ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বান্দরবানে উচ্ছেদ আতঙ্কে ১১৫ পরিবারের নির্ঘুম রাত

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ৩ মে ২০১৫

বান্দরবানে উচ্ছেদ আতঙ্কে ১১৫ পরিবারের নির্ঘুম রাত

নিজস্ব সংবাদদাতা, বান্দরবান, ২ মে ॥ বান্দরবান শহরের রাজগুরু বিহার ভিটা এলাকায় বসবাসরত ১শ’ ১৫ পরিবারকে প্রভাবশালী কর্তৃক উচ্ছেদ করার চেষ্টা চলছে, আর এ ঘটনায় নির্ঘুম রাত পার করছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান থোয়াইচ প্রু মাস্টার খ্যং ওয়া ক্যাং কমিটির সভাপতি পরিচয় দিয়ে ক্যায়াং (মন্দির) ভিটায় বসবাসরত আদিবাসী মারমা পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কলাপাড়ার কারবারী ক্যহ্লাচিং মারমা জানান, গরিব মারমা আদিবাসীদের অসহায়ত্বের কথা ভেবে বিনা ভাড়ায় ১৯৭৬ সালের দিকে তখনকার প্রয়াত রাজগুরু বিহারের ভান্তে উসুমানা মহাথেরো ও বোমাং রাজা মংশৈপ্রু মিলে ক্যাং এলাকায় বসবাস করার জন্য কলাপাড়া, জাদীপাড়া এবং টাউল হলপাড়া বাসিন্দাদের অনুমতি প্রদান করে। কিন্তু দীর্ঘদিন পর হঠাৎ করে জেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান থোয়াই চ প্রু মাস্টার ক্যাং কমিটির পরিচয় দিয়ে এসব এলাকায় বসবাসরতদের নিয়ে গত ১৫ এপ্রিল খ্যং ওয়া ক্যাং রাজগুরু বিহারে এক জরুরী সভা ডাকেন। এ সময় তিনি উক্ত পাড়া বাসিন্দাদের ক্যাং ভিটা ত্যাগের জন্য হুমকি প্রদান করেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ক্যাং কমিটি পরিচয় দিয়ে থোয়াইচ প্রু মাস্টার, বাচমং মারমা ও মংশৈপ্রু মারমা ডিসি বাংলা সামনে, পার্বত্য ভিক্ষু পরিষদের পাশে ক্যাং ভিটার জায়গার গুলি প্রভাবশালীদের কাছে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ব্যাপারে গত ২৫ এপ্রিল জাদীপাড়া, কলাপাড়া ও টাউন হল পাড়াবাসীরা বোমাং রাজা উ চ প্রু চৌধুরী বরাবরে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেন বলে জানান থোয়াইসাপ্রু (কারবারী) কালিসে মারমা। টাউল হলপাড়ার মংছোহ্রী মারমা ও জাদীপাড়া ক্যহ্লাপ্রু মারমা বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান থোয়াইচপ্রু মাস্টার এবং বাচমং মারমা কয়েক বছর ধরে অনেক পরিবারকে ভয় ভীতি এবং আইনের হুমকি দিয়ে ভাড়া আদায়ের জন্য বাধ্য করছে। এ কারণে ইতোমধ্যে অনেক পরিবার ভয়ে এলাকার ছেড়ে চলে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এসব বিষয়ে ক্যাং কমিটি সভাপতি থোয়াইচপ্রু মাস্টার বলেন, ক্যাং ভিটা জায়গার ছিল ১৩ একর ৫৭ শতক কিন্তু বিভিন্ন কারণে অবৈধভাবে দখল হয়ে গেছে, তাই বেদখল হওয়ার জায়গার উদ্ধারের চেষ্টা করছি। তবে স্থানীয়রা মনে করছে, ক্যায়াং ভিটা এলাকায় গরিব মারমা পরিবারগুলোর বসবাসের কারণে ক্যায়াংয়ের জায়গা নিরাপদ আছে। তাদের উচ্ছেদ করা হলে এসব ভূমি প্রভাবশালীরা দখল করে নিলে চিরতরে ভূমি হারাবে ক্যায়াং কমিঠি, আর হারিয়ে যোতে পারে মন্দিরের স্থাপনাও।
×