ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ক্ষমতায় রাখতে হবে ॥ নৌমন্ত্রী

বর্ণাঢ্য উৎসবে চট্টগ্রাম বন্দরের ১২৮ বছর পূর্তি উদযাপন

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২৬ এপ্রিল ২০১৫

বর্ণাঢ্য উৎসবে চট্টগ্রাম বন্দরের ১২৮ বছর পূর্তি উদযাপন

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়েছেন নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী ও জঙ্গীবাদীদের ক্ষমতায় আনলে ভাল কিছু আশা করা যায় না। উন্নয়নের স্বার্থে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকেই রাষ্ট্র ক্ষমতায় রাখতে হবে। শনিবার চট্টগ্রাম বন্দরের ১২৮ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত বন্দরের মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নৌ-মন্ত্রী এসব কথা বলেন। বন্দর কর্তৃপক্ষ দিনটিকে বরাবরের মতো এবারও পালন করে বন্দর দিবস হিসেবে। এ উপলক্ষে পুরো দিন বন্দর এলাকায় ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। সকালে জাতীয় পতাকা ও বন্দরের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ। এরপর অনুষ্ঠিত হয় মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে অনুষ্ঠান। নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, বিচি কলাগাছ লাগিয়ে সবরি কলা আশা করা যায় না। একইভাবে সন্ত্রাসী ও জঙ্গীবাদকে ক্ষমতায় আনলে ভাল কিছু হবে না। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে হবে এবং তাঁর হাত শক্তিশালী করতে হবে। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম নগরীর উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী সব সময় আন্তরিক। একনেকের এক সভায় প্রধানমন্ত্রী আমাকে বললেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অর্থের প্রয়োজন। বন্দরের কাছে কর্পোরেশনের কিছু পাওনা রয়েছে। এগুলো পরিশোধ করে দিন। প্রধানমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী বন্দর থেকে ১১২ কোটি টাকার একটি চেক প্রদান করা হয়, যা গ্রহণ করেন তৎকালীন মেয়র এম মনজুর আলম। তাকে অনুরোধ করা হয়েছিল নগরীর যানজট নিরসনে একটি ট্রাক টার্মিনাল প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু তিনি তা করলেন না। নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ বন্দর কর্তৃপক্ষের নয় বলে উল্লেখ করে নৌমন্ত্রী বলেন, তারপরও মাল্টিপারপাস ড্রেজার কিনে খাল খনন করা হলো। মহেশখালীর মুখে স্লুইচগেট নির্মাণের পরিকল্পনাও নেয়া হয়েছে। বক্তব্যে তিনি জনগণকে উন্নয়নের পক্ষে থাকার আহ্বান জানান। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে এ সভায় উপস্থিত ছিলেন বন্দর কর্তৃপক্ষের মেম্বার (হারবার এ্যান্ড মেরিন) শাহীন রহমান, মেম্বার (প্রকৌশল) জুলফিকার আজিজ, মেম্বার (প্রশাসন) নজরুল ইসলাম, পরিচালক (পরিবহন) গোলাম সরোয়ার, পরিচালক (প্রশাসন) জাফর আলম, পরিচালক (নিরাপত্তা) লে. কর্নেল আলমগীর কবির ও বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক। এর আগে সকালে বন্দর দিবসের অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। জাতীয় ও বন্দরের পতাকা উত্তোলনের সঙ্গে সঙ্গে বন্দরে অবস্থান করা সকল জাহাজ থেকে একযোগে হুইসেল বাজানো হয়। এদিন বন্দর ভবন ও বন্দর এলাকাকে সাজানো হয়। অনেকটা উৎসব আমেজে ছিলেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। দুপুরে আয়োজন করা হয় চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানের। এতে কর্মকর্তা কর্মচারী ও আমন্ত্রিত অতিথিরা ভোজে আপ্যায়িত হন। এছাড়া বন্দরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগেও বিশেষ আয়োজন ছিল। উল্লেখ্য, ১৮৮৭ সালে যাত্রা শুরু হয় চট্টগ্রাম বন্দরের। মাত্র চারটি সাধারণ জেটি নিয়ে যাত্রা করা এ বন্দরের এখন জেটির সংখ্যা ২০টি। সংযোজিত হয়েছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। বাংলাদেশের আমদানি রফতানি বাণিজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ পরিবাহিত হয় এই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতায় চট্টগ্রাম বন্দর ক্রমেই উচ্চতায় অধিষ্ঠিত হচ্ছে। অতিসম্প্রতি বিশ্বের ১০০টি সমুদ্র বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর ৮৬তম স্থান দখল করে নেয়। এর আগে ২০০৯ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ছিল ৯৮তম। বন্দর কর্মকর্তা, কর্মচারী, বন্দর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা ও বন্দর ব্যবহারকারীদের আন্তরিক প্রয়াস ও সহযোগিতায় চট্টগ্রাম বন্দর সমৃদ্ধির স্বর্ণদ্বারে বলে মন্তব্য করেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর নিজামউদ্দিন আহমেদ।
×