ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মাশরাফিদের সংবর্ধনা

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ১৪ এপ্রিল ২০১৫

মাশরাফিদের সংবর্ধনা

বিশ্বকাপ ক্রিকেটের লড়াই শেষ হয়েছে কয়েকদিন আগে। কিন্তু এর আনন্দ ও আবেগ এখনও রয়ে গেছে। এই আনন্দ থেকে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। বলা চলে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের সেই আনন্দই যেন উড়ে এসেছে শনিবার। এদিন বিশ্বকাপে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ঢাকায় সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে মাশরাফি বাহিনীকে। টাইগাররা মঞ্চে এলে তাদের পুষ্পমাল্য দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। আয়োজনটি বেশ ঘটা করেই করল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। ক্রিকেটারদের খুব কাছ থেকে পেয়ে আনন্দে উদ্বেলিত হয় হাজার হাজার দর্শক। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এর আগে সংবর্ধনা পেয়েছে দু’বার। ১৯৯৭ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জনের পর। দু’বছর পর ১৯৯৯ সালে আবারও সংবর্ধিত হয়। সেবার পাকিস্তান ও স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। শনিবার মানিক মিয়া এ্যাভিনিউয়ে যেন আবারও ফিরে এলো সেই ১৬ বছর আগের স্মৃতি। ২০১৫ বিশ্বকাপটা বাংলাদেশের অসাধারণ বার্তা নিয়ে এসেছিল। এই প্রথমবার বাংলাদেশ খেলল কোয়ার্টার ফাইনালে। ইংল্যান্ডের মতো দলকে হারানোসহ আফগানিস্তান ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে প্রত্যাশিত জয় পেয়েছে মাশরাফি বাহিনী। এমন সংবর্ধনা তাই প্রাপ্যই ছিল ক্রিকেটারদের। আনুষ্ঠানিকতা পর্ব ছাড়াও ব্যান্ডের সুরের মূর্ছনায় পুরো এলাকা উদ্ভাসিত ছিল মুখর। অনুষ্ঠানের শেষটা আতশবাজির ঝলকানিতে হয়। এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের পারফর্মেন্স অন্য যে কোন বিশ্বকাপের চেয়ে এগিয়ে। এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালে উন্নীত হয়। বিশ্বকাপে দলের দারুণ ধারাবাহিকতা ছিল। সম্পূর্ণ অপরিচিত পরিবেশে টপ ফেভারিট ইংল্যান্ডকে টপকে শেষ আটে জায়গা করে বাংলাদেশ। সবমিলিয়ে টাইগারদের জন্য এটি অসাধারণ বিশ্বকাপ ছিল। এই বিশ্বকাপে আমরা সাব্বির রহমান রুম্মন, তাসকিন আহমেদ ও সৌম্য সরকারের মতো সম্ভাবনাময় তিন ক্রিকেটারকে পেয়েছি। সাব্বির মারমুখি ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ভাল লেগস্পিনও করে থাকে। তাসকিন আহমেদের বোলিংও ছিল অসাধারণ। সৌম্য সরকার অসাধারণ একজন ধারাবাহিক ব্যাটসম্যান। যারা আগামী দিনে গর্ব হয়ে উঠতে পারে। একথা সত্য যে, ক্রিকেট ব্যয়বহুল খেলা। আর্থিক বিবেচনায় কারও কারও কাছে এটি বিলাসিতা। তার চেয়েও বড় কথা এই খেলাটা চালিয়ে নেয়ার জন্য যে শারীরিক গঠন এবং শক্তির প্রয়োজন তা আমাদের দেশের অনেকের মধ্যে নেই। কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতার পরও সাম্প্রতিক সময়ে শাকিব, মুশফিক, মাশরাফির মতো বিশ্বমানের খেলোয়াড় বেরিয়ে এসেছে। তাদের একাগ্রতা, নিষ্ঠা, অনুশীলন আর বুদ্ধিমত্তায় এদেশে ক্রিকেট এখন অনন্য উচ্চতায়। আরও শাকিব দরকার আমাদের। এদের মতো খেলোড়ায় গড়ে তুলতে হবে। এর জন্য দরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। দরকার বিকেএসপির মতো আরও ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও। প্রয়োজন জেলায় জেলায় এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। তাহলেই শাকিবদের মতো আরও প্রতিভা বের করে আনা সম্ভব। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে হলে এই বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দিতে হবে। ক্রিকেট নিয়ে আমাদের আবেগ অন্য যে কোন খেলার চেয়ে একটু বেশি। ক্রিকেট এখনও আমাদের শান্তি এবং স্বস্তির জায়গা। এবার বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফর্মেন্স প্রেরণা যুগিয়েছে। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে আমাদের শ্রেষ্ঠত্ব আমরা মাঠেই প্রমাণ করতে পারব। আর এটাই হোক আগামী দিনের স্বপ্ন। শুভকামনা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য।
×