ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাটিংয়ে পাকিস্তান, বোলিংয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখছেন টেস্টে বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার

টেস্ট সিরিজে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে ॥ সাকিব

প্রকাশিত: ০৬:২২, ২৭ এপ্রিল ২০১৫

টেস্ট সিরিজে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই  হবে ॥ সাকিব

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ওয়ানডে সিরিজে দুর্দান্ত সাফল্য এবং টি২০ ম্যাচেও পাকিস্তানকে হারিয়ে দেয়ার পর এখন দারুই আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ দল। তবে টেস্ট খেলা ভিন্ন স্বাদের। জিততে হলে স্বল্প পরিসরের ক্রিকেটে যে ধারাবাহিকতা রেখেছেন ক্রিকেটাররা সেটা ধরে রাখা জরুরী। এমনটাই মনে করেন বিশ্বসেরা টেস্ট অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। অভিজ্ঞতার দিক থেকে পাক টেস্ট দলের ব্যাটিং বেশ সমৃদ্ধ হলেও নিজেদের বোলিং শক্তিকে এগিয়ে রাখছেন তিনি। তবে টাইগার ব্যাটসম্যানরা যে ফর্মে আছে সেটা ধরে রাখতে পারলে টেস্ট সিরিজে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে আশাবাদ জানিয়েছেন সাকিব। রবিবার দুপুরে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে দলের অনুশীলনের আগে এসব কথা বলেন সাকিব। লঙ্গারভার্সনে এখনও সেভাবে সফল হতে পারেনি বাংলাদেশ দল। তবে ওয়ানডে কিংবা স্বল্পদৈর্ঘ্যরে ম্যাচে টাইগাররা অনেক বড় দলে পরিণত হয়েছে সেটার প্রমাণ এবার সফরকারী পাকিস্তান পেয়ে গেছে। দুই টেস্টের সিরিজে এবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভাল করার চ্যালেঞ্জ। আগে ৮ টেস্ট খেলে একটিতেও পাকদের হারাতে পারেনি কিংবা ড্র করতেও পারেনি বাংলাদেশ দল। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘আমার মনে হয় না, টেস্টে কোন লক্ষ্য চিন্তা করে আমাদের খেলা উচিত। আমরা আমাদের ওয়ানডে পারফর্মেন্সের আত্মবিশ্বাস নিয়ে যদি খেলতে পারি; আমার কাছে মনে হয় ভাল একটি সিরিজ হবে। যদিও ওদের ব্যাটিংয়ে কিছু অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে। কিন্তু আমাদের মনে হয় আমাদের বোলিং আক্রমণ ওদের বোলিং আক্রমণ থেকে অনেক ভাল। আবার আমাদের ব্যাটসম্যানরা এখন যে ফর্মে আছে, পারফর্মেন্সের বিচারে চিন্তা করি তাহলে আমাদের ব্যাটিংও ভাল। এছাড়া আমি বিশ্বাস করি আমাদের ফিল্ডিংটাও ওদের চেয়ে অনেক বেশি ভাল। আমার যদি ৩ বিভাগে ভাল খেলতে পারি, তাহলে প্রত্যাশা করতে পারি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।’ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোন টেস্টে এর আগে বাংলাদেশের বোলাররা ১০ উইকেট তুলে নিতে পারেনি। সাকিব এবার দলের বোলিং শক্তিটাকে অনেক এগিয়ে রেখেছেন। এবার টেস্টে পাকদের অলআউট করা সম্ভব হবে? এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘অনেক টেস্ট ম্যাচ আছে ১০ উইকেটও কেউ নিতে পারে না। নির্ভর করে উইকেট কেমন তার ওপর। সেই সঙ্গে আমাদের ভাল বোলিংও করতে হবে। বোলাররা যদি উইকেটে থেকে কোন সাহায্য আদায় করে নিতে পারে সেক্ষেত্রে সুযোগ থাকবে ওদের ২০ উইকেট তুলে নেয়ার।’ সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ দল। এরপর বিশ্বকাপ এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজ ছাড়া আন্তর্জাতিক কোন লঙ্গারভার্সন খেলেনি টাইগাররা। টানা ওয়ানডে খেলার পর পাকদের বিরুদ্ধে তাই ভাল করা নিয়ে শঙ্কা আছে। যদিও এর মধ্যে জাতীয় ক্রিকেট লীগে (এনসিএল) চারদিনের ম্যাচ খেলেছেন অনেকেই। এ কারণে সাকিব বলেন, ‘আমি তো বিশ্বাস করি অবশ্যই সম্ভব। দলে কয়েকটা পরিবর্তন আছে। কিছু নতুন খেলোয়াড় দলে এসেছে। দলে যারা ওয়ানডে খেলেছে তাদের তো একটা বিশ্বাস আছে, অবশ্যই ভাল করা সম্ভব। যারা নতুন এসেছে তাদেরও একটা বিশ্বাস থাকবে এই দলটা ভাল করছে, তাদের তো অবশ্যই পারফর্মেন্স করার তাড়না অবশ্যই থাকবে। আমি ছাড়ালঙ্গার ভার্সন খেলছে বোধ হয় সবাই। মনে হয় না সমস্যা হওয়ার কথা। চেষ্টা তো অবশ্যই করব এই ২ দিনে যতটা প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব। তারপরও টেস্টে ওটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে হবে। সবদিক থেকেই আমি বিশ্বাস করি অবশ্যই সম্ভব।’ ওয়ানডে সিরিজ ও টি২০ ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। টেস্ট সিরিজে খেলছেন না তিনি। এবার মুশফিকের অধীনে খেলবে দল। ভিন্ন স্বাদের নেতৃত্বে দলের ওপর বাড়তি কোন প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন না সাকিব। তিনি বলেন, ‘আমরা কখনও দলের ভেতরে এগুলো নিয়ে চিন্তা করি না। টেস্ট এক ধরনের খেলা, ওয়ানডে ভিন্ন ধরনের খেলা। এগুলো আসলে তুলনা করার কিছু না। দু’জনই ভাল করছে দলের হয়ে এবং দলের জন্য অবদান রাখছেন।’ একটা সময় টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের লক্ষ্য ছিল অন্তত শেষদিন অর্থাৎ পুরো পাঁচদিন খেলার। কিন্তু এখন টেস্ট ক্রিকেটেও লড়াই করার মনোভাব টাইগারদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘দিন দিন তো উন্নতি হবেই। এটা না আসাটাই অস্বাভাবিক। আমাদের মধ্যে বিশ্বাস জন্মাচ্ছে আমরা কমপক্ষে ঘরের মাটিতে যে কোন দলের সঙ্গে লড়াই করতে পারি।’ বেশিক্ষণ বোলিং করতে চান না সাকিব, তার লক্ষ্য যত দ্রুত সম্ভব পাকদের অলআউট করা। টেস্টে নবাগত তিন মুখ সৌম্য সরকার, লিটন দাস ও মোহাম্মদ শহীদের ভাল করার বিষয়েও আশাবাদ জানালেন সাকিব।
×