ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কোন শিশুই স্কুলের বাইরে থাকবে না ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২৭ এপ্রিল ২০১৫

কোন শিশুই স্কুলের বাইরে থাকবে না ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি শিশুর স্কুলে ভর্তি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে শিক্ষার উন্নয়নের পথে কোন বাধা সৃষ্টি না করতে রাজনীতিকদের প্রতি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছেলে এবং মেয়ে কেউই স্কুলের বাইরে থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট তহবিলের মূলধন বাড়াতে আগামী বাজেটে আরও অর্থ বরাদ্দ দেয়া হবে। তিনি রবিবার কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ট্রাস্ট থেকে ¯œাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃত্তির চেক প্রদানকালে এ কথা বলেন। খবর বাসসর। শেখ হাসিনা সচ্ছল ব্যক্তিদের এ ট্রাস্ট তহবিলে অনুদান দিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তাঁর সরকারের অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, এ ধরনের অনুদান কর রেয়াতের সুবিধা পাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা খাতকে আন্তর্জাতিকমানের সমপর্যায়ে আনতে বিগত ছয় বছরে এ খাতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এ লক্ষ্যে একটি প্রগতিশীল শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে এবং এতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষায় গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়া গণিত, ভাষা ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায়ও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ শিক্ষানীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দও দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষার জন্য স্বল্প আয়ের অভিভাবকের সন্তানদের লেখাপড়া অব্যাহত রাখতে তাদের সহায়তা প্রদানের কথা বিবেচনা করে শিক্ষা খাতে আর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ জন্য শিক্ষার্থীদের নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার আগে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক দেয়ার দায়িত্ব নিয়েছে সরকার। ২০১০ থেকে ২০১৫ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত এ খাতে ১৫৯ কোটি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হয়েছে, যা বিশ্বের জন্য এক বিস্ময়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কেবল অভিভাবকদের বোঝা কমায়নি একই সঙ্গে তা বিদ্যালয়ে ভর্তির সংখ্যা বৃদ্ধি করে এক কোটি ৬৯ লাখে উন্নীত হতে ভূমিকা রেখেছে। পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল ৬০ দিনের মধ্যে প্রকাশেরও পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সরকারের এসব পদক্ষেপে ঝরেপড়া ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে, শিক্ষার মান বেড়েছে এবং শিক্ষার্থীরা অধ্যয়নে মনোনিবেশে উৎসাহিত হয়েছে। তিনি বলেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের যতটা সম্ভব বর্তমান সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এজন্য পরীক্ষার ফলাফলের জন্য গ্রেডিং পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান ও ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূরুল আমিন বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট গঠনের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার ব্যয় যোগাতে অনেক অভিভাবকের অসামর্থ্যরে কথা বিবেচনা করে এ ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। এক হাজার কোটি সীড মানি নিয়ে গঠিত এ ট্রাস্টে মূলধন বাড়াতে চলতি বছর আরও বাজেট বরাদ্দ দেয়া হবে। এই ট্রাস্টের তহবিল আরও বড় হওয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি সচ্ছল ব্যক্তিদের এ তহবিলে অনুদান দেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করার পূর্বশর্ত হচ্ছে শিক্ষা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের সংবিধানে শিক্ষাকে অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং প্রাথমিক ও নারী শিক্ষা সম্পূর্ণ অবৈতনিক করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ¯œাতক পর্যায়ের অনেক শিক্ষার্থীর হাতে বৃত্তির চেক তুলে দিয়ে বলেন, চলতি বছর মোট এক লাখ ৭৪ হাজার ৪৪৬ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হবে। এর মধ্যে ছাত্র রয়েছে ১৫ হাজার ৯৫৭ জন। গত চার বছরে বৃত্তি হিসেবে ১৩ লাখ ৩৭ হাজার শিক্ষার্থীকে ২২৪৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৭৫ শতাংশ হচ্ছে ছাত্রী। এই বৃত্তি প্রচলন নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। প্রধানমন্ত্রী এ ট্রাস্ট ফান্ড থেকে স্কুলে ভর্তির জন্য গরিব শিক্ষার্থী এবং দুর্ঘটনায় আহতদের আর্থিক সহায়তা দিতে তাঁর সরকারের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন।
×