনিংস হার!

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৮ মে ২০১৫

বাংলাদেশকে চোখ রাঙাচ্ছে ইনিংস হার!

মিথুন আশরাফ ॥ মিরপুর টেস্টের প্রথম দুইদিনে বাংলাদেশকে খুঁজেই পাওয়া গেল না। একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করল পাকিস্তানই। এখন এমন অবস্থা দাঁড়িয়ে গেছে ইনিংস হারের শঙ্কাতেই পড়ে গেছে বাংলাদেশ! এখনও পাকিস্তান থেকে ৪৫০ রানে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। শাহাদাত না থাকায় হাতে যে আছে ৪ উইকেট, তাতে ২৫১ রান করে আগে ফলোঅন এড়াতে হবে বাংলাদেশকে। যদি তা না করতে পারে মুশফিকবাহিনী, তাহলেই ইনিংস হারের শঙ্কা ঘাড়ে চেপে ধরবে। ইউনুস খানের ১৪৮ রানের সঙ্গে আজহার আলীর (১২৭*) শতকে প্রথমদিনেই রানের চাপে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ৩ উইকেটে ৩২৩ রান করেছিল পাকিস্তান। দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসের খেলা শেষ হলো। আজহার আগেরদিনের সঙ্গে আরও ৯৯ রান যোগ করে ২২৬ রান করলেন। আজহারের প্রথম দ্বিশতকের সঙ্গে আসাদ শফিকের ১০৭ রানে ৮ উইকেটে ৫৫৭ রান করে ইনিংস ঘোষণা করল পাকিস্তান। শেষ ২৭ রানে ৪ উইকেটের পতন ঘটল পাকিস্তানের। বাংলাদেশ পুরো একটি সেশন খেলার সুযোগ পেল। সেশনটিতে বাংলাদেশের ৫ উইকেট পড়ে গেল! তামিম (৪), মুমিনুল (১৩), ইমরুল (৩২), মাহমুদুল্লাহ (২৮), মুশফিককে (১২) হারিয়ে খাদের কিনারাতেই পড়ে গেল বাংলাদেশ। দিন শেষে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে জমা রইল ১০৭/৫। এতটাই খারাপ অবস্থা হয়েছে যে এখন ইনিংস হারই চোখ রাঙ্গাচ্ছে। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো দ্বিশতক করা আজহার আবার এমন কথাই বললেন, যাতে পাকিস্তান যে কতটা বিশ্বাস ফিরে পেয়েছে তাই বোঝা গেছে। আজহার তো আজ তৃতীয়দিনেই বাংলাদেশের ১৫ উইকেট শিকার করে নেয়ার কথা বলছেন! যেখানে শাহাদাত না থাকায় উইকেট হয়ে গেল ১৩টি। কোন সুযোগই পাকিস্তান হাতছাড়া করতে রাজি নয়। যেমনটি টস হেরে আগে ব্যাট করার সুযোগটি হাতছাড়া করেনি। ঠিক তেমনি এখন যে জুনায়েদ, ইমরান, ওয়াহাব, ইয়াসির, হাফিজ মিলে দুর্দান্ত বোলিং করছেন, তাতে বাংলাদেশকে মাঠের বাইরে ‘কথা যুদ্ধে’ও যেন কাবু করতে চাইছেন আজহার। সেই সুযোগটি অবশ্য বাংলাদেশই করে দিয়েছে। খুলনা টেস্টে মায়াবী সময় কেটেছে। প্রথম ইনিংসে ৩৩২ রানে আউট হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৫৫ রান করতেই পাঁচদিন শেষ হয়েছে। মিরপুর টেস্টে এসে সব উধাও হয়ে গেল যেন। সাকিব এখনও ১৪ রানে ব্যাট করছেন। এক সাকিবই এখন ভরসা। কিন্তু তিনি একাই বা কী করতে পারবেন। এর মধ্যে শাহাদাত ব্যাটিং করতে না পারায়, হাতে ৪ উইকেট আছে ধরেই খেলতে হবে। এ ৪ উইকেটের মধ্যে একটি সাকিব। আছেন ব্যাটিংয়ে সৌম্য, শুভগত, তাইজুল ও শহীদ। শেষ দুইজনের কাছ থেকে কিছুই আশা করা যায় না। সাকিবের পর সৌম্য ও শুভগতকে নিয়ে আশা করা যায়। কিন্তু উইকেটে লাইন ও লেন্থ বজায় রেখে বোলিং করা পাকিস্তান বোলাররা কী আজ আরও গতি, গুগলি’র ‘মারপ্যাঁচ’ দেখাবেন না? তা যদি দেখান তাহলে সৌম্য আর শুভগত দলকে কতদূর নিয়ে যেতে পারবেন। সেখানে সাকিব অসহায়ই। এমন অবস্থা দাঁড় হয়েছে, প্রথম ইনিংসে যে বাংলাদেশ বেশিদূর এগিয়ে যেতে পারবে না, তা বোঝাই যাচ্ছে। ফলোঅনেও যে পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি, তার দেখাও যেন দ্বিতীয় দিনেই মিলে গেছে। বাংলাদেশ এখন এগিয়ে গেলে কতদূর যেতে পারবে? ফলোঅন এড়াতে লাগবে ২৫১ রান। তা যে এড়ানো কত কঠিন তা বোঝাই যাচ্ছে। যদি বাংলাদেশ ফলোঅন এড়ানোর কাছাকাছিও যায়, তাহলেও আড়াইশ রানের পার্থক্য থাকবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ যদি শেষপর্যন্ত ফলোঅনে পড়ে, পাকিস্তান যদি আবার বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায়, প্রথম ইনিংসের দশা হয়; তাহলে ইনিংস হারের সম্ভাবনাই বেশি। তখন হিসাব আসবে, কত দিনে মিরপুর টেস্ট শেষ হবে।
×