ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইতিহাসের প্রলয়ঙ্করী দশ ভূমিকম্প

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৬ এপ্রিল ২০১৫

ইতিহাসের প্রলয়ঙ্করী দশ ভূমিকম্প

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ নেপালে শনিবার ৭ দশমিক ৯ মাত্রার এক শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে। নেপালের পাশাপাশি বাংলাদেশ ও ভারতেও এটি আঘাত হানে। বিশ্বে এর আগেও বহুবার প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পের আঘাতে লাখ লাখ মানুষের জীবন দিতে হয়েছে। বিশ্বে ইতোপূর্বে সংঘটিত এমন ১০টি ভূমিকম্প : সেন্দাই, জাপান ॥ ২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের সেন্দাইয়ে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হন। এতে ব্যাপক আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি তো ছিল। ভূমিকম্পে বন্ধ করে দেয়া হয় জাপানের বড় আকারের একটি পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র। বায়ো-বায়ো, চিলি ॥ ২০১০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ৮ দশমিক ৮ মাত্রার এ ভূমিকম্পে কমপক্ষে পাঁচ শ’ ২১ জন নিহত হন। এ ছাড়া ৫৬ জন নিখোঁজ ও ১২ হাজার মানুষ আহত হন। আট লাখেরও বেশি মানুষ বাড়িছাড়া ও ১৮ লাখের বেশি মানুষ কোন না কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর চিলি সরকারের ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়, যা আর্থিক ক্ষতির দিক থেকে সর্বোচ্চ রেকর্ড। সুমাত্রা, ইন্দোনেশিয়া ॥ ২০০৫ সালের ২৮ মার্চ ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রায় ৮ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে ১ হাজার ৩১৩ জন নিহত হন। আহত হয় ৪০০ জনের বেশি। সুমাত্রা, ইন্দোনেশিয়া ॥ ২০০৪ সালের ২৬ মার্চ ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে দক্ষিণ এশিয়া ও পূর্ব আফ্রিকার ১৪টি দেশে ১৭ লাখ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ৯ দশমিক ১ মাত্রার এ ভয়াবহ ভূমিকম্পে ২ লাখ ২৭ হাজার ৯০০ জন নিহত হন। প্রাণহানির দিক থেকে এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি অভিশপ্ত ভূমিকম্প ছিল। র‌্যাট আইল্যান্ডস, আলাস্কা, যুক্তরাষ্ট্র ॥ ১৯৬৫ সালের ২ এপ্রিল আঘাত হানা এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৭। সুনামিতে আলাস্কার শেমিয়া দ্বীপে ১০ মিটার পর্যন্ত উঁচুতে ঢেউ আছড়ে পড়ে। কোন প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও ১০ হাজারেরও বেশি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রিন্স উইলিয়াম সাউন্ড, আলাস্কা, যুক্তরাষ্ট্র ॥ ১৯৬৪ সালের ২৮ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা রাজ্যের প্রিন্স উইলিয়াম সাউন্ডে ৯ দশমিক ২ মাত্রার এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট সুনামিতে নিহত হন ১২৮ জন। এ ভূমিকম্পে মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৩১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে। ভালদিবিয়া, চিলি ॥ ১৯৬০ সালের ২২ মে চিলির ভালদিবিয়া রিখটার স্কেলে ৯ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এ যাবতকাল পর্যন্ত রেকর্ড করা এটিই সর্বোচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প। ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে ১ হাজার ৬৫৫ জন নিহত ও ৩ হাজার মানুষ আহত হন। ভূমিকম্পে চিলিতে ৫৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ২০ লাখ লোক বাস্তুহারা হন। কামচাটকা, রাশিয়া ॥ ১৯৫২ সালের ৪ নবেম্বর ৯ মাত্রার ওই ভূমিকম্পের ফলে রাশিয়ান হাওয়াইয়ান দ্বীপ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ১০ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ সম্পদের ক্ষতি হয়। তবে সৌভাগ্যের ব্যাপার ছিল, ওই ভূমিকম্পে কারও প্রাণহানি হয়নি। অসম ও তিব্বত ॥ ১৯৫০ সালের ১৫ আগস্ট ভারতের অসমে ৮ দশমিক ৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত করে। বিধ্বংসী এ ভূমিকম্পে ব্যাপকভাবে ভূমিধস হয়। পার্শ্ববর্তী চীনের তিব্বতের পূর্বাঞ্চলে নিহত হন ৭৮০ জন। অসমে বহু মানুষের প্রাণহানির আশংকা করা হলেও শেষ পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। ইকুয়েডর ॥ ১৯০৬ সালের ৩১ জানুয়ারি ইকুয়েডরে ৮ দশমিক ৮ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট সুনামিতে ইকুয়েডর ও কলাম্বিয়ায় ১ থেকে দেড় হাজার মানুষ নিহত হয়। ওই সুনামির ঢেউ আছড়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রান্সিসকো উপকূল থেকে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ, এমনকি জাপান পর্যন্তও।
×