ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

একটানা তেরো ঘণ্টার বেশি বিদ্যুতবিহীন গাইবান্ধা

প্রকাশিত: ০৫:২০, ২০ এপ্রিল ২০১৫

একটানা তেরো ঘণ্টার বেশি  বিদ্যুতবিহীন গাইবান্ধা

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা, ১৯ এপ্রিল ॥ গাইবান্ধা জেলা শহর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় শনিবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে রবিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত একটানা সাড়ে ১৩ ঘণ্টা বিদ্যুত না থাকায় জনজীবনে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। শনিবার রাতে সামান্য ঝড়-বৃষ্টি হলেই বিদ্যুত চলে যায় এবং দীর্ঘক্ষণ তা বন্ধ থাকে। এছাড়া সম্প্রতি প্রতিদিন ঘনঘন বিদ্যুতের যাওয়া-আসা এবং লোভোল্টেজ সমস্যা বিরাজ করছে। ফলে ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতিসহ বৈদ্যুতিক বাল্ব ক্ষতি হচ্ছে ব্যাপকহারে। এ অবস্থা গাইবান্ধায় নতুন নয়। সামান্য ঝড়-বৃষ্টিতেই একটানা ১৮ থেকে ২৪ ঘণ্টাও বিদ্যুত বন্ধ থাকার নজিরবিহীন এ অবস্থা বিরাজ করছে বিগত ১০ বছর ধরে। অথচ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড এব্যাপারে কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। গাইবান্ধায় বিদ্যুত সরবরাহ কেন্দ্রের সকল টেলিফোন, মোবাইল, এমনকি নির্বাহী প্রকৌশলীর মোবাইলে যোগাযোগ করেও সর্বক্ষণ তা বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে কখন বিদ্যুত আসবে আর কেনইবা এই বিদ্যুত বিভ্রাট সংঘটিত হলো সে তথ্য জানার কোন উপায় নেই। এছাড়া বিদ্যুত সরবরাহ ব্যবস্থার মেরামত বা সংস্কারের ক্ষেত্রেও বিদ্যুত বন্ধ রাখার পূর্বে মাইকিং করে প্রচারের বিধান থাকলেও তা প্রতিপালিত হচ্ছে না। তদুপরি বিদ্যুত সরবরাহ লাইনের আশপাশের গাছের ডালপালা কর্তৃন করার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ থাকলেও ডালপালা না কেটেই তা লুটপাট করা হচ্ছে। ফলে সামান্য ঝড়-বৃষ্টিতেই বিদ্যুত সরবরাহ লাইন ও ট্রান্সফরমারের ওপর গাছের ডালপালা ভেঙ্গে পড়েও প্রতিনিয়ত বিদ্যুত বিভ্রাট ঘটাচ্ছে। বিদ্যুত বিভ্রাটের কারণে জেলার সেচনির্ভর ইরি-বোরো জমির ক্ষেতে মারাত্মক সেচ সঙ্কট বিরাজ করছে। ফলে এ বছর বিদ্যুতনির্ভর ইরি-বোরো চাষ প্রকল্পের আওতার জমিতে ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে হ্রাস পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে বিদ্যুত বিভ্রাটের কারণে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের লেখাপড়াও মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। এছাড়া সীমাহীন বিদ্যুত বিভ্রাট এবং সীমাহীন লোডশেডিংয়ের কারণে গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে প্রকাশিত নিয়মিত ৪টি দৈনিক ও ৫টি সাপ্তাহিক পত্রিকার প্রকাশনা ব্যাহত হচ্ছে। শহরের চাইতে বিদ্যুত বিভাগের আওতাধীন গ্রামগুলোতে বিদ্যুত সরবরাহ পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। গ্রামগুলোতে একটানা ৩ থেকে ৯ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ থাকে। কোন কোনদিন পল্লী অঞ্চলে ২৪ ঘণ্টায় ২ থেকে ৩ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুত থাকে না। এব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলীসহ বিদ্যুত বিভাগের অনুসন্ধান সংক্রান্ত টেলিফোনগুলোতে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
×