ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযোদ্ধার সনদ চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন অশীতিপর মকবুল

প্রকাশিত: ০৫:২০, ২০ এপ্রিল ২০১৫

মুক্তিযোদ্ধার সনদ চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন অশীতিপর মকবুল

স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ ॥ মুক্তিযোদ্ধার সনদ চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন অশীতিপর বৃদ্ধ মকবুল হোসেন ওরফে মকবুল মেম্বর। ময়মনসিংহ সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের আজমতপুর গ্রামের বয়োবৃদ্ধ মকবুলের দিন কাটছে অর্ধাহার অনাহারে। অনেকটা মানসিক ভারসাম্যহীন মকবুলের শেষ চাওয়া-একটি সনদ ও স্বীকৃতি। এজন্য তিনি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আহ্বানে অন লাইনে আবেদনও করেছেন। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ দাপুনিয়া ইউনিয়ন কমান্ড সদর, ময়মনসিংহের সাবেক কমান্ডার আব্দুল লতিফ মকবুল হোসেনকে একজন বীরমুক্তিযোদ্ধার প্রত্যয়নপত্র দিয়ে তাঁর নামটি মুক্তিবার্তা ও মুক্তিযোদ্ধা গেজেটে তালিকাভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন। একই দাবি জানিয়েছেন, মকবুল হোসেনের সহযোদ্ধারাও। সহযোদ্ধা শহীদুর রেজা বাচ্চু জানান, একাত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তোরা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নেন মকবুল হোসেন। পরে ঢালু ক্যাম্পে আসার পর ১১ নম্বর সেক্টর কমান্ডার শহীদ কর্নেল আবু তাহেরর অধীনে কোম্পানি কমান্ডার আবুল হাশেমের নেতৃত্বে বিভিন্ন রণাঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। সহযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব জানান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিলেও কোন সনদ পাননি মকবুল হোসেন। মুক্তিবার্তা ও মুক্তিযোদ্ধার গেজেটেও নাম নেই মকবুলের! এ নিয়ে হতাশ মকবুলের কন্যা তানিয়া আক্তার আক্ষেপ করে জানান, সহযোদ্ধারা প্রমাণ দেয়ার পরও এখন সনদ আর স্বীকৃতির জন্য তাঁর বাবাকে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে। আবেদনও করেছেন অন লাইনে। অভিযোগ তালিকাভুক্তিসহ সহায়তার নামে ময়মনসিংহের এক সাবেক কমান্ডার তানিয়ার কাছ থেকে খরচাপাতিও নিয়েছেন। ময়মনসিংহ সদরের আজমতপুর গ্রামের একটি ছাপড়া ঘরে থাকছেন মকবুল। অনেকটা মানসিক ভারসাম্যহীন মকবুল চলতে ফিরতে আরেকজনের সাহায্য নেন। বল পান না পায়ে। চোখেও ঝাঁপসা দেখছেন। কম শুনছেন কানেও। আওয়ামী লীগ কর্মী ও সাবেক ইউপি মেম্বর মকবুলের মুখ থেকে যখন তখন জমাট বাঁধা রক্ত বের হচ্ছে। নানান জটিল রোগে আক্রান্ত মকবুল অর্থাভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও করাতে পারছেন না। সন্তানরা বাড়ির বাইরে থাকায় দেখাশুনারও তেমন কোন নিকটজন ও স্বজন নেই মকবুলের। স্বামী সন্তান আর সংসার সামলিয়ে ময়মনসিংহ শহর থেকে কন্যা তানিয়াই এখন ভরসা মকবুলের।
×