ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

গ্রেনেড হামলা মামলায় সাক্ষ্য দিলেন ড. হাছান মাহমুদ

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৫ মে ২০১৫

গ্রেনেড হামলা মামলায় সাক্ষ্য দিলেন ড. হাছান মাহমুদ

কোর্ট রিপোর্টার ॥ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিলেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে সোমবার তিনি এ সাক্ষ্য দেন। পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী ওই ট্রাইব্যুনালে ড. হাছান মাহমুদ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তৎকালীন ড্রাইভার আব্দুল মতিনেরও সাক্ষ্য গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনাল। তার সাক্ষ্যগ্রহণের পর আগামী ৫ মে পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি করেন বিচারক। এ নিয়ে মামলাটিতে ১৩০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করল ট্রাইব্যুনাল। এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা ও আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করাই মূল উদ্দেশ্য ছিল উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ গ্রেনেড হামলার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ওই ঘটনায় তাঁর শরীরে আর্জেস গ্রেনেডের অসংখ্য স্পিøন্টার ঢুকে যায়। ঘটনার পর প্রথমে তিনি রাজধানীর শিকদার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে বেলজিয়ামে গিয়ে চিকিৎসা করান। চিকিৎসায় কিছু স্পিøন্টার তাঁর দেহ থেকে বের করা হয়। অসংখ্য স্পিøন্টার এখনও তাঁর শরীরে রয়ে গেছে। যেগুলো বের করতে গেলে নার্ভ কেটে বের করতে হবে, যা করলে তাঁর মৃত্যুও হতে পারে। তাই তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাকি স্পিøন্টার বের না করে তা শরীরে বহন করে চলেছেন। অন্যদিকে ড্রাইভার আব্দুল মতিন বলেন, তিনি ঘটনার সময় শেখ হাসিনার ড্রাইভার হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার দিন তিনি শেখ হাসিনাকে নিয়ে সুধাসদন থেকে গাড়িতে বিকেল চারটা ৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ের উদ্দেশে রওনা হয়ে চারটা ৫৫ মিনিটে পৌঁছান। তাঁর বক্তব্য শেষ হওয়ার পরপরই গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাঁর চার পাশে মানবঢাল তৈরি করে শেখ হাসিনা ট্রাক থেকে নামলে তাঁকে গাড়িতে তুলে দেন। গাড়িতে করে যাওয়ার সময়ও ছয়টি গুলি গাড়িতে লাগে। সাক্ষ্যগ্রহণকালে সাবেক মন্ত্রী জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, হুজি নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ এ মামলায় কারাগারে আটক আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। অন্যদিকে জামিনে থাকা আসামি খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক আইজি আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলার তিন তদন্ত কর্মকর্তা সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডির সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম আদালতে হাজির হন। উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভায় গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম মোঃ জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জনের নির্মম মৃত্যু হয়। গ্রেনেডের স্পিøন্টারের আঘাতে আহত হন কয়েক শতাধিক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও শ্রবণশক্তি হারান।
×