স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ২০১৮ সালে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য ফিফা বিশ্বকাপ বাছাই এবং ২০১৯ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের খেলা হবে একসঙ্গে। ফলে এর গ্রুপিং ড্র অভিন্ন। মালয়েশিয়ায় সেই গ্রুপিং ড্র (গ্রুপ ‘বি’) হয়েছে গত ১৪ এপ্রিল। তাতে কঠিন গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ। এ বছরের ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে খেলা ও এ বছর এশিয়ান কাপের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া (ফিফা র্যাঙ্কিং ৬৩) আছে বাংলাদেশের (১৬৭) গ্রুপে। আরও আছে জর্দান (১০৩), তাজিকিস্তান (১৪৩) ও কিরগিজস্তান (১৫৩)। এশিয়ার ৪০ দল আট গ্রুপে ভাগ হয়ে জুন থেকে শুরু হতে যাওয়া এই বাছাইপর্বে খেলবে। খেলাগুলো হোম ও এ্যাওয়ে ভিত্তিতে হবে। আট গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও সেরা চার রানার্সআপ ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাইয়ের এশিয়া অঞ্চলের পরের পর্বে উঠবে। আবার এই ১২ দল সরাসরি এশিয়া কাপের পরের আসরে সরাসরি খেলার ছাড়পত্র পাবে। ২০১৯ সালে আরব আমিরাতে বসবে এশিয়ান কাপের পরের আসর। ১১ জুন থেকে শুরু হবে এই বাছাই পর্বের খেলা।
কয়েক মাস আগে ফিফার ঘোষিত র্যাঙ্কিং বাংলাদেশ ফুটবলের জন্য সুখবর বয়ে আনে। দেখা যায়, র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ অবস্থান করছে ১৬৫ নম্বরে (এশিয়ান র্যাঙ্কিং ৩৪)। গত বছরের ডিসেম্বরে ঘোষিত র্যাঙ্কিং থেকে এক ধাপ পিছিয়ে গেলেই নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশকে খেলতে হতো ২০১৯ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লে-অফ। কিন্তু ১৬৫তম (৩৪) অবস্থান ধরে রাখায় বাংলাদেশ দল সুযোগ পায় সরাসরি গ্রুপ পর্বে খেলার। গত ৮ জানুয়ারি ঘোষিত ফিফা র্যাঙ্কিংকে ভিত্তি ধরেই এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) এ সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সঙ্গে বদলে যায় এএফসির টুর্নামেন্টগুলোর ধরনও। এ বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান কাপে ১৬ দল খেলেছে। নতুন ফরম্যাট অনুযায়ী ২০১৯ এশিয়ান কাপ ২৪ দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে। ২০১৯ এশিয়ান কাপ র্যাঙ্কিংয়ের আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন বুধবার বলেন, ‘ড্র হয়েছে ১৪ এপ্রিল। অনেকেই বলেছে আমরা নাকি কঠিন গ্রুপে পড়েছি। আমি তা মনে করি না। আমাদের জন্য এটাই স্বাভাবিক গ্রুপ। এই গ্রুপে আছে বিশ্বকাপ খেলা দেশ অস্ট্রেলিয়া। তাদের সঙ্গে আমরা দশ গোলে বা পাঁচ গোলে হারি, সেটা কোন কোন ফ্যাক্টর নয়। ফ্যাক্টর হলো, এগোতে গেলে তাদের সঙ্গে খেলতেই হবে, লড়তে হবে, শিখতে হবে, ভুল শোধরাতে হবে। অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোর সঙ্গে যত খেলা হবে, ততই বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য তা মঙ্গলজনক। আশা করি আগামীতে আমরা এমন দেশের সঙ্গে আরও খেলব। এতে আমরা আরও পরিণত দলে উন্নীত হব।’ এশিয়ান কাপ ও বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের খেলায় অংশ নেয়া উপলক্ষে আগামী সাতদিনের মধ্যেই দেশে আসছেন ডাচ্ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফ। সঙ্গে আসবেন আগের গোলরক্ষক কোচ জার্মানির ক্রিস্টিয়ান শোয়েচলার এবং নতুন একজন ফিটনেস ট্রেনার। এ প্রসঙ্গে সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমি ইতোমধ্যেই শেখ জামাল ধানম-ি ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ক্লাবসহ আরও কয়েকটি ক্লাবের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা রাজি হয়েছে তাদের গোলরক্ষকদের বাফুফে আয়োজিত গোলরক্ষক প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে পাঠাতে।’
এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে বাংলাদেশের প্রথম খেলা আগামী ১১ জুন কিরগিজস্তানের বিরুদ্ধে। ওই ম্যাচের আগে বাংলাদেশ জাতীয় দল দুটি প্রস্ততি ম্যাচ খেলবে। ‘এক্ষেত্রে লক্ষ্য থাকবে আমাদের চেয়ে র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা দুটি দেশকে ঢাকায় এনে খেলাতে। এক্ষেত্রে আমাদের পছন্দ হচ্ছে উত্তর কোরিয়া ও সিরিয়া। চলমান লীগের মধ্যেই একটা গ্যাপ বের করে সে সময়ের মধ্যেই ঢাকায় ওই দল দুটিকে নিয়ে আসার চেষ্টা করব।’ সালাউদ্দিনের ভাষ্য। তিনি আরও বলেন, ‘বাস্তবতা হচ্ছে- ফিফা বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলা আমাদের সম্ভব না। এ জন্য আমাদের লক্ষ্য হবে এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে কোয়ালিফাই করা এবং এশিয়ার সেরা ২০ দলের মধ্যে জায়গা করে নেয়া।’ তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান, জর্দান ... এদের র্যাঙ্কিং বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে। ‘তবে আমার মতে, র্যাঙ্কিং কোন বিষয় নয়। ভাল খেলাটাই হচ্ছে আসল। কদিনের মধ্যেই কোচ আসলে তিনি ও দলের ফুটবলারদের নিয়ে আমি একান্তে বসে আলোচনা করব, কিভাবে ভাল খেলা যায়, সেটা নিয়ে।’ অভিমত বাফুফে সভাপতির।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: