ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সেমিনারে জানালেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন

বাংলাদেশকে আগামীতেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা দেবে যুক্তরাজ্য

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৯ এপ্রিল ২০১৫

বাংলাদেশকে আগামীতেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা দেবে যুক্তরাজ্য

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মসূচী সফল করতে যুক্তরাজ্য সরকার পাশে থাকবে। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে (এমডিজি) বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই সফল হয়েছে। আগামী দিনে জাতিসংঘের নতুন লক্ষ্যমাত্রা কর্মসূচীতেও বাংলাদেশকে সহায়তা করবে যুক্তরাজ্য সরকার। শনিবার রাজধানীতে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে ‘আমাদের শিশু, আমাদের ভবিষ্যত’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা পেইন্টেড চিলড্রেন। এতে বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের পরিচালক শিপ্রা হাফিজা, সাংবাদিক জাহীদ রেজা নূর, ইউএনডিপির কর্মসূচী পরিচালক কামাল চৌধুরী, পেইন্টেড চিলড্রেনের পরিচালক নাজিনুর রহিম, অভিনেতা জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, খেলাঘর পরিচালক ডাঃ লেনিন চৌধুরী প্রমুখ। সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন বলেন, বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছে। এই সাফল্য ধরে রাখতে হবে। বাংলাদেশ সরকার এমডিজির বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সফল হয়েছে। মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু হার কমিয়ে আনতে বাংলাদেশ বিশেষ অগ্রগতি লাভ করেছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর অক্টোবরে লন্ডনে গার্ল সামিটে নারীর ক্ষমতায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমরা তার প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানাই। তিনি বলেন, শিশুর বিকাশের জন্য ভাল মায়ের প্রয়োজন। মা-ই শিশুর বিকাশে বড় ভূমিকা রাখেন। এছাড়া মা শিক্ষিত হলে, শিশুও শিক্ষার সুযোগ পেয়ে থাকে; এটা সকলেরই মনে রাখতে হবে। শিপ্রা হাফিজা বলেন, সম্প্রতি দেশে রাজনৈতিক সহিংসতা চলাকালে শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শিশুর পরিবারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই শিশুর বিকাশে রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হবে। তিনি বলেন, বিয়ের বয়স কমানোর জন্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিয়ের বয়স ১৮ থেকে ১৬ বছরে কমিয়ে আনা হলে আমরা আরও পিছিয়ে যাব। এতে বাল্যবিয়ের প্রবণতাও বাড়বে বলে তিনি মন্তব্য করেন। জাহীদ রেজা নূর বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া শিশুর বিকাশ সম্ভব নয়। এদেশে এখন শিশুর বিকাশ নানাভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শিশুর কাঁধে ভারি ব্যাগের বোঝা তুলে দেয়া হচ্ছে। শিশুকে খেলার মাঠ দেয়া হচ্ছে না। আবার একই সঙ্গে শিশুকে ল্যাপটপ-মোবাইলও দেয়া হচ্ছে। এসবের মধ্য দিয়ে শিশুর বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে। ডাঃ লেনিন চৌধুরী বলেন, শিশুকে বিভিন্ন মাধ্যমে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। এদেশের শিশুর বড় একটি অংশ মাদ্রাসায় শিক্ষালাভ করছে। তারা মূলধারার শিক্ষা থেকে ছিটকে পড়ছে। এসব শিশু মাদ্রাসায় কি পড়ছে, সেটা অনেকেই জানেন না। দেশের সকল শিশুকেই শিক্ষার মূলধারায় নিয়ে আসতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, প্রান্তিক শিশু এখনও শিক্ষার আওতার বাইরে। অনেকেই এখনও শিক্ষার সুযোগবঞ্চিত। আবার গরিব মানুষের ছেলেমেয়ে কওমি মাদ্রাসায় পড়ছে। এসব মাদ্রাসায় সরকারের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। সেখানে কি পড়ানো হয়, তা অনেকেই জানে না। আর এসব মাদ্রাসার শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হয়। তাই শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন নিয়ে এখনও অনেক কিছুই করতে হবে। নাজিউর রহিম বলেন, সম্প্রতি রাজনৈতিক সহিংসতায় ৪৬ শিশু নিহত হয়েছে। এছাড়া অনেক শিশুই আগুনে পুড়ে আহত হয়েছে। এসব শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। আবার অনেক সময় দেখেছি, এই শিশুকে রাজনৈতিক কর্মসূচীতে ব্যবহার করা হচ্ছে। শিশুকে রাজনৈতিক কর্মসূচীতে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
×