ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিটিসিএলের দেড় হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে অবৈধ ভিওআইপি চক্র

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ৫ মে ২০১৫

বিটিসিএলের দেড় হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে অবৈধ ভিওআইপি চক্র

জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ অবৈধ ভিওআইপি চক্রের হোতারা গত বছর বিটিসিএলের দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি বিদেশে পাচার করেছে। আবার সেই চক্রই বিটিসিএলের আরেকটি প্রকল্প কৌশলে অনুমোদন করে নিয়ে এখান থেকে ২৫ কোটি আত্মসাত করার সমস্ত বন্দোবস্ত পাকা করেছে। দুদকের তদন্তে প্রমাণিত অবৈধ ভিওআইপি দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত বিটিসিএলের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা আসামি হলেও তিনি এখন ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। সাবমেরিন কেবল স্থাপনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য বর্তমান এমডিসহ বিটিসিএলের আরও কয়েকজন কর্মকর্তাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। তার সঙ্গে সহযোগী হিসেবে রয়েছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রতিনিধি। এই স্থানীয় প্রতিনিধি বিভিন্ন সময় ভয়-ভীতি দেখিয়ে বিটিসিএল থেকে বড় বড় কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। জোট সরকারের আমলে ফুলে ফেপে ওঠা এই ঠিকাদার এখন বিটিসিএলের মূর্তমান আতঙ্ক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। বিটিসিএলের কতিপয় কর্মকর্তাসহ ওই ঠিকাদার কক্সবাজার থেকে ঢাকা পর্যন্ত সাবমেরিন ব্যাকহোল লিংক নামের কাজটি নেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। সরকারের ক্রয়সংক্রান্ত নীতিমালা লঙ্ঘন করে সম্প্রতি তুরস্কের নেটাশ নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে বিনা টেন্ডারে কাজ দেয়ায় বিটিসিএলের ২৫ কোটি টাকা দুর্নীতিবাজদের পকেটে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পিপিআরের সরাসরি ক্রয়সংক্রান্ত বিধির ভুল ও বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে টেন্ডার ছাড়াই এই টাকা হাতিয়ে নেয়ার সব ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করা হয়েছে। বেআইনিভাবে ঢাকা-কক্সবাজার সাবমেরিন ব্যাকহোল লিংক ৪০ থেকে ২৪০ জিবিতে উন্নীতকরণের নামে ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে তুরস্কের নেটাশ কোম্পানির সঙ্গে বিটিসিএলের চুক্তি হয়। চুক্তি স্বাক্ষরে বিটিসিএলের উচ্চ পর্যায়ের এক কর্মকর্তার (অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার গডফাদার) হাত রয়েছে। এই কর্মকর্তা বিভিন্ন সময় বেশ কয়েকটি মামলায় জেলও খেটেছেন। তার ছত্রছায়ায় ভিওআইপি সিন্ডিকেট গত বছর দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে। ওই কর্মকর্তার নামে বিভিন্ন ব্যাংকে কয়েক কোটি টাকার ৫৭টি এফডিআর রয়েছে। দুদকের তদন্তে এ বিষয়টিও উঠে এসেছে। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) এমডি মোঃ মাহফুজুর রহমান বলেন, সরকারের বিপুল পরিমাণ টাকা কোনভাবেই অপচয় হতে দেয়া হবে না। বিষয়টি নিয়ে যা কিছু করনীয় তাই করা হবে। অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট সরকারের টাকা লুটে নেয়ার সব ব্যবস্থা করে ফেলেছিল। কিন্তু শেষ সময়ে এসে বিষয়টি ধরা পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে সরকারের সর্বোচ্চ মহলে যাওয়া হবে। বিশাল এই অনিয়ম দুর্নীতি তদন্তে একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরই চূড়ান্ত ব্যবস্থা। এর আগে প্রকল্প নিয়ে কারা কারা অনিয়ম করেছে-তাদের শনাক্ত করার কাজ চলছে। বিটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, পিপিআর ২০০৮ এর সরাসরি ক্রয়ের জন্য যেসব বিধান রাখা হয়েছে তার সব কিছু লঙ্ঘন করে কক্সবাজার থেকে ঢাকা পর্যন্ত ব্যাকহোল লিংক নির্মাণ বা সম্প্রসারণ কাজটির কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। বিটিসিএলের সাবেক এমডি এসএম কলিম উল্লাহ। অবসরে যাওয়ার শেষ দিন এই কাজটির অনুমোদন দেন। বিটিসিএলের সাবেক এক মেম্বার নেটাশের স্থানীয় প্রতিনিধির পক্ষে এই কার্যাদেশ নেন। নেটাশ নামক কোম্পানিকে বিনা টেন্ডারে উচ্চ মূল্যে কাজ দেয়ার জন্য বিটিসিএলের ভিওআইপি চক্র ২০১২ সাল থেকে পাঁয়তারা করে আসছিল। এজন্য ঢাকা কক্সবাজার সাবমেরিন ব্যাকহোল লিংকের মোট ক্যাপাসিটির তথ্য গোপন করা হয়। এই লিংকের ক্যাপাসিটি ৭০-এর জায়গায় ৪০ জিবি দেখানো হয়। পরে বিনা টেন্ডারে নেটাশের কাছ থেকে যন্ত্রপাতি কেনার বিষয়টি বিটিসিএলের বোর্ড সভায় পাস করে নেয় জালিয়াত চক্র। বোর্ড সেই সময় প্রস্তাবটি অনুমোদন দিলেও পরে পিপিআর ২০০৮ এর বিধান অনুসরণের শর্ত জুড়ে দেয়। তখন জালিয়াত চক্র কাজের কার্যাদেশ নিতে পারেনি। বোর্ড জানিয়ে দেয় পিপিআর ২০০৮ এর সরাসরি ক্রয় প্রয়োগের যেসব শর্ত আছে তার একটিও আলোচ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়নি। ফলে তখন ওই ক্রয় প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বিটিসিএল বোর্ডের ৬৪তম সভায় আলোচনায় নরটেল নেটাশের নামে ২০০৫ সালের ৩০ অক্টোবর যে চুক্তিটি দেখানো হয়েছে সেটি প্রকৃতপক্ষে সাবেক বিটিটিবির সঙ্গে তুরস্কের হেজফিবেল নামক একটি কোম্পানির চুক্তি। তৎকালীন মার্কিন ডলার অনুযায়ী যার মূল্য ছিল ২৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ডলারের বর্তমান বিনিময় হারে তা বেড়ে ৩৩ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। আর নরটেল নেটাশের সঙ্গে প্রায় ১৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার একটি চুক্তি করেছিল ২০০৮ সালের ৮ জুনে। বোর্ড অব ডিরেক্টরস (বিওডির) আলোচনায় দুটি চুক্তিকে একই কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হিসেবে দেখানো হয়েছে। এই চুক্তির ভিত্তিতেই সভার সিদ্ধান্তে বর্ণিত লিংকটি শুধু নরটেল নেটাশের পক্ষে আপগ্রেডেশনের জন্য নীতিগত অনুমোদন প্রদান করা হয়েছিল। এটা বড় ধরনের জালিয়াতি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সাবমেরিন ক্যাবলের আপগ্রেডেশনের নামে পিপিআর লঙ্ঘন করে কোন কোম্পানিকে সরাসরি কাজ দেয়া একটি বড় ধরনের আর্থিক অনিয়ম। ২০১৩ সালে নতুন ৬টি আইটিসি (ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্টোরিয়াল কেবল) কোম্পানি বাজারে আসায় সাবমেরিন ব্যান্ডউইথের চাহিদা দিন দিন কমে গেছে। এসব কোম্পানির ব্যান্ডউইথের দাম সাবমেরিন ক্যাবলের ব্যান্ডউইথের দামের চেয়ে অনেক কম। বেসরকারী ক্যাবলের প্রভাব বিটিসিএলের ওপরও পড়েছে। সম্প্রতি ম্যাঙ্গো নামক একটি কোম্পানি কক্সবাজার থেকে ঢাকা পর্যন্ত ব্যাকহোল তৈরি করায় বিটিসিএলের ব্যাকহোলের চাহিদা আরও কমে গেছে। বিটিসিএলের বর্তমান ব্যাকহোল লিংক সম্প্রসারণ করতে হলেও বিধি মেনেই করতে হবে। পিপিআর অনুযায়ী চলমান যে কোন প্রকল্পের ১৫ শতাংশ পর্যন্ত সম্প্রসারণের বিধান রয়েছে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এই কাজ তুরস্কের নরটেল নেটাশ ও তুরস্কের হেজাফিবেল কোম্পানির কাকে দেয়া হবে। এছাড়াও পিপিআরের ডাইরেক্ট প্রকিউরমেন্টের কোন ধারাই এক্ষেত্রে প্রযোজ্য না। পিপিআর ধারা ভুল ব্যাখ্যা করে এই প্রকল্পের ডিপিএম অনুমোদন নেয়া হয়েছে। পিপিআরএ বলা আছে, কোন প্রযুক্তির যদি একজন বা অন্য কোন একটি প্রতিষ্ঠান কেবল উৎপাদনকারী হয় তবেই তার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ডাইরেক্ট প্রকিউরমেন্ট পদ্ধতিতে ক্রয় করা যাবে। কিন্তু বর্তমানে ব্যাকহোল লিংকের টেলিফোন প্রযুক্তি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও কোম্পানি উৎপাদন করছে। কাজেই এক্ষেত্রে ডিরেক্টর প্রকিউরমেন্টের কোন সুযোগ নেই। এদিকে ২০০৬ সালে চালু করা বিটিসিএলের ব্যাকহোল লিংকটির লাইফ টাইম প্রায় শেষ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় এটি সম্প্রসারণ না করে নতুন করে কেবল স্থাপন করাই ভাল। যে ২৫ কোটি টাকা দিয়ে কেবল প্রতিস্থাপন করা হবে তা দিয়ে নতুন কেবল স্থাপন করা যায়। আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের সাবমেরিন ব্যাকহোল লিংক বসানোর উদ্যোগ নেয়াটাই সময়োপযোগী হবে। এতে ওই ক্যাবলের লাইভ টাইম অনেক বাড়বে। কেবলও আধুনিক হবে। অযথা ২৫ কোটি টাকার অপচয় হবে না। বিটিসিএলের অবৈধ ভিওআইপি গডফাদার নামে খ্যাত বিটিসিএলের এক কর্মকর্তা যিনি বার বার চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছেন। একাধিক ফৌজদারি ও দুর্নীতির মামলায় তিনি অভিযুক্ত হয়ে গ্রেফতার হয়েছেন। তার সব অপকর্মের সহযোগী ঘনিষ্ট বন্ধু বিটিসিএলের তৎকালীন এমডি কলিম উল্লাহ অবসরে যাওয়ার আগে তার শেষ কর্মদিবসে ২০১৪ সালে ১৪ জানুয়ারি তড়িঘড়ি করে এই অবৈধ ক্রয়চুক্তির স্বাক্ষর করেন। ক্রয়চুক্তিতে এমন অনেক শর্ত রাখা হয়েছে, যা সম্পূর্ণরূপে বিটিসিএলের স্বার্থবিরোধী। যন্ত্রপাতি স্থাপন না করেই ঠিকাদার ৮০ শতাংশ টাকা তুলে নেয়ার বিধান করা হয়। এমনকি কৌশলে এমন শর্তও রাখা হয়েছে যার মাধ্যমে ঠিকাদার একসেপটেন্স টেস্ট করে যন্ত্রপাতি বিটিসিএলকে বুঝিয়ে না দিয়েই ৯৫ শতাংশ টাকা তুলে নিতে পারবেন। এত বড় জালিয়াতি বিটিসিএলের ইতিহাসে আর কখনও হয়নি। জানা গেছে, ঠিকাদার নেটাশ যন্ত্রপাতি স্থাপনের আগে ৮০ শতাংশ টাকা নিয়ে বিটিসিএলের স্বার্থবিরোধী চক্রের মাধ্যমে বর্তমানে একসেপটেন্স টেস্ট করে যন্ত্রপাতি বিটিসিএলকে বুঝিয়ে না দিয়েই ৯৫ শতাংশ টাকা নেয়ার জন্য এলসি প্রদানকারী ব্যাংককে চাপ দিচ্ছে। তুরস্কের নেটাশ কোম্পানির স্থানীয় প্রতিনিধি বিটিসিএল ও বিটিসিএলের বাইরে বড় সিন্ডিকেট তৈরি করে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান এমডিসহ আরও কয়েকজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাকে কাজের বিষয়ে কোন বাধা সৃষ্টি করলে পরিনাম ভয়াবহ হবে। এরপরও বর্তমান এমডি বিষয়টি উদঘাটন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। নেটাশের স্থানীয় প্রতিনিধি এর আগেও বিটিসিএলে নানা অনিয়ম করে প্রায় একশ’ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন। সৎ, যোগ্য কোন কর্মকর্তাকেই তিনি বিটিসিএলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চাকরি করতে দেননি। বিভিন্ন জায়গায় টাকা দিয়ে তাদের বিভিন্ন জেলায় বদলি করে দিয়েছেন। এবারও সেই পথেই তিনি হাঁটছেন বলে বিটিসিএলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। বর্তমান এমডিসহ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কয়েকটি দৈনিকে মিথ্যা ও বিকৃত তথ্য প্রতিবেদন প্রকার্শ করিয়েছেন। এর আগে বিটিসিএলের কয়েকটি নিম্নমানের সুইচিং যন্ত্রপাতি ক্ষমতা বলে সরবরাহ দিয়ে বিটিসিএলকে বিপুল অঙ্কের ক্ষতি করেছে। বিটিসিএলে তার বসানো বিভিন্ন ট্রান্সমিশন লিংক ও সুইচিং যন্ত্রপাতি অল্প দিনেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সূত্র জানিয়েছে, অসম ও অবৈধ ক্রয়চুক্তির পেছনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে বিটিসিএলের সেই কুখ্যাত কর্মকর্তা। যিনি অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ টেলিফোন কল পাচার করে রাষ্ট্রের শত শত কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। ২০১৩ সালের ২৯ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃপক্ষ (দুদক) তদন্ত দল এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে কিভাবে টেলিফোন কল মুছে দিয়েছে। এই কল মুছে দেয়ার কারণে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদক মামলা দায়ের করে। একাধিকবার গ্রেফতার হয়ে জেল খাটা বিটিসিএলের ওই কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন পদোন্নতি পেয়ে এখন বিটিসিএলের এমডি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। ওয়ান ইলেভেনের সময় অবৈধ যন্ত্রপাতিসহ যৌথবাহিনী তাকে গ্রেফতার করে। সেই সময় তার ব্যাংক হিসাব তল্লাশি করে কয়েক কোটি টাকার ৫৭টি এফডিআর পাওয়া গিয়েছিল। সেই সেই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আবারও বিটিসিএলের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ৫শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ইনফোবাহন (১৭১ কেএল) সম্প্রতি শেষ হয়েছে। এই প্রকল্পেও বড় ধরনের অনিয়ম হয়েছে। প্রকল্পটির অনিয়মের তদন্তের দাবি করা হয়েছে। প্রকল্পের পিডি হিসেবে সেই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেছেন। অবৈধ ভিওআইপি চক্রের মূল হোতার কারণে এক হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যবসায়ীদের কাছে পাওনা রয়েছে বিটিসিএলের। বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার জমির উদ্দিনের ছেলে নওফেল জমির অবৈধ ভিওআইপি করে সাড়ে তিনশ’ কোটি টাকা মেরে দিয়ে লন্ডন চলে গেছেন। এই চক্র বিটিসিএলের বনানীর কড়াইলের আন্তর্জাতিক টেলিফোন এক্সচেঞ্জের (আইটিএক্স) কল ডিটেইলস রেকর্ডার বা সিডিআর মুছে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাত করেছে। ২০১৪ সালের ২৩ জুলাই দুদকের অনুসন্ধানী কারিগরি টিমের রিপোর্টে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারের এজিবি বিভাগের নিরীক্ষা প্রতিবেদনেও একই তথ্য উল্লেখ করা হয়। সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আত্মসাত করায় এ ঘটনায় একই দিন জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে বনানী থানায় (মামলা নং ৪০/২৯০ ও ৩৯/২৮৯) ও রমনা থানায় (মামলা নং ০৭/৬৫২) মামলা করা হয়। কিন্তু ওই মামলায় এখন পর্যন্ত আসামিদের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
×