ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আনিসুল, খোকন ও নাছিরকে বিজয়ী ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ৩০ এপ্রিল ২০১৫

আনিসুল, খোকন ও নাছিরকে বিজয়ী ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আনিসুল হক, সাঈদ খোকন ও আ জ ম নাছিরকে মেয়র পদে বেসরকারীভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। ভোট গণনা শেষে বুধবার বিকেলে তাদের বিজয়ী ঘোষণা করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা। বুধবার বিকেল ৩টায় ঢাকা উত্তরের মেয়র হিসেবে আনিসুল হককে বেসরকারীভাবে বিজয়ী ঘোষণা করেন উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটে অস্থায়ী রিটার্নিং অফিস থেকে এই ঘোষণা দেন। এর আগে সকাল ৭টার দিকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে তাকে বিজয়ের ফল ঘোষণা করা হয়। মঙ্গলবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আনিসুল হক ঢাকা উত্তরের ১ হাজার ৯৩ কেন্দ্রের মধ্যে সব কেন্দ্রে ফল গণনায় ৪ লাখ ৬০ হাজার ১১৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। সব কেন্দ্রের ফলে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত তাবিথ আউয়াল ভোট পেয়েছেন ৩ লাখ ২৫ হাজার ৮০ ভোট। এদিকে বুধবার বেলা তিনটার দিকে ঢাকা দক্ষিণের রিটার্নিং কর্মকর্তা মিহির সারোয়ার মোর্শেদ এ সিটিতে মেয়র হিসেবে সাঈদ খোকনকে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন। সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত এ প্রার্থী ৮৮৯ কেন্দ্রের মধ্যে ৮৮৬ কেন্দ্রের ফলে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ২৯৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মির্জা আব্বাস ভোট পেয়েছেন ২ লাখ ৯৪ হাজার ২৯১ ভোট। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে আওয়ামী সমর্থিত প্রার্থী আ জ ম নাছিরকে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। সিটির ৭১৯টি কেন্দ্রের ফলাফলে আজম নাছির পেয়েছেন ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৩৬১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম পেয়েছেন ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৩৭ ভোট। চট্টগ্রামের রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন আ জ ম নাছিরকে বেসরকারীভাবে মেয়র পদে নির্বাচিত ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি বলেন, নব নির্বাচিত মেয়র চট্টগ্রাম নগরীর নাগরিক সুবিধা উন্নয়নে যথাযথ ভূমিকা পালন করবেন। তিন সিটি কর্পোরেশনে মোট ৪৮ জন মেয়র পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ১৬ জন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ২০ জন এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে ১২ জন প্রার্থী এ নির্বাচনে অংশ নেয়। এর মধ্যে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ছাড়া আর কোন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেননি। ভোটের প্রাপ্ত ফলে বেশিরভাগ মেয়র প্রার্থীরই জামানত বাজেয়াফত হয়েছে। গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এ নির্বাচনে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয়। এতে দেখা গেছে তিন সিটিতে ৬০ লাখ ২২ হাজার ৯৫২ ভোটের মধ্যে মোট ভোট পড়ে ২৬ লাখ ৪৮ হাজার ৭২৮ ভোট। যা মোট ভোটের ৪৩. ৯৭ ভাগ। ভোটের হিসাবে দেখা গেছে তিন সিটির মধ্যে সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে ঢাকা উত্তরে এবং বেশি ভোট পড়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে। এছাড়া তিন সিটি নির্বাচনে বৈধ ভোটের সংখ্যা ২৫ লাখ ২৭ হাজার ৭২৫টি। মোট ১ লাখ ২১ হাজার ৩টি ভোট বাতিল হয়েছে। যা প্রদত্ত ভোটের ৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে মোট ভোটার হচ্ছে ২৩ লাখ ৪৪ হাজার ৯শ’ জন। এর মধ্যে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ৮ লাখ ৭৪ হাজার ৫৮টি, যা মোট ভোটের ৩৭ দশমিক ৩০ শতাংশ। এ নির্বাচনে বৈধ ভোটের সংখ্যা ৮ লাখ ৪১ হাজার। এছাড়া বাতিল হয়েছে ৩৩ হাজার ৫৮১টি ভোট। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৭৮ জন। এদের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৯ লাখ ৫৪ হাজার ৮৪ জন, যা মোট ভোটের ৪৮ দশমিক ৪০ শতাংশ। এ নির্বাচনে বৈধ ভোটের সংখ্যা ৮ লাখ ৬৫ হাজার ৩৫৪টি। এছাড়া বাতিল হয়েছে ৪০ হাজার ১৩০টি ভোট। এ নির্বাচনে ৩টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়। তবে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে ভোটের ব্যবধান ৩ কেন্দ্রের ভোটের চেয়ে অনেক বেশি হওয়ায় তিন কেন্দ্রে আর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। এদিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনের মোট ১৮ লাখ ১৩ হাজার ৪৪৯ জন ভোটারের মধ্যে ৮ লাখ ৬৮ হাজার ৬৬৩ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে বৈধ ভোটের সংখ্যা ৮ লাখ ২১ হাজার ৩৭১ জন। ভোট বাতিল করা হয়েছে ৪৭ হাজার ২৯২টি। সে হিসাবে প্রদত্ত ভোটের হার ৪৭. ৯০ ভাগ। এর মধ্যে বাতিল করা হয়েছে ৫.৪৪ শতাংশ ভোট। তবে জানা গেছে, চট্টগ্রামে ১২ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে ১০ প্রার্থীর জামানত বাতিল হয়েছে। আইন অনুযায়ী কোন প্রার্থীকে অবশ্যই মোট প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগ ভোট পেতে হবে। এর কম হলে সে প্রার্থীর জামানত বাতিলের বিধান রয়েছে।
×