ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পাকিস্তান কোচ ওয়াকার

‘এ হার কষ্টের, যন্ত্রণার’

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২১ এপ্রিল ২০১৫

‘এ হার কষ্টের, যন্ত্রণার’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের বিপক্ষে হেরেই চলেছে পাকিস্তান। সেই সঙ্গে পাকিস্তান কোচ ওয়াকার ইউনুসকে নিয়ে সমালোচনাও চলছে। পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ ইউসুফ, আবদুল রাজ্জাকরা তো বলেই ফেলেছেন, ‘ওয়াকার (ইউনুস) ভাল বোলার হতে পারেন। কিন্তু ভাল কোচ নন। দলকে ঠিকমতো ম্যানেজ করতে পারছেন না।’ পাকিস্তানের সাবেক ‘গতি দানব’ ওয়াকার সব সমালোচনা মেনে নিচ্ছেন এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে হার নিয়ে সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলন শেষে এটাও বলে দিয়েছেন, ‘এ হার কষ্টের, যন্ত্রণাদায়ক।’ তবে এ হার নিয়ে বসে থাকতে রাজি নন ওয়াকার। তরুণ যে দলটি এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে খেলছে, তাদের নিয়েই সামনের পথ অতিক্রম করতে চান। এও বলে দিচ্ছেন ওয়াকার, ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে যে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কাছে হেরেছে পাকিস্তান, সেই হার ছিল অঘটন। বলেই এবার ১৬ বছর পর আবার টানা দুই ম্যাচে হার নিয়ে মুখ খুলেছেন। যন্ত্রণা পাচ্ছেন ওয়াকার। বলেছেন, ‘আসলে সেই সময়ের হার আর এই সময়ের হার আলাদা। এটি যন্ত্রণাদায়ক হার। কষ্টের হার। সবাইকে বুঝতে হবে দলটি নতুন, অধিনায়কও নতুন, একটি অনভিজ্ঞ দলকে উন্নয়নের চেষ্টা করা হচ্ছে। আর এখন ক্রিকেটই বদলে গেছে। আর ১৯৯৯ সালে যা হয়েছে সেই সময় দলটি অভিজ্ঞ ছিল। তাই সেই হারটাকে অঘটনই বলব। কিন্তু এখন যা হচ্ছে সেটি বলব ওরা (বাংলাদেশ) ভাল ক্রিকেট খেলছে। এখন এই দলটি নিয়ে আমরা কাজ করছি। আশা করি উন্নতি করবে দল, কিন্তু সময় লাগবে।’ তাহলে ওয়াকার কী এই তরুণদেন নিয়েই সামনে এগিয়ে যাবেন? পেছনের দিকে একটুও তাকাবেন না? পাকিস্তান কোচ বললেন, ‘এখানে পিছনে ফিরে তাকানোর কোন সময়ই নেই। এখন আমাদের সামনে যেতেই হবে। আপনি পিছনে ফিরে তাকালে আপনার কোন অস্তিত্বই থাকবে না। হ্যাঁ, এটি সত্য যে এই দল নিয়ে হার খুব যন্ত্রণার। কিন্তু আসলে এগিয়ে যাওয়ায় এখন আপনাকে নতুন নতুন ছেলে বেছে নিতেই হবে। এখন পজেটিভ ক্রিকেট খেলতে হবে। কারণ বর্তমানে ক্রিকেটের চরিত্রটাই বদলে গেছে। আপনি ক্রিকেটের এই পরিবর্তনটা বিশ^কাপে দেখেছেন। এখন আমি মনে করি আমাদের ক্রিকেটেও বড় ধরনের পরিবর্তন দরকার। আমরা অনেক লম্বা সময় ধরে রক্ষাত্মক ক্রিকেট খেলছি। সেখান থেকে বের হতে আমাদের আরও সময় লাগবে। নতুন ছেলেদের তৈরি করতে হবে যেন পজেটিভ ক্রিকেট খেলতে পারে। এখন ৩শ’র বেশি রান ক্রিকেটে খুবই সাধারণ ঘটনা। সব কিছুর বিবেচনায় এসব কিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে আমাদের একটু সময় তো লাগবেই।’ পাকিস্তানের ফাস্ট বোলারদের নিয়ে এক সময় গর্ব করা হতো। সেরা ১০ ফাস্ট বোলারের তালিকা করলে, সেখানে ওয়াকারের নামটিও থাকবে। কিন্তু এখন সেইরকম গর্ব করার মতো কিছু দেখা যাচ্ছে না। কোথায় কমতি দেখছেন আপনি? ওয়াকার বললেন, ‘একটি অন্যতম বিষয় আছে, সেটি ফিটনেস। বিশ^কাপের মতো এত বড় টুর্নামেন্ট থেকে ফিরেছে কিছুটা সমস্যা তো হবেই ফিটনেসে। আপনি তো আনফিটদের ফিট বলে চালিয়ে দিতে পারেন না। এরপর এত গরমের মধ্যে খেলতে আসা। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার পিচের সঙ্গে এখনকার পিচ এক নয়। তাই মানিয়ে নেয়াটাও বড় সমস্যা হচ্ছে। সবাই দেখতে পাচ্ছে যে আমরা ফিটনেসে পিছিয়ে আছি। কিছুটা ইনজুরি তো ধরে থাকবেই। কিন্তু এই নিয়ে আলোচনা যে কাকে খেলানো উচিত, কাকে উচিত না সেটি হচ্ছে। একটা বিষয় যে সমালোচনা করাটা খুব সহজ। কিন্তু আপনি যখন তরুণ একটি দলকে নিয়ে এগিয়ে যাওযার চেষ্টা করবেন তখন কিছুটা ছাড় দিতেই হবে।’ তাহলে কী ওয়াকার বলতে চাচ্ছেন পাকিস্তান দলের পারফর্মেন্স ভাল হচ্ছে? না ওয়াকার তা বলতে পারছেন না, ‘এখানে অস্বীকার করার কিছুই নেই যে শত ভাগ মার্ক দিতে পারছি না পারফর্মেন্সে। কারণ এতটাই তরুণ দল যে তাদের অনেক অভিজ্ঞতার অভাব রয়েছে।’ ওয়াকার দ্বিতীয়বার কোচ হলেন। একবার ২০১০ সালে কোচ হয়েছিলেন। ছিলেন ২০১১ সালের আগস্ট পর্যন্ত। সেই পদ থেকে নিজেই পদত্যাগ করেছেন। এবার যখন ২০১৪ সালের জুনে দায়িত্ব নিয়েছেন আবার, সেই থেকেই দলের ভরাডুবি হচ্ছে। হেরেই চলেছে পাকিস্তান। অভিজ্ঞ দল নিয়েও হারছে। আবার তরুণ দল নিয়েও হারছে। শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ হারের পর বিশ্বকাপে ধুকতে ধুকতে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে। বিশ্বকাপের পর যেই বাংলাদেশে খেলতে এসেছে পাকিস্তান, টানা দুই ওয়ানডে হেরেছে। দল খারাপ করবে, তাই বলে এতটা করবে; তা ওয়াকারও ভাবতে পারেননি। তাইত কষ্টে, যন্ত্রণায় ভুগছেন ওয়াকার।
×