ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সম্পাদক সমীপে

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ১৮ এপ্রিল ২০১৫

সম্পাদক সমীপে

বাংলা নতুন বছর বরণ করতে আমরা কত না আয়োজন-অনুষ্ঠান করে থাকি। সর্বস্তরের মানুষ এদিন সমবেতভাবে রাস্তায় নেমে পড়ে। উদ্দেশ্যহীন ছুটে চলার মাধ্যমে মানুষ খুঁজে পায় অনাবিল আনন্দ। বৈশাখের প্রথম দিনের চরম দাবদাহে কেউ কোন ক্লান্তি অনুভব করেন না। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্ভূদ্ধ হয়ে মানুষ যখন বর্ষবরণ এক অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় একত্রিত হয়ে সমতার ভিত্তিতে সব ভেদাভেদ ভুলে নতুন দিনের স্বপ্নে বিভোর হয়ে পদযাত্রায় আসেন তখন মানুষরূপী একধরনের পশু রাস্তায় নেমে পড়ে। এই নরপশুরা একে একে সুস্থ চিন্তা-চেতনায় ছেদ ফেলে নারীদের বস্ত্রহরণ করে এক পাশবিক উন্মাদনায় মেতে উঠে। এরা পরাভূত করে ফেলে মানুষের সভ্যতাকে। বছরের প্রথম দিনে এই ধরনের বর্বরতা অবশ্যই ধিক্কারজনক। এরা বিকৃত রুচির অধিকারী। এরা সমাজ-সভ্যতাকে পদদলিত করতে দ্বিধাবোধ করে না। এই বর্বর ঘটনাটি যখন ঘটে, তখন এর আশপাশেই বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে আসা অনেক তরুণ উপস্থিত ছিল। যে স্থানে বস্ত্রহরণের মতো ধিক্কারজনক ঘটনাটি ঘটে সেই স্থান টিএসসি মোড়। যেখানে রাজু ভাস্কর্যটি আছে তারুণ্যের নানা সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে। নারী-পুরুষ একসঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে দীপ্ত পদক্ষেপে হেঁটে যাওয়ার যে সাধনা একাগ্রতা তার এক অনির্বাণ প্রতীক এই রাজু ভাস্কর্য। অথচ এই স্থানটি সেদিন কলঙ্কিত হয়েছে। গুটিকয়েক নরপশু যখন তরুণী ও নারীদের বস্ত্রহরণ করছিল তখন অন্যান্য তরুণ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে নি। বাংলাদেশের ইতিহাস বলে, সব অন্যায় আর অবিচারের দেয়াল ভেঙ্গে ফেলেছে এই তরুণরাই। অথচ সেই তরুণরা নির্বিকার ছিল এমন এক স্থানে যেখানে সব আন্দোলন আর সংগ্রামের সূত্রপাত হয়েছে। এভাবে স্থানটি কলঙ্কিত করল যারা, তারা যতোটা অপরাধী ততটাই অপরাধী সেখানে যাদের সামনে ঘটেছে তারাও। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অনেক প্রশ্ন। দুঃখজনক কোন ঘটনা নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন হয়। কিন্তু আগের নারী নির্যাতনের ঘটনার অপরাধীদের কখনই বিচার বা শাস্তির কথা শোনা যায় নি। দেশের সবচেয়ে উচ্চতর বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এই ধরনের ঘটনায় প্রতিবাদে ছাত্রসমাজকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসা উচিত ছিল। লিটন নন্দীর হাতের সঙ্গে অন্যান্য প্রতিবাদীরা যদি হাত মেলাত তাহলে লিটন নন্দীর হাত নয়, নরপশুদের হাত ভেঙ্গে যেত। মনে রাখতে হবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদের কোন বিকল্প নেই। সুফিয়ান কবির আসাদ এভিনিউ, ঢাকা। শিক্ষা হোক দুর্নীতিমুক্ত অতি দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা বর্তমানে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির কবলে। চরম বিশৃঙ্খলা ও নিয়মনীতিহীন এক পরিবেশে ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়া শিখছে। বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষে লেখাপড়া নেই বললেই চলে। অধিাকংশ শিক্ষক প্রাইভেট পড়ানোর জন্যই বেশি ব্যস্ত থাকেন। শিক্ষকরাও আজকাল তাদের মহান পেশার কথা ভুলে গিয়ে দ্রুত অর্থবিত্তের মালিক হতে চান। ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। এর ফলে অভিভাবকরাও দিশেহারা কারণ প্রতিটি বিষয়ের বা একাধিক প্রাইভেট শিক্ষক রাখা অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়। অথচ যে বিষয়ে প্রাইভেট পড়াবে না সে বিষয়েই ছাত্রছাত্রীরা কম নম্বর পাবে অথবা ফেল করিয়ে দেয়া হবে। তাই সব কিছু জেনে শুনেও অভিভাবকরা সন্তানদের দুর্নীতির মাধ্যমেই পরীক্ষায় পাসের ব্যবস্থা করছেন। বর্তমানে বোর্ডের ফাইনাল পরীক্ষার চেয়ে স্কুলের পরীক্ষায় পাস করাটাই সবচেয়ে কঠিন হয়ে পড়েছে। আর এখানেই চলে শিক্ষার ব্যাপক বাণিজ্য। এখানে ছাত্রছাত্রী অর্থাৎ ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিদ্যালয় থেকেি দুর্নীতির শিক্ষা পেয়ে যাচ্ছে। যা দেশ ও জাতির জন্য এক ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে। বাজেটে শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয় কিন্তু এর বিনিময়ে পাই অস্বাভাবিক পাসের হার আর বছরের প্রথম দিনে বিনামূল্যে বই। আবার বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে বছরের প্রথম দিনে একটি বড় অঙ্কের উন্নয়ন ফিস জমা না দিলে বিনামূল্যের বই দেয়া হয় না। অনেক ছাত্রছাত্রীকেই দেখা যায় বই না নিয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরেছে কারণ তাদের মা-বাবা বছরের প্রথম দিনেই টাকার যোগাড় করতে পারেননি। দেশের ভবিষ্যত মঙ্গলের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত রাখতেই হবে। শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বাড়িয়ে দিতে হবে। শিক্ষাকে সকল রাজনীতির উর্ধে রাখতে হবে। তা হলেই শিক্ষার মান বাড়বে আর ভবিষ্যত প্রজন্ম সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে। বিপ্লব ফরিদপুর। বিদ্যুত সরবরাহ বাড়ান বিদ্যুত উৎপাদন বৃদ্ধি করা প্রয়োজন, বিদ্যুত উৎপাদন বৃদ্ধি করে লোডশেডিং কমানো হোক। দেশব্যাপী যে পরিমাণ বিদ্যুত প্রয়োজন সেই পরিমাণ বিদ্যুত উৎপাদন করা হোক। অসহ্য গরমে বিদ্যুতের লোডশেডিং, জনজীবন অসহ্য যন্ত্রণায় ভুগায়, তাই অসহ্য গরমে স্বস্তি পেতে হলে বিদ্যুতের প্রয়োজন অপরিহার্য। আর দেশের যেসব জায়গায় এখনও বিদ্যুত পৌঁছেনি, সেসব এলাকায় বিদ্যুত পৌঁছে দেয়া হোক। আর যাঁরা বিদ্যুত ব্যবহার করে থাকেন তাঁরা প্রত্যেকে বিদ্যুত অপচয় রোধ করুন এবং বিদ্যুত ব্যবহারে সবাই সতর্কতা অবলম্বন করুনÑ দেশ, পৃথিবী এবং মহাবিশ্বের সব মানুষের কল্যাণে। দিপু ও আশরাফ ঢাকা। ভারতীয় ভিসায় আবারও দুর্ভোগ ভারতে ভ্রমণকারী বাংলাদেশীদের ই-টোকেনের মাধ্যমে ভিসা প্রাপ্তির যে বিড়ম্বনা তা কোনভাবেই কমেনি বরং এক্ষেত্রে দুর্নীতি ও প্রতারণা বেড়েছে। কারণ দেশের শতকরা ৯৬ ভাগ লোকই টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করে থাকে। তাদের ক্ষেত্রে যে ই-টোকেন পদ্ধতি চালু রয়েছে তার কোন সহজীকরণ করা হয়নি বরং জটিলতা আরও বেড়েছে। টুরিস্ট ভিসার আবেদনকারীরা টাকা না দিলে ৩-৪ মাসের আগে ই-টোকেন পায় না। এজন্য এক শ্রেণীর দালালদের সঙ্গে ভারতীয় ভিসা সেন্টার, ইন্ডিয়ান স্টেট ব্যাংক ও ভারতীয় হাইকমিশনের এক শ্রেণীর কর্মকর্তা ও কর্মচারীরু যোগসাজশে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে তারিখ ও সময় সহজে পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে সেবার মান তো নেই বরং আকস্মিকভাবে ভিসার ফি ৪০০ টাকার স্থলে ৬০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এতে জনগণ ক্ষুব্ধ। উল্লেখ্য, ই-টোকেন প্রাপ্তির ব্যাপার এখন নির্ভর করছে দালালদের ওপর। এমনও শোনা যায়, টাকা না দিলে বা দালাল না ধরলে ভারতীয় হাইকমিশন প্রতিদিন শত শত লোককে বিনা কারণে ভিসা দেয় না বা প্রত্যাখ্যান করে থাকে। যা বেদনাদায়ক ও অমানবিক। এতে ভারতীয় হাইকমিশনের দুর্নাম হচ্ছে। প্রয়োজন জরুরীভিত্তিতে ভারত ভ্রমণে ই-টোকেন পদ্ধতি প্রত্যাহার করে টুরিস্ট ভিসা পদ্ধতি সহজীকরণের মাধ্যমে দুর্ভোগ ও বিড়ম্বনা লাঘব করা। মাহবুবউদ্দিন চৌধুরী ফরিদাবাদ, ঢাকা। রীতিবিহীন নীতি নাম রাজনীতি। রীতি-নীতিবিহীন ফাঁকি-ঝুঁকিতে ভরপুর। বলতে গেলে দেশের দশ আনা ব্যক্তি সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ছয় আনা লোক যখন যেমন তখন তেমন। জেনে না জেনে, বুঝে না বুঝে ভোট প্রয়োগ করে থাকেন। কতিপয় রাজনীতিক জনগণকে ধোকা দিয়ে, যন্ত্রণার ফাঁদে ফেলে, জীবনকে বিপন্ন করার ভয় দেখিয়ে, কালো টাকা বিতরণ করে, অস্ত্রের ঝনঝনানি শব্দে কম্পন সৃষ্টি করে, ভিনদেশের সহায়তায় পেছনের দরজা দিয়ে, হাঁ-না ভোট দিয়ে খাকি রঙের পোশাক বদলিয়ে ক্ষমতায় আসেন। পরে ক্ষমতা থেকে বিদায় নেন। ফ্রেস ও স্বচ্ছ রাজনীতি যা চলমান রাখার চেষ্টা হচ্ছে তাকে অস্বচ্ছ বানানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত তারা। পলিটিক্স মিথ্যার মাথা ভেঙ্গে সত্যকে আঘাত করছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণাকারী, তিনি পরাধীনতা থেকে দেশকে মুক্ত করেছেন, তিনি জাতির পিতা। দিনের আলোর মতো সত্য ও পরিষ্কার জেনেও ক্ষমতায় এসে অস্বীকার করেন। এক শ্রেণীর মুক্তিযোদ্ধা যারা বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন দেশের পবিত্র খাজাঞ্চি-খানা থেকে ভাতা গ্রহণ করে সংসার চালান তারাও অস্বীকার করেন। জাতির পিতার মাজার জিয়ারত করতে লজ্জবোধ করেন। ওই শ্রেণীর মুক্তি সনদ থাকে কি করে? ওদের মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। ওদের প্রদত্ত ভাতার টাকা এক সময় সরকারকে ফেরত দিতে হবে ব্যবস্থা না নিলে। সঠিক মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী গঠন করা যেতে পারে। অন্যথায় শব্দটির পরে ‘অবসরপ্রাপ্ত’ লেখার যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে। রীতি আর নীতির মধ্যে সঙ্গতি থাকতে হবে। মেছের আলী শ্রীনগর। আর নয় মাদক শখ করেও কেউ মাদক সেবন করবেন না। মাদক মানুষের জীবনে যেটুকু সুখ শান্তি দান করে তার চেয়েও অধিক বেশি দুঃখ অশান্তি দান কওে, মাদক সেবনকারীরা সুখী মানুষের অভিনয় করলেও বাস্তবে তারা সুখী হতে পারে না। মাদক আসলে মানব জাতির শত্রু! মাদক মানুষকে দিয়ে সুকর্মের চেয়ে কুকর্ম বেশি করায়, তাই মাদক সেবনকারীরা সুফলের চেয়ে কুফল বেশি পেয়ে থাকে। মাদক মানব সংসারে দুঃখ অশান্তির আরেক নাম। মাদক সেবনকারীরা মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-পুত্র-কন্যা ও আত্মীয়স্বজন সবার কাছ থেকে ভালবাসার চেয়ে বেশি ঘৃণা পেয়ে থাকে। যারা হেরোইন, ইয়াবা, মদ, ফেনসিডিল সেবন করে থাকে তারা আমার এই লেখার সত্যতা যাচাই করে দেখবে, যদি আমার এই লেখার সঙ্গে কারও জীবনের সঙ্গে মিলে যায় তাহলে আমার লেখা এই চিঠিপড়ার পর থেকে আর কখনই মাদক সেবন করবে না-দেশ এবং মহাবিশ্বের সব মানুষের কল্যাণে। মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম চুড়াইন, নবাবগঞ্জ। অভিনন্দন বেগুনবাড়ী সড়কে ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুকে যখন এলোপাতাড়ি কুপাচ্ছিল তখন কোন পুরুষ কোন ভূমিকা নেয়নি। এক নারী ওয়াশিকুরকে বাঁচানোর জন্য চিৎকার করেন। তাঁর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। আশপাশের লোক আসে মানে কোন পুরুষ আসেনি, এসেছিলেন তিনজন হিজড়া। এই তিন হিজড়াই হত্যাকারীদের ধরে আটকে রাখে। তাহলে দেখা গেল এই মহতী কাজটি কারা করেছে? এক্ষেত্রে দেখা গেল বাবুকে রক্ষা করার জন্য সমাজের নির্যাতিত অধিকার বঞ্চিত শ্রেণীর একজন নারী চিৎকার করে জানান দেন বাবুকে রক্ষার জন্য। তাহলে উভয় কাজটি কারা করলেন? যাদের সমাজ কখনও সম্মান করে না, যাদের অধিকার স্বীকার করে না, সেই নারী ও হিজড়ারা। সাবাস দেই তাদের। সশ্রদ্ধ সম্মান জানাই তাদের মানবতাবোধকে। এখন প্রশ্ন হলো আমাদের সমাজ লুটেরা, লুটপাট ও মোসাহেবী করতে পারলে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কৃত করা হয়। যে পুরস্কারের কোন যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া যায় না। অথচ এই তিন হিজড়া যে মহতী কাজ করলেন এজন্য কি তারা কোন সম্মান বা পুরস্কার পাবে? আমিনূর রশীদ বাবর মৌলভী বাজার। মানবতাবিরোধীর ফাঁসি অবশেষে ’৭১-এর মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশ কলঙ্কমুক্তির দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। বিষয়টি একাত্তরের স্বজন হারানো ও সম্ভ্রম হারানো নারীদের জন্য স্বস্তির সংবাদ। এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ব্যবস্থাটি বিভিন্নভাবেই বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হয় অনেক মহল থেকে। সমাজে বিশৃঙ্খলা করার অপচেষ্টায় লিপ্তরা সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে বলে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ায়। অপপ্রচার চালিয়ে অনেক মানুষকে হত্যা করা হয় গত তিন বছরে। বিষয়টি অবশ্যই অস্বস্তিকর ও বেদনাদায়ক। ইতিহাসের নির্মমতা হচ্ছেÑ বঙ্গবন্ধু হত্যার পর থেকে দেশে রাজাকারদের পুনর্বাসনের সুযোগ সৃষ্টি হয়। সংবিধান থেকে দালাল আইন ঝেড়ে ফেলে ধর্মীয় রাজনীতি করার সুযোগ পায় ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো। চার মূলনীতির মধ্য থেকে ধর্মনিরপেক্ষতাকে অনৈতিকভাবে ছেঁটে ফেলে দেশে শুরু হয় মৌলবাদ রাজনীতির গোড়াপত্তন। এই সুযোগে ধর্মের অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে বিভ্রান্ত করে একটি প্রজন্মকে। যারা প্রচার চালায় ‘আওয়ামী লীগকে ভোট দিলেই দেশ বিক্রি হয়ে যাবে এবং এবং মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির তৈরি হবে। এই বিশ্বাসকে লালন করে যে প্রজন্ম বড় হয়েছে তারা এখন বলে আওয়ামী লীগ দেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চেষ্টা করছে। সেই ৪৩ বছর আগে কে কি অপরাধ করেছে সেসব কথা কি কারও মনে আছে? তাই মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি বাস্তবসম্মত নয়। কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে কেন এই অনীহা, তার যথেষ্ট কারণ আছে। কেননা তাদের জানতে দেয়া হয়নি যে, একাত্তরের ২৫ জুলাই এই যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামনের নেতৃত্বে আলবদর ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা পাকিস্তানী সেনাদের নিয়ে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে নির্বিচারে হত্যাকা- চালায় ও নারী ধর্ষণ করে। এই ধ্বংসযজ্ঞে ১২০ জন প্রাণ হারান। গ্রামটি তখন থেকেই বিধবাপল্লী নামে পরিচিত। সেদিন যে ৫৭ জন নারী বিধবা হয়েছিলেন তাদের মধ্যে ৩০ জন আজও জীবিত। কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায়টি সেই ত্রিশ জন জীবিত নারীর কাছে স্বস্তিদায়ক। স্বস্তিদায়ক তাদের কাছেও যারা এই স্বাধীন দেশের প্রতি কৃতজ্ঞ ও ভালবাসেন মুক্তিযোদ্ধাদের। জামায়াতীরা চেয়েছিল যেভাবেই হক তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কোন শক্তিকে ক্ষমতায় থাকতে দেবে না। তারা আরও চেয়েছিল অস্থিরতা সৃষ্টির মাধ্যমে এমন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে যাতে বাংলাদেশ একটি অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত পায় এবং দেশে জঙ্গীবাদের বিস্তর লাভ করে। মনে রাখতে হবে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে। তাই তারাই পারে এই দেশকে সবসময়ের জন্য মুক্ত ও স্বাধীন রাখতে। মনে রাখতে হবে, এদেশের মানুষ ৯ মাসের মরণপণ লড়াই করে দেশ স্বাধীন করেছে। ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে ও ২ লাখ নারীর সম্ভ্রম হারানোর বিনিময়ে যে স্বাধীনতা, তা কখনও বৃথা যেতে পারে না। এদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনয় আরও জাগ্রত হবে। এদেশে মৌলবাদ ও জঙ্গীবাদের কোন স্থান নেই। অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি দ্রুত কার্যকর হবে এটাই দেশবাসীর চাওয়া। নাজনীন বেগম আসাদ এভিনিউ, ঢাকা। ফাঁসি কার্যকর এবং... কামারুজ্জামানের ফাঁসির মাধ্যমে দ্বিতীয় কোন মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদ-ের রায় কার্যকর হলো। যদিও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করতে দেশের একটি মহল ষড়যন্ত্র চালিয়েছে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছে। মুত্যুদ-ের বিষয়ে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ মধ্যপ্রাচ্যেরও বেশকিছু দেশ আপত্তি করেছে। কিন্তু কোন কিছুতেই বর্তমান দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা কর্ণপাত করেননি। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন এদেশ স্বাধীন হয়েছে দেশের মানুষের ত্যাগ ও মর্মস্পর্শী ঘটনার মধ্য দিয়ে। সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে একাত্ম হয়ে জীবনপণ লড়াই করছে তখন গুটিকয়েক আলবদর, রাজাকার ও আলশামস দেশের বিরোধিতা করেছিল। তারা মুক্তিকামী মানুষকে হত্যা ও নারীদের সম্ভ্রম নষ্ট করতে পাকিস্তানী বাহিনীর সঙ্গে একাত্ম হয়। তারা দেশের শ্রেষ্ঠ মেধাবী সন্তানদের হত্যার নীলনক্সা তৈরি করে। এছাড়া তারা অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠন করে যে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে তা সর্বোচ্চ বিচারের মাধ্যমেই শেষ হবে। প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়তার কারণেই দেশে জঙ্গীবাদ প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। মৌলবাদী শক্তির চেষ্টা চরমভাবে দমন হয়। দেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রতিষ্ঠা লাভ করছে। কোন অবস্থাতেই যেন যুদ্ধাপরাধীরা রেহাই না পায় সেই কামনা সবার। নতুন বাংলা বছরেই যেন অন্যান্য যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামী, মুজাহিদ, মুহাম্মদ আবদুস সুবহান, আজহারুল, মীর কাসেম, সাকা চৌধুরী, সৈয়দ মো. কায়সার ও মোবারক হোসেনসহ অন্যদের মৃত্যুদ-ের রায় কার্যকর হবে এটাই প্রত্যাশা। নিহাদ আদনান কবির (কাইফ) মোহাম্মদপুর ঢাকা। উৎপাদন বাড়াতে করণীয় বর্তমানে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় আমের বাগানের পরিমাণ ৩০ হাজার হেক্টর ছাড়িয়ে গেছে। এখানে রসালো ও সুস্বাদু জাতের আম হলোÑ ‘হাঁড়িভাঙ্গা’। এছাড়া অন্যান্য জাতের আম চাষেও স্থানীয়রা দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের মতোই আম উৎপাদনে রংপুর খ্যাতিও পাবে। এ জন্য যা যা করা প্রয়োজনÑ ১. আম চাষীদের আধুনিক প্রযুক্তির তথ্যাদি প্রদান করা। ২. প্রচার-প্রচারণা ছাড়া মাঝে মধ্যে কর্মশালার আয়োজন করা। ৩. জিকেএফ বা গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশন আমের উৎপাদন বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছেন, তবে তাদের ঋণ প্রদানের পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। ৪. আম সংরক্ষণের জন্য এখানে একটি হিমাগার ও প্রসেসিং কারখানা স্থাপন করা। ৫. চাঁপাইনবাবগঞ্জের মতো রংপুরে আমের অফিস ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। ৬. বড় ধরনের প্রকল্পের মাধ্যমে আম বাগানের সম্প্রসারণ ও আমের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করা। এ উদ্যোগগুলো বাস্তবায়িত হলে রংপুর অঞ্চলে কর্মসংস্থান বাড়বে এবং দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটবে বলে আশা রাখি। লিয়াকত হোসেন খোকন ঢাকা।
×