ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বেকার জেলে ও ভূমিহীনরা শ্যালো ইঞ্জিন বসিয়ে আবাদ করছেন

মরা পদ্মায় বোরো চাষ

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ১৮ এপ্রিল ২০১৫

মরা পদ্মায় বোরো চাষ

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ রাজশাহীর পদ্মা নদীর বিস্তীর্ণ বুকজুড়ে এখন সবুজের সমারোহ। এক সময়ের ক্ষরস্রোতা নদী এখন পানিশূন্য। নদীতে হচ্ছে বোরোর চাষাবাদ। স্থানীয় কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী শুধু রাজশাহীর গোদাগাড়ী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহানন্দা পর্যন্ত পদ্মা নদীতে এবার অন্তত ১৫ হাজার কৃষক নদীতে শ্যালো ইঞ্জিন বসিয়ে ভূ-গর্ভস্থ পানি তুলে চাষ করেছেন বোরোর আবাদ। বোরোর পাশাপাশি অন্যান্য ফসলও চাষ করছেন স্থানীয় কৃষকরা। পদ্মা ও মহানন্দা তীরবর্তী বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এক সময় পদ্মা ও মহানন্দা নদীর পানি দিয়ে নদীর দুই পারের জমিতে ফসল ফলত। কিন্তু এখন নানা কারণে শুষ্ক মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে পানিশূন্য হয়ে পড়ে পুরো পদ্মা-মহানন্দা। নদীর সঙ্গে সঙ্গে তাই এখন পরিবর্তন এসেছে নদী পারের বাসিন্দাদের জীবন ও জীবিকায়। নদীতে পানি না থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার জেলে ও মাঝি। এদের অনেকেই এখন বাধ্য হয়ে শুকনো নদীগর্ভে শ্যালো ইঞ্জিন বসিয়ে ধান চাষ করছেন। তবে পদ্মা-মহানন্দায় শুধু জেলে ও মাঝি নয়, ধান চাষে কোমর বেঁধে নেমেছেন ভূমিহীন পরিবারও। কোথাও কোথাও গড়ে কৃষক সমবায় সমিতির মাধ্যমে চাঁদা তুলে একশ’ থেকে দেড়শ’ জনের গ্রুপে ভাগ হয়ে একযোগে চাষ করেছেন বোরো ধান। বর্তমানে রোপন পরবর্তী পরিচর্চায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন নদীর বুকের চাষীরা। আর কয়েকদিনের মধ্যেই হাওয়ায় দোলা দেবে সোনালী শীষ। তখন সোনালী ঝিলিকে ভরে উঠবে পদ্মা-মহান্দার বুক। এখন নদীর বুকে দোল খাচ্ছে সবুজের সমারোহ। যতদূর চোখ যায়, শুধু সবুজ আর সবুজ। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, তিনি চলতি বোরো মৌসুমে পদ্মা ও মহানন্দা নদীর বুকে ব্রি-২৮ ও ব্রি-৩২ সহ স্থানীয় কয়েকটি জাতের ধান চাষ হয়েছে। প্রায় ১৫ হাজার চাষী নদীর প্রায় ২ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে এসব ধান চাষ করেছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক হযরত আলী বলেন, প্রাকৃতিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে রাজশাহী অঞ্চলের কৃষিতেও পরিবর্তন এসেছে। আগে পদ্মায় মানুষ মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখন পানি নেই, তাই চলছে ধান চাষ।
×