ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দু’দেশের বহুমাত্রিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণসহ ৫ বিষয় গুরুত্ব পাবে

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র চতুর্থ অংশীদারি সংলাপ ঢাকায় ২৯-৩০ এপ্রিল

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ২২ এপ্রিল ২০১৫

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র চতুর্থ অংশীদারি সংলাপ ঢাকায় ২৯-৩০ এপ্রিল

তৌহিদুর রহমান ॥ বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বহুমাত্রিক সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে আগামী ২৯-৩০ এপ্রিল ঢাকায় চতুর্থ ‘অংশীদারি সংলাপ’ শুরু হচ্ছে। এবারের সংলাপে ৫টি বিষয়ে অগ্রাধিকার দেবে ঢাকা। এসব বিষয়ের মধ্যে রয়েছে নিরাপত্তা সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণ, মার্কিন প্রেসিডেন্টের মিলেনিয়াম চ্যালেঞ্জ ফান্ডে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের সুযোগ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশী তৈরি পোশাক রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা। এ ছাড়া সংলাপে দুই দেশের অভিন্ন স্বার্থ নিয়ে আলোচনা হবে। বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তৃতীয় অংশীদারি সংলাপ (পার্টনারশিপ ডায়ালগ) গত বছর ২৮-২৯ অক্টোবর ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হয়। পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ওই সংলাপে অংশ নেয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে ঢাকায় চতুর্থ অংশীদারি সংলাপের জন্য ২৯-৩০ এপ্রিল নির্ধারণ করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছাড়াও বাণিজ্য, বিদ্যুত ও জ্বালানি, শ্রম ও জনশক্তি, স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এই সংলাপে অংশ নেবেন। এবারের সংলাপে নিরাপত্তা সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, উন্নয়ন সহযোগিতা, খাদ্য নিরাপত্তা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণ, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী, মার্কিন প্রেসিডেন্টের মিলেনিয়াম চ্যালেঞ্জ ফান্ডে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের সুযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়া নিয়েও আলোচনা হবে। তবে এসবের মধ্যে থেকে ৫টি বিষয়কে গুরুত্ব দেবে বাংলাদেশ। এই ৫টি বিষয়ের মধ্যে রয়েছে, নিরাপত্তা সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণ, মার্কিন প্রেসিডেন্টের মিলেনিয়াম চ্যালেঞ্জ ফান্ডে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের সুযোগ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক বেশ কয়েক বছর ধরে বহুমাত্রিকতা পেয়েছে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের অভিন্ন স্বার্থও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে বাংলাদেশ আরও ভাল অংশীদার হতে পারে। সে কারণে বহুমাত্রিক সম্পর্ককে একটি কাঠামোর আওতায় নিয়ে আসা প্রয়োজন। এ প্রেক্ষিতে এই সংলাপের আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। চতুর্থ অংশীদারি সংলাপে দুই দেশের সাধারণ মানুষ বিশেষ করে শক্তিশালী নাগরিক সমাজকে নিয়ে খাদ্য নিরাপত্তা, মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, জলবায়ু পরিবর্তন, গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণ, তারুণ্য ও নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়গুলোও আলোচনা হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিনিময়, নতুন নতুন উদ্ভাবনে উৎসাহ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে নতুন চিন্তাভাবনার ওপর জোর দেয়া হবে। সূত্র জানায়, এবারের অংশীদারি সংলাপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সুশাসন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, শ্রম অধিকার, অধিকতর আঞ্চলিক সম্পৃক্ততা ও নৌ-নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলোর ওপর জোর দেয়া হবে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, ইতোমধ্যেই তিনটি সংলাপ ওয়াশিংটন ও ঢাকায় সম্পন্ন হয়েছে। ওই তিনটি সংলাপে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন ইস্যুতে উভয় পক্ষ পরস্পরের মনোভাব, আকাক্সক্ষা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন নিয়ে পরস্পরের সদিচ্ছা এবং সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে একটি প্রাথমিক ধারণা লাভে সক্ষম হয়েছে। তিনটি সংলাপে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য, পরিবেশ, খাদ্য নিরাপত্তা, সন্ত্রাস নির্মূল ও শ্রম অধিকার বিষয়ে বিভিন্ন আলোচনা হয়েছে। তবে এখন চতুর্থ সংলাপ অত্যন্ত গঠনমূলক ও আরও বেশি কার্যকর হবে বলে আশা করছে উভয় দেশ। চতুর্থ অংশীদারি সংলাপে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিতে পারেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সহকারী সচিব ওয়েন্ডি শারমেন।
×