ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি পদ শূন্য

বেতন ও একাডেমিক কার্যক্রমে স্থবিরতা

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ১ মে ২০১৫

বেতন ও একাডেমিক কার্যক্রমে স্থবিরতা

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারার না থাকায় পুরোপুরি অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। গত ১৭ এপ্রিল উপচার্যের (ভিসি) পদে থাকা প্রফেসর ড. হারুন-অর রশীদের চার বছরের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তিনিও এ দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। যে কারণে আটকে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতার পাশাপাশি পাঁচটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফল। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিকসহ সব দফতরেই দেখা দিয়েছে নানা সমস্যা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন ভিসি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটের সদস্য, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের মহাসচিব, প্রফেসর ওয়াহেদুজ্জামানের নাম শোনা গেলেও রহস্যজনক কারণে সেটিও থমকে রয়েছে। ভিসি না থাকায় আটকে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক, প্রশাসনিক ও একাডেমিক বহু সিদ্ধান্ত। যার মধ্যে একাডেমিক কাউন্সিল, সিন্ডিকেট, পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ভিসি না থাকায় ৫টি বিভাগের ফলাফলও আটকে পড়েছে। জানা গেছে, সদ্যবিদায়ী ভিসি প্রক্টরিয়াল বডির প্রধানসহ একাই ১১টি বিভাগের চেয়ারম্যান, ৫টি ফ্যাকাল্টির ডিন ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন। এসব পদে তিনি কাউকে দায়িত্ব না দিয়ে যাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে সকল কার্যক্রম। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি প্রকল্প পরিচালক ছিলেন বিদায়ী উপাচার্য। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনসহ ১২টি ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। উপাচার্য না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্পের প্রায় শত কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ থমকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যে আটকে গেছে নতুন স্থায়ী ক্যাম্পাসে বিভিন্ন বিভাগের আসবাবপত্র ও কম্পিউটার ল্যাবের জন্য কম্পিউটার ক্রয় প্রক্রিয়া। পাশাপাশি আটকে গেছে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানভীর কায়সার বলেন, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা ও পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, ভিসি না থাকায় এপ্রিল মাসের বেতনের বিষয়ে কেউ কিছুই বলতে পারছেন না। এছাড়া ভিসি না থাকায় জরুরী প্রয়োজনে ছোটখাটো বরাদ্দও ছাড় করা যাচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক সিদ্ধান্তও থমকে রয়েছে। শুরু থেকে প্রো-ভিসি না থাকায় সব মিলিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি এখন পুরোপুরি অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক এবং একাডেমিক কার্যক্রমে স্থবিরতার বিষয়টি স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বাহাউদ্দিন গোলাপ জানান, ভিসি না থাকলে একাডেমিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, পদক্ষেপ, কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা ও শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন দেয়া সম্ভব হবে না। পাশাপাশি শিক্ষা কার্যক্রমের ওপরও প্রভাব পড়তে শুরু করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) মনিরুল ইসলাম জানান, নতুন ভিসি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটের সদস্য, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের মহাসচিব, ইউনির্ভাসিটি অব নটিকেশন (ইউকে) থেকে পিএইচডি ডিগ্রিধারী প্রফেসর ওয়াহেদুজ্জামানের নাম চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
×