ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সহস্র নাগরিক কমিটির সংবাদ সম্মেলন

দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন ছিল সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১ মে ২০১৫

দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন ছিল সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দু’একটি বিছিন্ন ঘটনা ছাড়া তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে সহস্র নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে কমিটির পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়। সহস্র নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব গোলাম কুদ্দুছ লিখিত বক্তব্যে বলেন, উপমহাদেশের জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রচলিত অভিজ্ঞতার আলোকে এবারের নির্বাচন ছিল অনেক বেশি উৎসবমুখর। ভোটের দিন সকাল ৮টা থেকেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এতে বিপুলসংখ্যক নারী-পুরুষ ভোটার দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। গোলাম কুদ্দুছ বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্যেও আমরা প্রত্যক্ষ করেছি- কতিপয় প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলরের সমর্থকরা কোন কোন কেন্দ্রে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ও ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেয়। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বী কোন মেয়রপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে এ ধরনের কোন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এক হাজার ৯৮২টি কেন্দ্রের মধ্যে সর্বোচ্চ ২০টি কেন্দ্রে এ ধরনের অনভিপ্রেত অনিয়মের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। গোলাম কুদ্দুস বলেন, নির্বাচনের দিন বিএনপি নেতারা যখন অনুভব করলেন- সাধারণ ভোটার ও দলীয় কর্মীদের অনেকেই দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এবং তাদের প্রার্থীদের বিজয়ের সম্ভাবনা নেই, তখনই তারা নির্বাচন থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিলেন। বিএনপির এ ঘোষণা অনাকাক্সিক্ষত ও পূর্ব পরিকল্পিত বলেও তিনি মনে করেন। সামগ্রিকভাবে এ নির্বাচন সফল উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিছু কিছু অনাকাক্সিক্ষত, বিছিন্ন ঘটনা ঘটলেও পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও ফলাফল নির্ধারণে এর কোন প্রভাব পড়েনি। নবনির্বাচিত ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, ঢাকা দক্ষিণের সাঈদ খোকন ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও সব বিজয়ী কাউন্সিলরদের কমিটির পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কমিটির সদস্য সচিব গোলাম কুদ্দুছ। নতুন মেয়রদের সহস্র নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানিয়ে কমিটির আহ্বায়ক সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নির্বাচন শুরুর কয়েক ঘণ্টা পর বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচন বর্জনের জন্য দুঃখ প্রকাশ ও নিন্দা জানাচ্ছি। তারা যদি মাঠে থাকতেন, সত্যিকার বিজয়ও অর্জন করতে পারতেন। দেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের পছন্দের মেয়র নির্বাচিত করতে চান উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবার যারা নির্বাচিত হয়েছেন নাগরিক কমিটির দায়িত্ব হবে সাধারণ মানুষ ও সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে সেতুবন্ধন সৃষ্টি করা। নির্বাচিতরা তাদের প্রতিশ্রুতি অনুসারে কাজ করছেন কিনা তা দেখাশুনা করা, তারা কাজ না করলে কমিটি সমালোচনা করবে। সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক কমিটির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাজমা শাহিন, সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, এ্যাডভোকেট মোতাহের হোসেন সাজু, ফজলুর রহমান বাবুল, প্রকৌশলী মঞ্জুরুল হক মঞ্জু প্রমুখ। এদিকে নির্বাচনের আগে অঙ্গীকার করেছিলেন, নির্বাচিত হলে ঢাকাকে পরিচ্ছন্ন ও মানবিক ঢাকা গড়বেন। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আনিসুল হক। এখনও নির্বাচন কমিশন থেকে মেয়রদের নামে কোন প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। কেউ শপথও নেননি নির্বাচিত মেয়র-কাউন্সিলররা। তবে অঙ্গীকারের কথা ভোলেননি তিনি। নির্বাচিত হওয়ার পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের ওয়ালে পরিচ্ছন্ন ঢাকা গড়ার প্রাথমিক উদ্যোগ প্রকাশ করেছেন আনিসুল হক। তিনি লিখেছেন, ‘আমরা যারা একটি সুন্দর ঢাকা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলাম তারা শহরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য পোস্টার, ব্যানার, স্টিকার স্থাপন করেছি। নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে আমাদের প্রত্যয় ছিল পরিচ্ছন্ন-সবুজ-পরিবেশবান্ধব ঢাকা। এদিকে বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীতে অবৈধ বাজার উচ্ছেদ করতে গিয়ে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেটসহ পুলিশ দখলদারদের বাধারে মুখে পড়েন। এতে পুলিশের গুলিতে বেশ কয়েকজন আহত হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান নির্বাচিত মেয়র আনিসুল হক।
×