ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আজ শেখ জামালের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ২৮ এপ্রিল ২০১৫

আজ শেখ জামালের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কোন দলের সফলতার জন্য দরকার দক্ষ ব্যবস্থাপনা, প্রয়োজনীয় অর্থ ও কুশলী সংগঠকের সঙ্গে যদি যোগ হয় খেলোয়াড়দের দক্ষতা ও খানিকটা ভাগ্যের পরশ, তাহলে সাফল্য ধরা দেবেই তৃষ্ণার্ত হাতের মুঠোয়। এগুলোর প্রতিই আছে শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেডের। তাদের আবির্ভাবেই খর্ব হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে ঘরোয়া ফুটবলে আধিপত্য বিস্তার করা দেশের দুই ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় দল আবাহনী-মোহামেডানের। ক্লাবটি আজ পালন করবে তাদের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। বনানী কবরস্থানে সকাল ১০টায় ক্লাবের নামকরণ যার নামে, সেই শহীদ লেফটেন্যান্ট শেখ জামালের কবরে পুষ্পস্তক অর্পণ করে তার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করবেন ক্লাবের খেলোয়াড়, উর্ধতন কর্মকর্তা, ভক্ত-অনুরাগীরা। দুপুরে ক্লাব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিল। ২০১০ সালে তৎকালীন ধানম-ি ক্লাবটি শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব নামে আত্মপ্রকাশ করে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন এই দলটি ২০১৩ সালে আটবারের চ্যাম্পিয়ন আবাহনীকে হারিয়ে ফেডারেশন কাপ জয় করে। ২০১০ সাল থেকে টানা চার বছর ফেডারেশন কাপের ফাইনাল খেলে তারা। দেশের বাইরে নেপালে ২০০০ সালে ক্লাব বুদ্ধ সুব্বা গোল্ডকাপ জয় করে। ২০১১ সালে সাফাল পোখারা কাপ টুর্নামেন্টের ফাইনালে শেখ জামাল নেপাল আর্মিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০১৪ সালে ভারতের কলকাতায় আইএফএ শিল্ডের ফাইনালে উঠে শেখ জামাল। ফাইনালে কলকাতা মোহামেডানের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়। ওই বছরই ভুটানে অনুষ্ঠিত কিংস কাপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন। শুধু পুরুষ ফুটবলেই নয়। শেখ জামাল সাফল্য পেয়েছে মহিলা ফুটবল দিয়েও। বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রথম পেশাদার মহিলা ফুটবল লীগেও চাম্পিয়ন হয়ে তাক লাগিয়ে দেয় ক্লাবটি; যা একটি মাইফলক, একটি ইতিহাস। শেখ জামালের এত সব সাফল্যের নেপথ্য রূপকার বিশেষ একজন। তিনি মনজুর কাদের। নামটিই যেন চমকময়। সেখানেই স্পর্শ করেন, সোনা ফলিয়ে ছাড়েন সেখানেই। একজন সফল, জনপ্রিয় ও দক্ষ ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই দেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিরাজ করছেন। চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসেন বরাবরই। ১৯৯৩ সালে তখনকার সাদামাটা ফুটবল ক্লাব মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের দায়িত্ব নিয়ে সে ক্লাবটিকে মনজুর কাদের পরিণত করেছিলেন শীর্ষ ফুটবল ক্লাবে। এটা অনেকের কাছেই ছিল ঈর্ষণীয় ও অকল্পনীয়। সে সময়কার ফুটবলের জোয়ারের তোড়ে একঝাঁক তারকা ফুটবলারকে নিয়ে গঠন করেছিলেন ‘ড্রিম টিম’ মুক্তিযোদ্ধা। এনে দিয়েছিলেন নজরকাড়া সাফল্য। কয়েক বছরের বিরতি দিয়ে দায়িত্ব নেন আরেকটি ক্লাবের। আবারও নতুন দায়িত্ব, নতুন চ্যালেঞ্জ। সে চ্যালেঞ্জে আবারও জয়ী কাদের। শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে নিরন্তর সুকঠিন সাধনা করেন। ফলও পান হাতে নাতে। ‘শেখ জামাল’ নামটি যুক্ত হওয়ার আগে ধানম-ির এ ক্লাবটি আগে থেকেই ছিল একটি মাঝারি সারির ফুটবল দল। সেই মাঝারি সারির ক্লাবটি রাতারাতি বদলে যায় কাদেরের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায়। সঠিক, সুষ্ঠু পরিকল্পনা এবং যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই আসে একাধিক কাক্সিক্ষত সফলতা। ২০১০ মৌসুমে ঘরোয়া পেশাদার ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর ‘বাংলাদেশ লীগ’-এ প্রথমবার আত্মপ্রকাশ করেই বাজিমাত করে শেখ জামাল ধানম-ি শিরোপা করায়ত্তের মাধ্যমে।
×