ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কৃষিকাজসহ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বিপর্যয়ের শঙ্কা

কলাপাড়ায় শতাধিক খাল ভরাট

প্রকাশিত: ০৪:২১, ২৯ এপ্রিল ২০১৫

কলাপাড়ায় শতাধিক খাল ভরাট

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২৭ এপ্রিল ॥ কলাপাড়ায় শতাধিক খাল ভরাট হয়ে শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে। কোথাও এক ফোঁটা পানি নেই। চাষাবাদ দূরের কথা, গবাদিপশুকে খাওয়ানো কিংবা নিজেদের ব্যবহারের পানি পর্যন্ত নেই। পুরনো এ খালগুলো ভরাট হয়ে পানিশূন্য থাকায় আবাদসহ মানুষের জীবনযাত্রায় ভয়ানক নেতিবাচক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এসব খাল পুনর্খনন করা না হলে হাজার হাজার একর কৃষিজমির ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যহতের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমনকি আমন আবাদও চরম শঙ্কায় পড়েছে। কারণ বর্ষা মৌসুমে রোপা আমনের জন্য পানি ধারণ করে রাখা যায় না। প্রাকৃতিকভাবে এবং খননের মাধ্যমে সৃষ্ট এসব খাল এখন কৃষকের কোন কাজেই আসছে না। ’৬০-এর দশকে কলাপাড়ার গোটা উপকূলে কৃষিজমিতে চাষাবাদ করতে এবং মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় করা হয় বেড়িবাঁধ। পরবর্তীতে এসব খালের পানি ওঠানামা করাতে বাঁধের অভ্যন্তরে খালের সঙ্গে করা হয় স্লুইচগেট। কিন্তু পরবর্তীতে এসব খালের নাব্যতা ধরে রাখতে পুনর্খনন করা হয়নি। খালের দুই পাশের জমি চাষাবাদের সময় পানিতে জমির পলি ধুয়ে খাল ভরাট হয়ে যায়। ফলে এখন আর শুকনো মৌসুমে খালে এক ফোঁটা পানিও থাকছে না। এমনকি শত শত ভরাট খাল ও খালের শাখাসংলগ্ন জমির মালিকরা চাষাবাদের জমির সঙ্গে মিলিয়ে করে ফেলেছে আবাদি জমিতে। ফলে জমির পানি ওঠানামা বন্ধ থাকছে। বর্ষা মৌসুমে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। আর শুকনো মৌসুমে থাকছে না এক ফোঁটা পানি। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাতলা গ্রামের কৃষক আব্দুল হালিম জানান, গ্রামের মাঝখান দিয়ে অন্তত তিনটি খাল প্রবহমান ছিল। এখন বর্ষা মৌসুমে খালের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। শুকনো মৌসুমে এক ফোঁটা পানি থাকছে না। ১০ বছর আগেও এ খালের পানিতে শুকনো মৌসুমে রবিশস্যের আবাদ হতো। থাকত সেচের পানির মজুদ। কিন্তু এখন খাল-বিল আর চাষের জমি সব এক হয়ে গেছে। পানি না থাকার কারণে মাঠে কোন ঘাস পর্যন্ত জন্মায় না। গবাদিপশু পালন বন্ধের শঙ্কায় পড়েছে। একই দশা ১২টি ইউনিয়নের ৯০ ভাগ খালের। কলাপাড়ার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষক সুলতান গাজী জানান, খাল রক্ষা করে মিঠা পানি সংরক্ষণের উদ্যোগ না নিলে কলাপাড়ায় আগামী ১০ বছর পর কৃষি উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতি বছর উপজেলা প্রশাসন কিংবা পানি উন্নয়ন বোর্ড ৫-৬টি খাল পুনর্খনন করছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।
×