ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদা যতই মাঠে নামুন, জনগণ ব্যালটে নাশকতার জবাব দেবে ॥ তোফায়েল

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ২০ এপ্রিল ২০১৫

খালেদা যতই মাঠে নামুন, জনগণ ব্যালটে নাশকতার জবাব দেবে ॥ তোফায়েল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বার্ন ইউনিটের কান্না থামেনি, তাই খালেদা জিয়া সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে যতই মাঠে নামুন না কেন, জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে তার নাশকতার জবাব দেবে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি আরও বলেন, সিটি নির্বাচনে দল সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে নেমে বিএনপি নেত্রী কার্যত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল বলে স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি (খালেদা) নাশকতা চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছেন, মানুষের ক্ষতি করেছেন, এখন তিনি যতই মাঠে নামেন না কেন জনগণ ভোটের মাধ্যমে তার সন্ত্রাসী, জঙ্গী তৎপরতা ও নাশকতার জবাব দেবে। গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন করলে তিনি লাভবান হতেন। রবিবার সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ সময় মধ্যাহ্ন ভোজেও অংশগ্রহণ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। এর আগে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি ৯২ দিন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের পর তিনি কোর্টে আত্মসমর্পণ করেছেন, দলীয় কার্যালয় ছেড়ে নিজের বাড়িতে চলে গেছেন, পল্টন অফিসে গিয়ে নির্বাচনের পক্ষে কাজ করছেন, আর এখন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন, কিন্তু বার্ন ইউনিটের হাহাকার এখনও থামে নাই। এর জবাব জনগণ দেবেন। তবে খালেদা জিয়া নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারেন কী না এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া দলের প্রধান কিন্তু তিনি মন্ত্রী নন, এমপি নন, তাই তিনি এই সুযোগ নিচ্ছেন। তবে সরকারে থেকেও যেসব আওয়ামী লীগ নেতারা সরকারী সুযোগ-সুবিধা নেন না তাঁরা ইচ্ছে করলে এই নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন। সজীব ওয়াজেদ জয় ইচ্ছে করলে এই সুযোগ নিতে পারেন। কারণ তিনি সরকারী কোন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেন না। বিএনপি জোটের কর্মসূচী চলাকালে গাড়িতে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগসহ নাশকতার নানা ঘটনায় ১৩০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়, অগ্নিদগ্ধ হন সহস্রাধিক মানুষ। এ প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, তাই সিটি নির্বাচনে জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে এর জবাব দেবে। চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায়। তাদের শিল্পকারখানাগুলো বাংলাদেশে রি-লোকেট করতে আগ্রহী। তাই তাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে (স্পেশাল ইকোনমিক জোন) জায়গা দেয়া হবে। বাংলাদেশে বিনিয়োগে বিদেশী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে স্থায়ীভাবে জায়গা বরাদ্দ দিতে সরকার ১৭টি এলাকাকে চিহ্নিত করেছে, যাকে স্পেশাল ইকোনমিক জোন বলা হচ্ছে। তিনি বলেন, চীনে রফতানির ক্ষেত্রে বেশিরভাগ পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়। সব পণ্যে এ সুবিধা পেতে একটি চুক্তি করার কথা বলা হয়েছে রাষ্ট্রদূতকে। তিনি আরও বলেন, মুন্সীগঞ্জের বাউশিয়ায় পোশাক শিল্প পার্কে আড়াইশ’ শিল্প কারখানা স্থাপন করা হবে। সেখানে আড়াই লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে। এ পার্ক স্থাপন সহায়তা দেবে চীন। এছাড়া পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা করার জন্য একটি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে, সেখানে চীন এতে অর্থায়ন করবে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা থাকলে বিদেশীদের কাজে ‘ব্যাড মেসেজ’ যায়। চীনের রাষ্ট্রদূত আমাকে বলেছেন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হয়েছিলেন। এখন স্থিতিশীলতা আসায় তারা আবার বিনিয়োগে আগ্রহী। এর আগে, আগামী জুন পর্যন্ত কাজ বেঁধে দিয়ে মন্ত্রণালয়ের অধীন চা বোর্ড, ট্যারিফ কমিশন, অফিস অব দি রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ এ্যান্ড ফার্মস, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি), আমদানি ও রফতানি নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেন বাণিজ্য সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন। এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চুক্তির পর রবিবার এ চুক্তি হলো। এর মাধ্যমে কাজের অগ্রগতি ও জবাবদিহিতা বাড়বে।
×