ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

হিলারির নির্বাচনী প্রচার শুরু

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ১৬ এপ্রিল ২০১৫

হিলারির নির্বাচনী প্রচার শুরু

হিলারি ক্লিনটন মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে তাঁর প্রচার অভিযানের শুরুতে নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহের ক্ষেত্রে সংস্কার আনাই তাঁর অন্যতম মূল প্রতিশ্রুতি হবে বলে উল্লেখ করেছেন। তাতে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ২০১৬ সালের নির্বাচনে আরও বিনম্র ও জনস্বার্থপন্থী নেতা হিসেবে নিজেকে নতুনভাবে উপস্থাপন করার সংকল্পই প্রকাশ পেয়েছে। খবর গার্ডিয়ান অন লাইনের। মঙ্গলবার আইওয়া কলেজে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এক প্রার্থী হিসেবে আবির্ভূত হন। সেখানে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক তহবিল সংগ্রহের এক অকার্যকর ব্যবস্থার সংস্কার সাধন করাই প্রেসিডেন্ট পদে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চারটি লক্ষ্যের অন্যতম হবে। এটি ছিল হিলারির জন্য এক দৃঢ় অবস্থান। কারণ তিনি দীর্ঘদিন ধরেই ওয়াল স্ট্রিটের বড় বড় কোম্পানির সহায়তা গ্রহণ করে এসেছেন এবং তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের ইতিহাস সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রচার অভিযান চালাবেন বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের অকার্যকর রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কার করা থেকে এবং হিসাববহির্ভূত অর্থের কবল থেকে রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে চিরদিনের মতো মুক্ত করা প্রয়োজনÑ এমনকি যদি সে জন্য সংবিধান সংশোধনেরও প্রয়োজন হয়। পরে হিলারি সংবাদিকদের বলেন, তিনি আবারও রাজনীতিকে অনিয়ন্ত্রিত অর্থের হাত থেকে ছাড়িয়ে আনতে চান। তিনি গাড়ির এক মেকানিকের ওয়ার্কশপে ছাত্র ও শিক্ষকদের সামনে তাঁর প্রস্তাব তুলে ধরেন। তাঁর বহুল প্রতীক্ষিত আইওয়া আগমন উপলক্ষে ওয়ার্কশপটিকে এক ফিল্ম সেটের মতো সাজানো হয়। তিনি বলেন, আমি কেন এখানে এসেছি সেই সম্পর্কে আপনাদের সামান্য কিছু বলতে চাই। তিনি বলেন, তাঁর নির্বাচনী কর্মসূচীর বিরোধিতা করবে এমন অনেক শক্তিশালী মহল রয়েছে। তিনি তাঁর প্রধান প্রধান নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো তুলে ধরেন। অর্থনীতির উন্নতি সাধন পরিবারগুলোকে শক্তি যোগানো নির্বাচনী প্রচার অভিযানের অর্থ সংগ্রহ সম্পর্কিত নিয়মকানুন সংস্কার করা এবং দেশকে বৈদেশিক হুমকির হাত থেকে রক্ষা করা। তাঁর নির্বাচনী কর্মসূচীতে প্রচার অভিযানের অর্থ সংগ্রহের বিষয়টিকে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রচার অভিযানের অর্থ যোগাড়ের নিয়মকানুন সংস্কারের আহ্বান জানানো ডেমোক্র্যাটদের জন্য অস্বাভাবিক নয়। এর বিশেষ কারণ হলো ২০১০ সালে মার্কিন সুপ্রীমকোর্ট এক রায়ে রাজনৈতিক এ্যকশন কমিটিগুলোকে কর্পোরেশনগুলোর অবাধ চাঁদা দান অনুমোদন করেছিল। তবে হিলারি বিশেষত তাঁর পারিবারিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ধনী শ্রেণীর সঙ্গে দীর্ঘকাল ধরেই সম্পৃক্ত রয়েছেন। আর ওয়াল স্ট্রিট ২০০০ ও ২০০৬ সালে তাঁর সিনেট নির্বাচনের প্রচারাভিযানকে এবং ২০০৮ সালে তাঁর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রথম বারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চেষ্টার সময়ে জোরালো সমর্থন যুগিয়েছিল। কিন্তু হিলারির উপদেষ্টারা অতীতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রগতিশীল বামপন্থীদের মন জয় করতে চান বলে লক্ষণ দেখা যায়। সে জন্যই হিলারি নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহের পদ্ধতির ক্ষেত্রে সংস্কার আনার বিষয়টি এক দৃঢ় জনমুখী অর্থনৈতিক কর্মসূচীর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। হিলারি বলেন, যদি আপনারা দেশজুড়ে তাকান তা হলে দেখবেন পরিস্থিতি ওপর তলার মানুষের অনুকূলে করে রাখা হয়েছে। সেটা অন্যায়। তিনি আরও বলেন, সেটা অন্যায় যখন বেসরকারী কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপকরা নার্স ও ট্রাকচালকদের তুলনায় কম কর দেন।হিলারির ১০০০ মাইলের সড়ক যাত্রা বিশ্বের সবচেয়ে খ্যাতিসম্পন্ন মহিলা রাজনীতিকের এক সাধারণ আমেরিকানের ভাবমূর্তি ধারণের এক কৌশলী রাজনৈতিক অভিনয়।
×