ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী

ঈর্ষা ঘৃণা প্রতিশোধ পরায়ণতা কল্যাণ বয়ে আনে না

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ৩ মে ২০১৫

ঈর্ষা ঘৃণা প্রতিশোধ পরায়ণতা কল্যাণ বয়ে আনে না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নস্যাৎ করার লক্ষ্যে লাশ ফেলার আরও খারাপ পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু তারা সফল হয়নি। কারণ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এ লক্ষ্যে সাধারণ জনগণের পাশাপাশি একটি চমৎকার কাজ করেছে। খবর বাসসর। তিনি বলেন, বিএনপি হত্যার মাধ্যমে লাশ ফেলে দিয়ে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা সে সুযোগ পায়নি। কারণ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ছিল সক্রিয় ও সতর্ক। এ ছাড়া জনগণও ছিল সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার ব্যাপারে সতর্ক। প্রধানমন্ত্রী শনিবার বিকেলে এখানে তাঁর সরকারী বাসভবন গণভবনে বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এ কথা বলেন। বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উসৈ সিং, পার্বত্য চট্টগ্রাম বৌদ্ধ ভিক্ষু সংঘের সভাপতি শ্রীমৎ প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো ও বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সভাপতি শ্রীমৎ শুদ্ধানন্দ মহাথেরো অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সজল কুমার তালুকদার স্বাগত বক্তৃতা করেন। শেখ হাসিনা বলেন, সরকার বিরোধী আন্দোলনে বিএনপি যা করেছিল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও তারা একই কাজ করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়ে বিএনপি সবকিছুই করেছে। কিন্তু তারা মাঠে ছিল না। তিনি বলেন, তারা মাঠে ছিল না, তাদের কোন প্রতিনিধি ছিল না। তাদের কোন এজেন্ট ছিল না। নির্বাচনের দিন ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার মাত্র তিন ঘণ্টা পর হঠাৎ করে তারা নির্বাচন বয়কট করেছে। তিনি বলেন, ঈর্ষা, ঘৃণা, প্রতিশোধ পরায়নতা কখনও জনগণের কল্যাণ বয়ে আনে না। তিনি বলেন, কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে যে, বিএনপি-জামায়াত বিগত ৫ জানুয়ারি থেকে তিন মাস ধরে এ ধরনের অপরাধ করে চলেছে। এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করা, অগ্নিসংযোগ, সরকারী ও বেসরকারী সম্পত্তি ধ্বংস করার কাজে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি বলেন, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতামূলক কর্মকা-ে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রীস্টান সকল ধর্মবিশ্বাসী মানুষ লড়াই করেছে বলেই বাংলাদেশ কষ্টার্জিত স্বাধীনতা লাভ করেছে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার লক্ষ্য ছিল সকল ধর্মের মানুষ একটি সুন্দর জীবন যাপন এবং শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ধর্মীয় আচার পালন করতে পারবে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়েছিল। কারণ তখন রাষ্ট্রীয় মদদে দেশের অনেক ¯′ানে সংখ্যালঘুদের হত্যা, তাদের ওপর হামলা, নির্যাতন, তাদের সম্পাত্তি ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াতের গু-ারা ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের রামু এলাকায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অনেক ধর্মীয় স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করেছিল। সে সময় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিজিবি, পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সকলেই এগিয়ে এসেছিল। শেখ হাসিনা বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা ২০১২ সালে ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ স্থাপনাগুলো আগের মতো, এমনকি আরও আকর্ষণীয় করে পুনর্নির্মাণ করেছে। এগুলো এখন আকর্ষণীয় পর্যটন স্থানে পরিণত হয়েছে। শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার সংবিধান সংশোধন করার মাধ্যমে সকল ধর্মের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছে।
×